গাজীপুর সংবাদদাতা : কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেছেন, আমাদের অনেক উদ্যেক্তা আছেন যারা সহায়তার কথা বলেন। তাদের জন্য সরকার এ বছর কৃষি খাতে ৩৯ হাজার কোটি টাকা কৃষি ঋণ দেবে। এখন আমরা খুজে বের করার চেষ্টা করবো প্রকৃত উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য কাদের সহায়তা প্রয়োজন। আমরা আমরা তাদের সহায়তা করার চেষ্টা করবো।
সরকার ঘোষিত ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) এর আয়োজনে আজ ০৪ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘তারুণ্যের উদ্ভাবনী শক্তি, কৃষি রূপান্তরের চালিকা শক্তি’ শীর্ষক একটি সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষি সচিব বলেন, আলু চাষিদের সহায়তার জন্য সরকার এবারই প্রথম হিমাগার গেইটে মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। এছাড়াও সরকার এবারই প্রথম ৫০ হাজার মেট্রিক টন আলু কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ যদি তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য না পায় তাহলে আমাদের তৃপ্ত হওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি আরো বলেন, আমাদের আজকের তরুণ শিক্ষার্থীরাই আমাদের আগামী দিনের অপার সম্ভাবনাময় সম্পদ। এই সম্পদ আমাদের কাজে লাগাাতে হবে।
ড. এমদাদ উল্লাহ মিয়ান আরও বলেন, এই প্রথম কৃষি মন্ত্রণালয় ২৫ বছর মেয়াদী একটি কর্মকৌশল প্রণয়নে কাজ করছে। এর লক্ষ্য ২০৫০ মধ্যে সবার জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করা।
বিএআরসি’র নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. নাজমুন নাহার করিম এর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জি কে এম মোস্তাফিজুর রহমান। সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. সফিউল ইসলাম আফ্রাদ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএআরসি’র কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সদস্য পরিচালক এব ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ কর্মসূচি আয়োজক কমিটির আহবায়ক ড. মো. মোশাররফ উদ্দিন মোল্লা। সেমিনারে ‘তারুণ্যের উদ্ভাবনী শক্তি, কৃষি রূপান্তরের চালিকা শক্তি’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএআরসি’র কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং এপিসিইউ-বিএআরসি, পার্টনার প্রকল্পের ডেপুটি প্রোগ্রাম ডাইরেক্টর (এইচআরডি) ড. মো. আব্দুস সালাম।
সেমিনারে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শেষ বর্ষ ও মাস্টার্স পর্বের শিক্ষার্থী, তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কৃষি মন্ত্রণালয় ও বিএআরসি’র কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী, বিভিন্ন এনজিও ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিসহ প্রায় ৫০০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সেমিনারে তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে তরুণদের উৎসাহিত করতে কৃষির বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল ১১ জন উদ্যোক্তার সফলতার গল্প উপস্থাপন করা হয়। তাঁরা হলেন: কৃষিবিদ মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন তুলিপ (কফি চাষ সম্প্রসারণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ), শাহীদা বেগম (পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ), আব্দুল হালিম (নিরাপদ সবজি উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ), কৃষিবিদ মো. মোবারক হোসেন (মধু উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ), প্রকৌশলী মো. মিলন মিয়া (জৈব সার উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ), মো. ইসমাইল (নিরাপদ শুঁটকি মাছ উৎপাদন), কৃষিবিদ আল মামুন (রঙিন মাছ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ), কৃষিবিদ ডা. মো. তাজাম্মুল হক (প্রযুক্তি নির্ভর উদ্ভাবনী সেবা), কৃষিবিদ মো. নাজমুস সাকিব (টেকসই কৃষি প্রযুক্তি বিস্তার), কাজী কাওসার হোসেন প্রিতম (গবাদিপ্রাণি হৃষ্টপুষ্টকরণে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য ব্যবস্থাপনা) এবং মো. রেজওয়ানুল ইসলাম (অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা)।