Friday 29th of March 2024
Home / খাদ্য-পুষ্টি-স্বাস্থ্য / দেশে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সাফল্যের শুরু বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে – কৃষিমন্ত্রী

দেশে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সাফল্যের শুরু বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে – কৃষিমন্ত্রী

Published at ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২০

টাঙ্গাইল (নবড়ী) : বাংলাদেশে স্বাধীনতা-উত্তর স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সাফল্যের শুরু বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে; স্বল্পসংখ্যক নগরবাসীর শহুরে স্বাস্থ্যসেবা হতে বিপুল গ্রামীণ জনকেন্দ্রিক স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণের মধ্য দিয়ে। স্বাস্থ্যকে সংবিধানের মূল অধিকারের তালিকায় সংযোজন, প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় স্বাস্থ্যকে গুরুত্বপূর্ণ স্থানদান, গুটিকয় জেলা ও মহকুমা হাসপাতাল থেকে থানায় থানায় শত শত গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, চিকিৎসকদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দিয়ে স্বাস্থ্যকে গুরুত্ববহ করে তোলা ইত্যাদির মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার অগ্রযাত্রা শুরু। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে ‘জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান’ প্রতিষ্ঠা করেন। ’৭৫ সালের ২৩ এপ্রিল ‘বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ’ গঠনের আদেশ স্বাক্ষর করেন তিনি।

শনিবার (১৫ফেব্রুয়ারি) কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক ৫০ শয্যা বিশিষ্ট  ধনবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর অন্ত: বিভাগ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার  প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের কাজ হাতে নেয়। মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠা করা হয় কিডনি, ক্যান্সার, নিউরোলজিসহ বেশ কয়েকটি বিশেষায়িত হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট। এ ছাড়া চিকিৎসা যন্ত্রপাতির ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়। স্বাস্থ্য খাত : উন্নয়নের রোল মডেল। ২০০৯-হতে গত এগার বছরে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যকে নিয়ে গেছে অন্য এক উচ্চতায়; বিশ্বে তা এক মডেল, অনুশ্রেয় মানদন্ড। ২০০৯ সালে Global Alliance for Vaccine And Immunization (GAVI) Award পায় বাংলাদেশ। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-৪ এর স্বাস্থ্যসংক্রান্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। এর স্বীকৃতি হিসেবে ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ Millenium Development Goal Award-এ পুরস্কৃত করেছে।

স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিন্তাপ্রসূত কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প বর্তমান সরকারের আমলে পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। বর্তমানে ১৩ হাজার ৮৮২টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধমে সারা দেশের গ্রাম পর্যায়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে।

এ ছাড়া  দেশে ৬ হাজারের বেশি চিকিৎসক, ৪২৭ জন ডেন্টাল সার্জন ও ১০ হাজারের বেশি নার্স, মিডওয়াইফ ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আরও ১০ হাজার চিকিৎসক ও ৪ হাজার নার্সের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে।
দেশে নতুন নতুন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ ১০৭টি সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ এবং একটি পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট নার্সিং ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হয়েছে।  রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন জেলায় নতুন নতুন বিশেষায়িত ও জেনারেল হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট’ নির্মাণসহ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অনন্য।

সম্প্রতি ভারতের নয়াদিল্লিতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিষদের সভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন; শুধু নিজের ১৬ কোটির অধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় দেশটি অনন্য তা নয়, সুনামির মতো ধেয়ে আশা ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে অতীব প্রতিকূল পরিবেশে যে মানের সেবা দিয়ে তাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা দিতে পেরেছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগ, তাও বিশ্বে বিরল। নিরাপদ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনবঞ্চিত ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে দুবারে ২০ লক্ষাধিক টিকা প্রদানের মাধ্যমে কলেরার মতো ভয়াবহ মহামারি থেকে রক্ষা করা এবং হাম-রুবেলাসহ শিশুদের অন্যান্য রোগের টিকাদানের মাধ্যমে সুরক্ষা দান ইপিআইয়ের সক্ষমতাকে বহুধাভাবে প্রমাণিত করেছে।

বর্তমান সরকারের হাত ধরেই আমরা আজ সুস্থ জাতি হিসেবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন ঘটিয়ে জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে দেশ, এভাবেই বাংলাদেশ পৌছে যাবে উন্নত রাস্ট্রের বন্দরে। আমরা সবাই মিলে বিদ্যামান সমস্যাগুলো নিরসন করে স্বাস্থ্য সেবার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করব।

সিভিল সার্জন ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামানএর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ হিরা; পৌর মেয়র খন্দকার মনজুরুল আলম মঞ্জু; উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফা সিদ্দিকা প্রমুখ।

This post has already been read 2560 times!