শনিবার , ফেব্রুয়ারি ৮ ২০২৫

ডিমের উৎপাদন খরচ কমাবে লেজার ডিবেকিং

মো. সোহেল রানা (টাঙ্গাইল): লেয়ার বা ডিমপাড়া মুরগীর খামার লাভজনক হওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি বিষয় নির্ভরশীল।নতুন নতুন রোগের প্রাদুর্ভাব, রোগ বিস্তারের ধরন পরিবর্তন, বেশি উৎপাদন খরচ এবং গুণগত মানসম্পন্ন বাচ্চার অভাবে লেয়ার খামারীরা ঠিকমতো লাভবান হতে পারেননা। উল্লেখিত চারটি বিষয়ের কোনটি থেকে কোনটিই কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।

আমরা জানি, আধুনিক প্রযুক্তি যে কোন ব্যবসার উৎপাদন খরচ তুলনামূলক কমিয়ে দেয়। এ বিষয়টি খামারের ক্ষেত্রে মুরগীর খামারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। কারণ, এর ওপর উৎপাদন খরচ অনেকটাই নির্ভরশীল।১ দিন বয়সি লেয়ার বাচ্চা থেকে ডিম দেওয়ার আগ মুহর্ত পর্যন্ত একটা মুরগী তৈরি করতে আমাদের খামারিদের অনেক খরচ পডে যায়। লোকাল পদ্ধতিতে  ছ্যাকা দিয়ে ঠোঁট কাটার ফলে আমাদের দেশের লেয়ার খামারিদের খরচ ২০% পর্যন্ত বেডে যায় । এছাড়া এসব পদ্ধতিতে ঠোঁট কাটার ফলে লেয়ার মুরগিতে অনেক সমস্যারও সৃষ্টি হয়।

৮০- ৯০ দিন বয়সে সাধারণত খামারিরা মুরগীর ঠোঁট ছ্যাকা দিয়ে কাটে। এই সময়টা মুরগির জন্য খুবই গুরুত্বপুর্ণ। ৭ – ১২ সপ্তাহের মধ্যে মুরগীর হাড, মাংস ও পালক বৃদ্ধি হয়। ঠোঁট কাটার জন্য খামারিরা এই সময়টা বেছে নিয়ে থাকেন। লোকাল পদ্ধতিতে এ সময়ে ঠোঁট কাটার ফলে মুরগি খাদ্য খাওয়া কমিয়ে দেয় যার ফলে ওজন কমে যায়, মুরগি দুর্বল হয়ে পডে, রোগ জীবাণু আক্রমণ করে, অতিরিক্ত ওষুধ খরচ বেড়ে যায় ও মুরগীর ডিম পাডার সময় পিছিয়ে যায়। এতে করে ডিমের উৎপাদন খরচ অনেক বৃদ্ধি পেয়ে যায় তাই খামারিরা লোকসানের মুখে পডে।

বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে ১ দিন বয়সী লেয়ার বাচ্চাতে হ্যাচারি থেকে অত্যাধুনিক ব্যায়বহুল ইনফ্রারেড লেজার ডিবেকিং করে দেয় যার ফলে, লেয়ার মুরগিতে আর কখনো ঠোঁট কাটার প্রয়োজন পড়েনা। লেজার ডিবেকিং থাকার ফলে মুরগির ঠোঁট ১০ দিন থেকে অটোমেটিক ঝরে যায় এবং ৫০ দিনের ভেতর সমস্ত মুরগির ঠোঁট আপনাআপনি ঝরে যায়। নতুন করে ঠোঁট না কাটার ফলে লেয়ার মুরগী অনেক ধরনের রোগ জীবাণুর হাত থেকে রেহাই পায় ও ডিমের উৎপাদন খরচ কমে যায়। ফলে সেসব দেশের লেয়ার খামারিদের লাভবান হওয়ার পথ সুগম হয়।

আমাদের বাংলাদেশেও এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এখন চলে এসেছে। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে মুরগির ঠোট কাটার খরচ ও কস্ট দুটোই বেঁচে যাবে দেশের লেয়ার খামারীদের।

This post has already been read 8898 times!

Check Also

ডিম ও মুরগির উৎপাদন দ্বিগুন করাই মূল লক্ষ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতিদিন জনসংখ্যা বাড়লেও কমছে আবাদি জমি। ২০৫০ সাল নাগাদ ডিম, দুধ, মাংসের চাহিদা …