নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীতে শেষ হলো দুই দিনব্যাপী “পোল্ট্রি অ্যান্ড সয়া ফুড ফেস্ট ২০২৫”। বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) ও ইউএস সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিল (ইউএসএসইসি)-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ উৎসব কেবল খাদ্যপ্রেমীই নয়, বরং পুষ্টি ও নিরাপদ প্রোটিন বিষয়ে সচেতন সকল মহলের নজর কেড়েছে। আয়োজনে ভিড় জমেছিল রন্ধনশিল্পী, গবেষক, নীতিনির্ধারক, প্রশিক্ষণার্থী, শিক্ষার্থী ও সাধারণ দর্শনার্থীদের।
২৬-২৭ আগস্ট রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন (কেআইবি) মিলনায়তনে আয়োজিত ফেস্টের মূল উদ্দেশ্যে ছিল মানুষের মাঝে প্রোটিন সচেতনতা ও পুষ্টি নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা।
ফেস্টের প্রথম দিন উদ্বোধন করেন বিপিআইসিসি সভাপতি শামসুল আরেফীন খালেদ। এছাড়াও সমাপনী দিনে ’রাইট টু প্রোটিন’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, প্রোটিন শুধু একটি খাদ্য নয়, এটি মানুষের অধিকার। মানুষের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতেই আমরা এমন উদ্যোগ নিয়েছি। এ সময় তিনি মানবসম্পদ উন্নয়নে প্রোটিনের অপরিহার্যতা তুলে ধরেন।
দুই দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য দেন বিপিআইসিসি’র কোষাধ্যক্ষ এবং ওয়াপসা-বিব ‘র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সিরাজুল হক, ইউসেক (USSEC) এর কান্ট্রি লিড (বাংলাদেশ) খাবিবুর রহমান, (USSEC) এর সাউথ এশিয়ার হিউম্যান ইউটিলাইজেশন রিজিওনাল হেড ক্রিস্টেল করদাহী এবং ওয়াপসা-বিবি’র সাধারণ সম্পাদক ডা. বিপ্লব কুমার প্রামাণিক।
আলোচনায় অংশ নেন ইসরাত জাহান, পুষ্টিবিদ ও ডায়েটিশিয়ান, সাজিদা ফাউন্ডেশন, ঢাকা, যিনি সয়াবিনকে নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ী প্রোটিনের উৎস হিসেবে ব্যাখ্যা করেন “দ্য রাইট প্রোটিন” শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শামসুন নাহার নাহিদ (মহুয়া), প্রধান পুষ্টিবিদ (পুষ্টি বিভাগ), বারডেম জেনারেল হাসপাতাল। আলোচনার পর্বে অংশগ্রহণকারীরা প্রোটিন নিরাপত্তা, খাদ্যাভ্যাস ও জনসচেতনতা নিয়ে মতবিনিময় করেন।
প্রথম দিনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল মুরগির মাংস ও সয়াবিন দিয়ে ১০টি নতুন রেসিপি প্রদর্শনী। কালিনারি ইনস্টিটিউট প্রধান ডেনিয়েল সি গোমেজের নেতৃত্বে অংশ নেন ফ্রাঞ্চিজ গোমেজ ও ফাহমিদা নাজিম। প্রায় ৪০০ প্রশিক্ষণার্থী সরাসরি রান্নার কৌশল শিখে সনদপত্র পাওয়ার সুযোগ পান এবং দর্শনার্থীরাও এসব রেসিপির স্বাদ গ্রহণ করেন। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানি ফ্রোজেন ও প্রসেসড ফুডের স্টল স্থাপন করে নিজেদের পণ্য প্রদর্শন করে।
দ্বিতীয় দিনের আরেকটি আকর্ষণ ছিল জাতীয় পর্যায়ের রন্ধন প্রতিযোগিতা। সারাদেশ থেকে আগত ২০ জন কুকিং এক্সপার্টের মধ্যে পুরস্কৃত হন ৫ জন। চ্যাম্পিয়ন ফারমিন আজাদ (৫০,০০০ টাকা), প্রথম রানারআপ রাফিদা চৌধুরী (৩০,০০০ টাকা), দ্বিতীয় রানারআপ ইলা ফারজানা (২০,০০০ টাকা), চতুর্থ স্থান মারুফা (৭,০০০ টাকা) এবং পঞ্চম স্থান অর্জন করেন মিরাজুল (৫,০০০ টাকা)।
আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেছেন, “পোল্ট্রি এন্ড সয়া ফুড ফেস্ট ২০২৫” দেশের জনগণকে নিরাপদ, পুষ্টিকর ও সাশ্রয়ী খাদ্য গ্রহণে অনুপ্রাণিত করবে এবং আগামী দিনের পুষ্টি চাহিদা পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।