Friday 29th of March 2024
Home / অন্যান্য / বাংলাদেশে ট্রেড মিশন পাঠাবে ডাচ

বাংলাদেশে ট্রেড মিশন পাঠাবে ডাচ

Published at নভেম্বর ১১, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : কৃষিখাতে সহযোগিতা ও বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে ২০২২ সালের প্রথম দিকে বাংলাদেশে ট্রেড মিশন পাঠাবে ডাচ।

বুধবার (১০ নভেম্বর) নেদারল্যান্ডের দ্য হেগে সে দেশের ফরেন ট্রেড ও ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন মিনিস্টার টম ডি ব্রুইন (Tom de Bruijn) এবং বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এর মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ডাচ মিনিস্টার এ কথা জানান।

ডাচ মিনিস্টার টম ডি ব্রুইন বলেন, উভয় দেশের বেসরকারি খাতকে সংযুক্ত করে খাদ্য,পানি ও এনার্জি বিষয়ে সম্পর্ক জোরদার করা হবে। এক্ষেত্রে দুদেশের দূতাবাস প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও ট্রেড মিশনে সহায়তা প্রদান করবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১২ বছরে দানাজাতীয়, শাকসবজি, ফলমূল এবং উচ্চমূল্যের ফসলসহ কৃষিক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিস্ময়কর অর্জন এসময় কৃষিমন্ত্রী তুলে ধরেন। বলেন, বাংলাদেশে এখন ডাচ জ্ঞান, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও সমাধান দরকার। আমরা উইন উইন ভিত্তিতে এই সহায়তা চাই।

কৃষিমন্ত্রী নেদারল্যান্ডে কৃষিখাতে উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি বাড়ানোরও অনুরোধ করেন। এছাড়া, মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে উন্নীত হওয়ার পরেও ইইউতে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির জন্য অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য অব্যাহত রাখার জন্য ডাচ সহায়তা কামনা করেন কৃষিমন্ত্রী।

এসময় ডাচ মন্ত্রী বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। অনেক সীমাবদ্ধতা ও জটিলতার মধ্যেও বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদেরকে অব্যাহতভাবে যে বিরল মানবিক সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে- কৃষিমন্ত্রী তা বিস্তারিতভাবে ডাচ মন্ত্রীকে জানান। কৃষিমন্ত্রী রোহিঙ্গা ইস্যুতে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার জন্য আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে ডাচদের অব্যাহত সমর্থন কামনা করেন।

বৈঠকে উভয়মন্ত্রী আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস কৃষি সহযোগিতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

কৃষির ভাইস মিনিস্টারের সাথে সাক্ষাৎ: সাপ্লাই চেন, যান্ত্রিকীকরণে সহযোগিতা কামনা কৃষিমন্ত্রীর 

পরে কৃষিমন্ত্রী নেদারল্যান্ডের কৃষি ও প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার গ্রুয়েটের (Groet) সাথে বৈঠকে মিলিত হন।

বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী ড. রাজ্জাক বাংলাদেশে সাপ্লাই চেইন স্থাপন, যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিক প্যাকিং হাউজ নির্মাণে ডাচ সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, কৃষিখাতে নেদারল্যান্ডের নিকট সবচেয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং সমন্বিত সমাধান রয়েছে, তাই বাংলাদেশ যেকোনো ধরনের সহযোগিতাকে স্বাগত জানাবে। তিনি ডাচ উপমন্ত্রীকে কৃষিতে ডাচ আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মধ্যে বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান।

ড. রাজ্জাক বাংলাদেশে সাপ্লাই চেইন স্থাপনের জন্য ডাচ উপমন্ত্রীকে আহ্বান জানান। দুই দেশের বেসরকারি খাতকে সুবিধা দিতে বাংলাদেশ সরকারের পুরোপুরি প্রস্তুতির কথাও এসময় জানান কৃষিমন্ত্রী।

যান্ত্রিকীকরণ ত্বরান্বিত করতে কৃষিমন্ত্রী বাংলাদেশে এগ্রো ইনোভেশন ল্যাব নির্মাণের জন্য ডাচ বেসরকারি খাতকে আমন্ত্রণ জানান। এছাড়া, ঢাকায় বিমানবন্দরের কাছে উচ্চমানের স্টোরেজ সুবিধা নির্মাণে সম্পৃক্ত হতে ডাচ পক্ষকে আমন্ত্রণ জানান। ডাচ উপমন্ত্রী এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব জমা দিতে বলেন।

ডাচ উপমন্ত্রী খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, সব ধরনের নিয়মকানুন এবং সার্টিফিকেশন কঠোরভাবে মেনে ফুড ও সাপ্লাই চেইনের উন্নয়ন করতে পারলে তা বাংলাদেশের কৃষি ও খাদ্য খাতকে আমূল বদলে দিবে। সরকারি ও প্রাইভেট সেক্টরকে সম্পৃক্ত করে কৃষিখাতে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন তিনি।

সাক্ষাৎকালে নেদারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: রুহুল আমিন তালুকদার, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ এবং সফররত ব্যবসায়ী প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

This post has already been read 1382 times!