Tuesday 16th of April 2024
Home / পোলট্রি / নিবন্ধন ছাড়া সরকারি ভ্যাকসিন দেয়া হবে না: মাহাবুবুর রহমান

নিবন্ধন ছাড়া সরকারি ভ্যাকসিন দেয়া হবে না: মাহাবুবুর রহমান

Published at নভেম্বর ১১, ২০১৮

নিজস্ব সংবাদাতা: প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নিবন্ধন না থাকলে আগামীতে কোনো পোল্ট্রি খামারকে ভ্যাকসিন দেয়া হবেনা বলে জানান প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (উৎপাদন) মাহাবুবুর রহমান। ছোট-বড় সব ধরনের খামারকে নিবন্ধিত হতে হবে অন্যথায় নিরাপদ ডিম ও মুরগির মাংসের উৎপাদন নিশ্চিত করা যাবেনা। রবিবার (১১ নভেম্বর) খুলনার ডুমুরিয়ার উপজেলা অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত “নিরাপদ পোল্ট্রি পালন” বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দান কালে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।

জনাব মাহাবুবুর রহমান বলেন, রোগবালাই দমনে পোল্ট্রি খামারিদের সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করছে সরকার। এই মুহুর্তে পোল্ট্রি ভ্যাকসিনের কোন ঘাটতি নেই। তবে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেতে হলে সরকারিভাবে নিবন্ধিত হতে হবে। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের পোল্ট্রি খামারিদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যও তিনি নির্দেশণা দেন ।

ডুমুরিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. শাহনাজ বেগম বলেন, ডিম ও মুরগির মাংসকে সবশ্রেণীর মানুষের জন্য সহজলভ্য করেছে পোল্ট্রি শিল্প। দেশের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে পোল্ট্রি খাতের অবদান দিন দিন বাড়ছে। তবে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হলে নিরাপদ খামার গড়তে হবে।

বিপিআইসিসি’র সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, পোল্ট্রি পেশাকে লাভজনক করতে না পারলে এ খাতের উগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে। তাই সবার আগে উৎপাদন খরচ কমানোর প্রতি নজর দিতে হবে। জীব নিরাপত্তার সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে চলা, খামার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পোল্ট্রি পালনকে লাভজনক করতে পারে। তিনি আরো বলেন, খামার নিবন্ধনের যে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে তা আরও কমানো উচিত। তাহলে খামারিরা নিবন্ধনে আগ্রহী হবে। এর পাশাপাশি খামারিদেরকে বিনামূল্যে জীবানুনাশক, ঔষধ-ভ্যাকসিন ও প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান মসিউর রহমান।

ঔষুধের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে কিভাবে লাভজনক খামার গড়ে তুললেন, সে কথা জানালেন ডুমুরিয়ার মিকসিমিল গ্রামের নারী খামারি নার্গিস সুলতানা এবং হাজিডাঙ্গা গ্রামের বৈশাখী পোল্ট্রি ফার্মের সত্ত্বাধিকারি গোবিন্দ।

একজন সাধারণ খামারি থেকে পোল্ট্রি গ্রুপের কর্ণধার হয়ে ওঠার গল্প শোনালেন ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) সভাপতি মো. রকিবুর রহমান (টুটুল)। তিনি বলেন, নারিরা মায়ের জাতি তাই মুরগির বাচ্চাকে তাঁরা সন্তানের মতই যত্ন দিয়ে লালন পালন করেন। নার্গিস সুলতানা সে ধরনের যত্ন, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং নিয়ম-কানুন মেনে খামার করেছেন বলেই সফল হতে পেরেছেন। তিনি আরো বলেন, একে অপরকে সহায়তা করতে হবে। সফল খামারির সঠিক পরামর্শ, প্রতিবেশি খামারির ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে পারে, নতুনদের অনুপ্রাণিত করতে পারে। তবে বিজ্ঞান-সম্মত খামার গড়তে হলে বিশেষজ্ঞ  ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের পরামর্শ গ্রহণের গুরুত্ব অপরিসীম।

বিপিআইসিসি’র পক্ষ থেকে জানানো হয় অক্টোবর মাসে ডুমুরিয়া উপজেলায় একটি জরিপ কার্য পরিচালনা করা হয়েছে। ফলাফল দেখা যায় মোট ২৫৫টি খামারের মধ্যে নিবন্ধিত খামারের সংখ্যা মাত্র ২১টি। অনিবন্ধিত খামারগুলোর মুরগির সংখ্যা এক থেকে দেড় হাজারের মধ্যে। সরকারি নিয়মে এক হাজারের কম মুরগির খামার নিবন্ধনের কোনো বিধান নেই। তাই একশ থেকে এক হাজার মুরগির খামারের জন্য নতুন একটি শ্রেণী (‘ডি’ শ্রেণী) অন্তর্ভূক্ত করার এবং এ শ্রেণীর জন্য নিবন্ধন ফি ৫০০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়।

কর্মশালায় রিসোর্স পারসন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, খুলনার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. অরুণ কান্তি মন্ডল এবং খুলনা বিভাগী প্রাণিসম্পদের উপ-পরিচালক জনাব কল্যাণ কুমার ফৌজদার। মোট প্রায় ৬০ জন পোল্ট্রি খামারি এ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।

This post has already been read 2842 times!