Monday , June 30 2025

৩ দিনের ভারিবর্ষনে আমন বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত, ভেসে গেছে সহস্রাধিক চিংড়িঘের

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : নিম্নচাপের কারনে টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে কয়রায় চলতি রোপা আমন মৌসুমে প্রায় ৮ হাজার বিঘা জমির বীজতলা তলিয়ে গেছে এবং ভেসে গেছে ছোট বড় সহস্রাধিক চিংড়িঘের। এছাড়া বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে কৃষকের সকল ধরনের সবজি ক্ষেত ও পুকুর এবং ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে গ্রামের ছোট ছোট রাস্তা। এদিকে শ্রাবনের শেষ দিকে স্থানীয় কৃষকরা পরিমাণ মত আমন ধানের বীজ তলা বৃষ্টির আগেই মাঠে বপন করেছিল বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।

কয়রা কৃষি দপ্তর সূত্র জানাগেছে, খুলনার উপকুলীয় কয়রার কৃষকরা চড়ামূল্যে আমন বীজ ক্রয় করে জমিতে ফেলে একদিকে যেমন ক্ষতিগ্রস্থ অন্যদিকে নতুন করে বীজ কেনার কথা ভাবিয়ে তুলেছে। চলতি রোপা আমন মৌসুমে কয়রা উপজেলায় প্রায় ৯০ হাজার বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন কৃষকরা। সেজন্য ৮ হাজার বিঘা জমিতে চাষীরা ব্রি-১০,২৩,৩০,৬৭,৫২,৮৭,৭৬ ও ৪৯ সহ স্থানীয় জাতের কিছু ধান বীজ তলা হিসেবে জমিতে বপন করেছেন। কিন্তু ৩ দিনের বৃষ্টিতে প্রায় শতভাগ বীজ তলা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চলতি মৌসুমে উক্ত বীজতলা দিয়ে জমি রোপন করা সম্ভব নয় বলে একাধিক কৃষক জানিয়েছেন। খবর নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার আমাদী ইউনিয়নে চিংড়ি ঘের না থাকায় সেখানে আমন ধান চাষ বর্ষার শুরুতেই চাষ শুরু হয় এবং রোপনের কাজও ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। তবে অতিবৃষ্টিতে বীজ তলা তলিয়ে যাওয়ায় মারাক্তক ক্ষতির মধ্যে পড়েছে উক্ত এলাকার কৃষকরা। এছাড়া অপর ৬ টি ইউনিয়নে কিছু কিছু এলাকায় লবন পানির চিংড়ি ঘের থাকায় আমন ধান চাষ কম হলেও বাগালী ইউনিয়নে ব্যাপক এলাকায় চাষ হয়। এবিষয় বাগালী ইউনিয়নের বামিয়া গ্রামের আঃ সামাদ গাজী, বারোপোতা গ্রামের আবুল বাসার, চটকাতলা গ্রামের দীপক মন্ডল, কুশোডাঙ্গা গ্রামের আকবর গাজী, বাশখালী গ্রামের কেসব মন্ডলসহ একাধিক কৃষক জানান, এই ইউনিয়নে বৃহত্তর ১২ টি গ্রামে শতভাগ জমিতে আমন চাষ হয়। কিন্তু অতিবৃষ্টির পানিতে ২৪ ঘন্টার মধ্যে এসব গ্রামের সকল বীজতলা পানির নিচে থাকায় অনেক কৃষক ছুটছেন নতুন করে বীজ এবং অর্থ সংগ্রহের জন্য। এছাড়া মহারাজপুর, মহেশ্বরীপুর, ও কয়রা ইউনিয়নে বেশিরভাগ জমিতে আমন চাষ শুরু হলেও কমেছে উত্তর ও দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নে। সূত্র জানায়, আম্পান ও ইয়াসের কারনে চিংড়ি চাষ এ দুটি ইউনিয়নে বেশি হওয়ায় ধান চাষ রোপন কম হয়।

এবিষয় উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, ভারি বর্ষনের ফলে কয়রায় উপজেলায় প্রায় শতভাগ বীজতলা পানির তলে তলিয় গেছে । বীজ তলা নষ্টা হওয়ার বিষয়টি উর্ধতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, কৃষকরা ইতোমধ্যে বীজতলা বপন শেষে কিছু এলাকায় রোপন শুরু হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ এলাকায় নতুন করে বীজ তলা বপন করতে হবে, সে জন্য নতুন করে বীজের চাহিদা সম্পার্কে কতৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

This post has already been read 4889 times!

Check Also

বাওর জেলেদের সমস্যা সমাধানে প্রাথমিক পদক্ষেপ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার সীমিত সময়ের জন্য কাজ …