📍 ঢাকা | 📅 রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫

ভারতীয় পশুতে ক্ষুরা রোগ: মহিষে কমছে রপ্তানি আয়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সুস্বাদু, দামেও সস্তা হওয়ার কারণে এক সময় ভারতীয় মহিষের মাংসের বেশ কদর ছিল এশিয়া-ইউরোপের বাজারে। কিন্তু এশিয়ার সব থেকে বড় বাজার চিনেই এখন ভারত থেকে মহিষের মাংস যাচ্ছে না। ইউরোপের বাজারও ধরাছোঁয়ার বাইরে। কারণ, ভারতীয় গবাদিপশুর মধ্যে ‘ফুট অ্যান্ড মাউথ’ বা ক্ষুরা রোগের প্রাদুর্ভাব।

কিন্তু চিন ও ইউরোপের বাজারে মহিষের মাংসের রফতানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত পাঁচ বছরে রফতানি কমেছে। কমেছে বিদেশি মুদ্রার আমদানিও। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে ১৪.৮ লাখ মেট্রিক টন রফতানি হয়েছিল। ২০১৮-১৯-এ তা নেমে এসেছে ১২.৩ মেট্রিক টনে। আয় হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা।

রোগটি নির্মূল করতে গত বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘ব্রজভূমি’ মথুরা থেকে জাতীয় পশু রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি চালু করেন। এ কর্মসূচির আওতায় ৩০ কোটি গরু-বলদ-মহিষ, ২০ কোটি ছাগল-ভেড়া এবং ১ কোটি শুয়োরকে টিকা দেওয়া হবে। খরচ হবে ১২,৬৫২ কোটি টাকা। টিকাকরণ হয়ে যাওয়া পশুদের জন্য আধার কার্ড চালু হবে। তৈরি হবে ‘হেল্‌থ কার্ড’। বছরে দু’বার টিকা দেওয়ার পরে পশুদের শরীরে ‘ট্যাগ’ লাগিয়ে দেওয়া হবে। লক্ষ্য, ২০২৪-এর মধ্যে ভারতে ‘ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ়’ নিয়ন্ত্রণে আনা এবং ২০৩০-এর মধ্যে তা নির্মূল করা।

প্রশ্ন উঠেছে, মহিষের মাংস আরও বেশি করে বিদেশে রফতানি করতেই কি ‘ফুট অ্যান্ড মাউথ’ রোগ দূর করার পরিকল্পনা?

নরেন্দ্র মোদি ওইদিন যুক্তি দিয়েছেন, দেশে কৃষকদের কথা বলতে হলে ‘পশুধন’-এর কথা বলতেই হবে। তাঁর কথায়, ‘‘গ্রামের মানুষের জীবনে পশুপালনের মূল্য অসীম। গ্রামের কোনও পরিবার এ ছাড়া বাঁচতে পারবে?’’ কেন্দ্রীয় সরকারের পশুপালন দফতরের দাবি, ‘ফুট অ্যান্ড মাউথ’ রোগ নির্মূল হলে চাষিদের লোকসান কমে যাবে। কারণ, ভাইরাসের সংক্রমণে গরুর পায়ে, মুখে ঘা হয়। গবাদি পশু সুস্থ থাকলে চাষিদের আয় বাড়বে। ২০২২-এর মধ্যে চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে।

বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপি শাসিত রাজ্যে গোরক্ষক বাহিনী ও কড়া আইনের দাপটে চাষিদের প্রাণ ওষ্ঠাগত। গরু-বলদ দুধ দেওয়া বন্ধ করে দিলেও বেচে দেওয়ার উপায় নেই। আবার বসিয়ে খাওয়ানোরও পয়সা নেই। তাই তারা গরু-বলদ রাস্তায় ছেড়ে দিচ্ছে। বেওয়ারিশ গরুর পাল চাষের জমিতে ঢুকে ফসল নষ্ট করছে।

উল্লেখ্য, বিজেপি সরকারের আমলে গরু জবাইয়ের উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে গো-রক্ষক বাহিনীও প্রবল সক্রিয়। কিন্তু মহিষের মাংসের ব্যবসা বা রফতানিতে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, মায়ানমারে ভারত থেকে সেই মাংস রফতানি হচ্ছে।

Share:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn

Comments are closed.

আরো পড়ুন

মুনিম সিদ্দিকী: মরক্কোতে মান্ডারিন কমলার মধ্যে নাদরকট, তাঞ্জারিন, নুর নামীয়…