Thursday , September 18 2025

বারি বেগুন-১২ চাষে বাজিমাত করেছেন দক্ষিণ সুরমার কৃষক সৈয়দুর

শহীদ আহমেদ খান (সিলেট) : সিলেট জেলায় প্রথমবারের মতো বারি বেগুন-১২ চাষ করে বাজিমাত করেছেন দক্ষিণ সুরমার মন্দিরখলার কৃষক সৈয়দুর রহমান। ব্যতিক্রমী বেগুন চাষের মাধ্যমে এলাকার কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন তিনি। দেখতে লাউয়ের মতো, আকারে বেশ বড় ও খেতে সুস্বাদু এ বেগুন চাষে অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট, সিলেটের মাধ্যমে কৃষক সৈয়দুর রহমানকে পরীক্ষামূলকভাবে বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে বেগুনের বীজ, সার ও প্রশিক্ষণ। ইতোমধ্যে সৈয়দুর রহমানের রোপনকৃত বেগুনগাছে ফলন এসেছে বেশ ভালো। অনান্য বেগুনের চেয়ে এ জাতের দামও বেশি। বাজারে বিক্রি করে ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষক। একটি বেগুন প্রায় দেড় কেজি পর্যন্ত হয়। জেলার দক্ষিণ সুরমার কামালবাজার এবং লালাবাজার এলাকায় প্রথমবারের মতো বারি বেগুন-১২ পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হয়েছে।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) দুপুরে কৃষক সৈয়দুর রহমান বারি বেগুন-১২ এর প্রদর্শণী মাঠ পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (ফার্মগেইট, ঢাকা) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট, সিলেটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক ড. মাহমুদুল ইসলাম নজরুলসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ।

দক্ষিণ সুরমার মন্দিরখলার কৃষক সৈয়দুর রহমান বারি বেগুন-১২ এর চাষ করছেন। তিনি ২ ০শতক জমিতে এ বেগুন চাষ করেছেন। প্রত্যেকটি গাছেই ফলন এসেছে।

তিনি জানান, এ বেগুনটা দেখতে সবুজ এবং এতটাই বড়, মনে হবে অনেকটা লাউয়ের মতো। যেখানে অন্য বেগুনের দাম কেজিতে ২৫ টাকা সেখানে বারি বেগুন-১২ এর পাইকারী দাম ৪০ টাকায় বিক্রি হয়। এখন পর্যন্ত গাছে কোন রোগ-বালাই বা পোকা-মাকড়ের আক্রমণ নেই বলে জানান। এ পর্যন্ত ২৬/২৭হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করেছেন বলে জানান।

তিনি আরো বলেন, আমার বেগুন ক্ষেত এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে। বড় আকারের বেগুন দেখতে কৃষকরাও ভিড় করছেন। আগামীতে এখান থেকে বীজ সংগ্রহ করে এ জাত চাষের ইচ্ছার কথা জানান তারা। এমন আরো একাধিক কৃষক বারি-১২ জাত চাষে আগ্রহের কথা বলেন।

সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট, সিলেটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক ড. মাহমুদুল ইসলাম নজরুল বলেন,  বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট এ বছরই জাতটা আবিস্কার করেছে। স্থানীয়ভাবে কৃষকদের মাঝে এর বীজ বিতরণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে দক্ষিণ সুরমার কামালবাজারে প্রথমবারের মতো বারি বেগুন-১২ চাষ করা হয়েছে। মূলত এ বেগুন শীতের সময়ে ভালো হয়। তাই এটাকে শীতকালীন বেগুন বলা হয়। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে চারা রোপণ করা হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন এ জাতটার এ অঞ্চলে ব্যাপক আকারে চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অনেক কৃষকই এ বেগুন চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে। এ বেগুন থেকেই বীজ নিয়ে সংরক্ষণের মাধ্যমে পরবর্তীতে চারা করা যাবে। তাই বলা যায় এ জাতটা ব্যাপক সম্প্রসারণ হবে। এটার ভেতরটা খুবই নরম তাই খেতে বেশ মজাদার।

This post has already been read 7499 times!

Check Also

চলতি অর্থবছরে ৩৯ হাজার কোটি টাকা কৃষি ঋণ দেবে সরকার – কৃষি সচিব

গাজীপুর সংবাদদাতা : কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেছেন, আমাদের অনেক উদ্যেক্তা আছেন …