Wednesday , July 2 2025

জুনোটিক রোগে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের প্রায় ২১ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ প্রদান

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে প্রথম বারের মতো জুনোটিক রোগে মৃত গরুর জন্য ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা ২০ লাখ ৮০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ পেলেন। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতাধীন ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভেটেরিনারি পাবলিক হেলথ সার্ভিস জোরদারকরণ প্রকল্পের আওতায় খামারিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে জুনোটিক রোগে মৃত-আক্রান্ত (কালিং সাপেক্ষে) গরু ও মহিষের  খামারি পর্যায়ে ক্ষতিপূরণের চেক বিতরণ করা হয়। প্রানি সম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক আফাজ উদ্দিস মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তৌফিকুল আরিফ। অনুষ্ঠানে ২৭ জন খামারির হাতে ২০ লাখ ৮০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন। প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১টি উপজেলায় পর্যায়ক্রমে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানে মূল্য বক্তব্য তুলে ধরেন ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভেটেরিনারি পাবলিক হেলথ সার্ভিস জোরদারকরণ প্রকল্পের’ প্রকল্প পরিচালক ডা:মো: আজিজুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডাঃ দেবাশীষ দাস। আরো বক্তব্য রাখেন- লক্ষীপুর জেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ডা:মো: আইয়ুব মিয়া, নারায়নগঞ্জের বন্দর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা:মো:ফারুক। খামারিদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন সব্দুল খান ও আব্দুল হাশেম। সভায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালকবৃন্দ, প্রকল্প পরিচালকবৃন্দ, ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাবৃন্দ ও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাবৃন্দ,ক্ষতিগ্রস্ত খামারিবৃন্দ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আব্দুল হাশেম মৃত গরুর জন্য ক্ষতিপুরণ পাওয়ায় আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, গরুটিই ছিলো তার একমাত্র সম্বল। জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়ে গরুটি মারা যায়। সেই গরুর জন্য তিনি ৮০ হাজার টাকার চেক পেয়ে বলেন, সরকার খামারিদের পাশে প্রথমবার দাঁড়িছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিন্দন জানিয়ে বলেন, এভাবে খামারিদের সাহায্য করলে নিরাপদ মাংস ও দুধ রফতানিতে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম হবে।

মূল উপস্থাপনায় প্রকল্প পরিচালক ডা:মো:আজিজুল ইসলাম বলেন, বিশেষ করে মহামরি করোনাকালে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভেটেরিনারি পাবলিক হেলথ্ সার্ভিস জোরদারকরণ প্রকল্পের কার্যক্রম দেশের ২৮টি জেলার ২০১টি উপজেলায় চলমান। প্রকল্পের আওতায় জুনোটিক রোগে মৃত বা আক্রান্ত (কালিং সাপেক্ষে) গরু ও মহিষের খামারি পর্যায়ে ক্ষতিপূরণ এবং নিরাপদ অপসারণে (পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ) কাজ করছে। গৃহপালিত প্রাণির ও প্রাণিজাত খাদ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিরুপণের লক্ষ্যে ভেটেরিনারি পাবলিক হেল্থ ল্যাবের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ চারটি জুনোটিক রোগ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সার্ভিল্যান্স কার্যক্রম তরান্বিত করা হচ্ছে এবং জুনোটিক রোগ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রম চলছে। চারটি জুনোটিক রোগ বোভাইন টিবি, ব্রুসেলোসিস,অ্যানথ্রাক্স ও জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়ে মৃত গরু-মহিষের ক্ষেত্রে বড় গরু বা মহিষের জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ ৮০ হাজার এবং এক বছর বয়সী বাছুর গরুর জন্য ৪০ হাজার টাকা প্রদান করা হচ্ছে। প্রকল্পভুক্ত উপজেলা হতে আক্রান্ত গরু-মহিষের নমুনা প্রেরণ কেন্দ্রীয় প্রাণিরোগ অনুসন্ধান গবেষণাগার (সিডিআইএল) এবং ভেটেরিনারি পাবলিক হেলথ অনুবিভাগ ঢাকা হতে চুড়ান্ত ল্যাব পরীক্ষায় পজিটিভ ফলাফল প্রাপ্তি সাপেক্ষে খামারিকে ক্ষতিপূরণ ও নিরাপদ অপসারনে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত এ প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন খামারিরা।

This post has already been read 5073 times!

Check Also

বিএলআরআই ও  ডিএলএস সমন্বিতভাবে কাজ করলে অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

রাজশাহী সংবাদদাতা : বিএলআরআই ও প্রাণিসম্পদ দপ্তর সমন্বয়ভাবে কাজ করলে প্রাণিসম্পদখাতের অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব- …