Friday 19th of April 2024
Home / অন্যান্য / বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভের পর আর কোনো জরিপের প্রয়োজন নেই – ভূমিমন্ত্রী

বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভের পর আর কোনো জরিপের প্রয়োজন নেই – ভূমিমন্ত্রী

Published at জানুয়ারি ৫, ২০২২

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বুধবার (৫ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ভূমি ভবন মিলনায়তনে ডাকযোগে ভূমিসেবা, ভূমিসেবায় ডিজিটাল পেমেন্ট এবং কল সেন্টারের মাধ্যমে ভূমিসেবা-এর উদ্বোধন করেন। (ছবি: পিআইডি)

নিজস্ব প্রতিবেদক: পটুয়াখালী ও বরগুনায় শুরুতে যাওয়া ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে’ বাংলাদেশের সর্বশেষ ভূমি জরিপ হবে বলে ভূমিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বুধবার (৫ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ভূমি ভবন মিলনায়তনে ডাকযোগে ভূমিসেবা, ভূমিসেবায় ডিজিটাল পেমেন্ট এবং কল সেন্টারের মাধ্যমে ভূমিসেবা-এর উদ্বোধন করেন।

এখন থেকে ১৬১২২ নম্বরে ফোন করেই খতিয়ান ও ম্যাপের আবেদন করতে পারবেন ভূমি মালিক। এছাড়া জমির মালিক খতিয়ান ও নামজারি ফি এবং ভূমি উন্নয়ন কর অনলাইনে প্রদান করতে পারবে। সেই সাথে ডাকযোগে খতিয়ান (পর্চা)/জমির ম্যাপ নিজ ঠিকানায় নিতে পারবেন।

আজকের উদ্বোধনকৃত সেবামূহের ফলে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারী কর্তৃক ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ হ্রাস পাবে এবং ই-পর্চা, ই-রেজিস্ট্রেশন, এলডি ট্যাক্স সিস্টেম, ভার্চুয়াল শুনানি সিস্টেমের সাথে ইন্টিগ্রেশন হবে। এছাড়া, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে তাৎক্ষনিক ফি জমা প্রদান করার সুযোগ এবং ভূমি অফিসে না গিয়েই অনলাইনে ডিসিআর সংগ্রহ করার সুযোগ সৃষ্টি হলো নাগরিকের। এতে মানুষের অর্থ-খরচ ও ভোগান্তি অনেকাংশে লাঘব পাবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মকবুল হোসেন, এমপি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মোঃ খলিলুর রহমান। সম্মানীয় অতিথি ছিলেন ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্পের Land Management Domain Specialist সাবেক মুখ্য সচিব মোঃ আবুল কালাম আজাদ ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

ভূমিমন্ত্রী এসময় তাঁর বক্তব্যে বলেন, পুরো ভূমি ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজেশন হবার সাথে সাথে সারাদেশে ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে’ সম্পন্ন হয়ে গেলে নতুন ভূমি কিংবা জেগে ওঠা চর ছাড়া পরবর্তীতে আর ভূমি জরিপের (জরিপ বলতে এখানে ক্যাডাস্ট্রাল জরিপ/ Cadastral Survey) প্রয়োজন হবেনা। ভূমি হাত বদলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে খতিয়ান ও ম্যাপ প্রস্তুত হয়ে যাবে, ফলে যুগযুগ ধরে জরিপের হয়রানি থেকে দেশের মানুষ রক্ষা পাবে।

প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ভূমি মন্ত্রণালয় জাতিসংঘ জনসেবা পদক পেয়েছে উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী বলেন, এতে প্রমাণিত হয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয় আজ সরকারের অন্যতম উন্নয়ন ও গতিশীল মন্ত্রণালয়।

প্রধানমন্ত্রী তাঁকে একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছেন উল্লেখ করে ভূমিমন্ত্রী আরো বলেন, দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল ও মানুষকে সেবা করার ব্রত নিয়ে তিনি কাজ করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, ভূমি মানুষের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ভূমিসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছতে পারাই তাঁর উদ্দেশ্য।

ভূমিসেবা ডিজিটালাইজেশন ছাড়াও আইন ও বিধি সংশোধন হচ্ছে বলে, এসময় জানান ভূমিমন্ত্রী। তিনি আরও জানান হাট ও বাজার আইনের আওতায় ভূমিগুলোতে স্থানীয় পৌরসভার সাথে যৌথভাবে উন্নয়ন কাজ করা হবে।

ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বলেন তিনি উপলব্ধি করছেন ২০০৯ সালের সালের ভূমি সংস্কার বিষয়ক বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করছে ভূমি মন্ত্রণালয়।

ভূমিসচিব জানান, ইতোমধ্যে ৩ কোটি ৪০ লক্ষ হোল্টিং এন্ট্রি হয়ে গিয়েছে। প্রায় দেড় কোটি মানুষ অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করেছে ১২ কোটি টাকা ভূমি উন্নয়ন কর হিসেবে আদায়। ১ লক্ষ ৩৯ হাজার মৌজা ম্যাপ ডিজিটালাইজেশন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৫ কোটি ১২ লক্ষ ডাটা ডিজিটাল রেকর্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে এন্ট্রি করা হয়েছে। ডিজিটাল মৌজা ম্যাপ ও মালিকানার তথ্য আত্তীকরণ করা হবে।

আজকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানস্থলে দুইজন নাগরিক সরাসরি ভূমি সেবা গ্রহণ করেন। একজন  ১৬১২২ নম্বরে কল করে খতিয়ান এবং ইউডিসি-এর মাধ্যমে অপরজন জমির মৌজা ম্যাপের আবেদন করেন। অনুষ্ঠানে ভূমিসেবা ডিজিটালাইজেশনে ভূমি মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনার উপর-এর একটি সচিত্র উপস্থাপনা করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের  ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশন মনিটরিং সেলের প্রধান ড. মো: জাহিদ হোসেন পনির, পিএএ। বঙ্গবন্ধুর ভূমি সংস্কার বিষয়ক একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয় অনুষ্ঠানে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্যবৃন্দ ও ভূমি মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ, ভূমি মন্ত্রণালয় ও ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও এর আওতাভুক্ত সংস্থা, ভূমি ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রমের উন্নয়ন সহযোগীবৃন্দ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, গণমাধ্যমকর্মী সহ অন্যান্য সুধীবৃন্দ।

* জরিপ বলতে এখানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত ক্যাডাস্ট্রাল জরিপ/ Cadastral Survey বোঝানো হয়েছে।

This post has already been read 2517 times!