শনিবার , জুলাই ২৭ ২০২৪

ঘোড়া থেকে যেভাবে তৈরি হয় সাপে কাটার ঔষধ

আবু নোমান ফারুক আহম্মেদ : সাপের কামড়ে কোনদিন ঘোড়া মরে না। তিনদিন অসুস্থ থাকে। তারপর সুস্থ হয়ে যায়। আর এই ঘোড়া থেকে আসে পৃথিবীর সব সাপের বিষের প্রতিষেধক anti venom । পৃথিবীতে খুব অল্প সংখ্যক প্রাণী নিজের শরীরে সাপের বিষ প্রতিরোধের ওষুধ তৈরি করতে পারে। যেমন- গাধা, ভেড়া, ছাগল, খরগোশ, বেজি, মুরগি, উট, ঘোড়া, হাঙ্গর। কোন একটি সাপ, ধরুন, কিং কোবরা’র anti venom তৈরি করতে হলে যা করতে হয় তা হল, ওই সাপের বিষ ঘোড়ার শরীরে সহনীয় মাত্রায় ঢুকিয়ে দিতে হয়। এতে ঘোড়া মরবে না। তবে তিনদিন অসুস্থ থাকবে। এরপর সুস্থ হয়ে যাবে। এই তিনদিনে ঘোড়ার রক্তে ওই সাপের বিষের anti venom তৈরি হয়ে যাবে । ঘোড়ার শরীর থেকে রক্ত নিয়ে তার লাল অংশ আলাদা করা হয়। সাদা অংশ অর্থাৎ ম্যাট্রিক্স থেকে অ্যান্টি ভেনাম আলাদা করা হয়। ঘোড়া বেশ স্বাস্থ্যবান এবং অনেক রক্ত থাকে বলে, বেশ ভালো পরিমাণে রক্ত নিলেও (গড়ে প্রতি ঘোড়া থেকে প্রায় ৬ লিটার রক্ত নেওয়া হয়) ঘোড়ার তেমন ক্ষতি হয় না।

এরপরএই এন্টি ভেনমের শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে শিশিতে ভরে বাজারে সরবরাহ করা হয়। চিকেন পক্সের এন্টিবডি এবং সাপের বিষের এন্টি ভেনমের মূলনীতি প্রায় একই। চিকেন পক্সের ক্ষেত্রে এন্টিবডি তৈরি করে আমাদের শরীর । আর সাপের বিষের ক্ষেত্রে সেটি তৈরি হয় ঘোড়ার শরীরে। এই এন্টি ভেনম সাপে কাটা রোগীর শরীরে ইনজেকশন করলে এন্টি ভেনম শরীরে থাকা ভেনমকে অকার্যকর করে রোগীর জীবন বাঁচায়।

বছরে হাজার হাজার মানুষের জীবন এই এন্টি ভেনমের কারণে বেঁচে যায়। মানুষকে সাপে কামড়ালে ডাইরেক্ট ইনজেকশন পুশ করা হয়। ভারতে অনেক অ্যান্টি ভেনাম প্রস্তুতকারক কোম্পানি আছে । পালের পর পাল ঘোড়া তাদের মূল সম্বল। ঘোড়া না থাকলে সাপের কামড় খেয়ে মানুষের আর বাঁচতে হত না। এক ছোবলে মৃত্যু ঘটতো ।

This post has already been read 4096 times!

Check Also

প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য সেক্টরের উন্নয়ন ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন সম্ভব নয় -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য সেক্টরের উন্নয়ন ছাড়া ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করা …