নিজস্ব প্রতিবেদক: সার্ক কৃষি কেন্দ্রের উদ্যোগে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী আঞ্চলিক কর্মশালা ‘দক্ষিণ এশিয়ায় উদ্ভিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কৃষি জৈবনিরাপত্তা’। ভার্চুয়াল এই কর্মশালায় সার্কভূক্ত দেশসমূহের বিশেষজ্ঞ, নীতিনির্ধারক ও গবেষকেরা উদ্ভিদের স্বাস্থ্য ও সীমান্ত পেরিয়ে আসা জৈব হুমকি মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ নিয়ে মতবিনিময় করছেন।
উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব (সার্ক ও বিমসটেক) আবদুল মোতালেব সরকার। তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক বাণিজ্য রক্ষায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে।
সার্ক কৃষি কেন্দ্রের পরিচালক ড. মো. হারুনূর রশীদ কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানান এবং কারিগরি অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, সীমান্ত পেরিয়ে আসা কীটপতঙ্গ ও রোগব্যাধি থেকে ফসল রক্ষায় জৈবনিরাপত্তা অত্যন্ত জরুরি। একটি সমন্বিত আঞ্চলিক কৌশলই কৃষিকে টেকসই ও নিরাপদ করতে পারে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) ড. নাজমুন নাহার করিম। তিনি গবেষণা ও নীতিনির্ধারণের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সম্মানিত অতিথি হিসেবে নেপালের সার্ক সচিবালয়ের পরিচালক (এআরডি ও এসডিএফ) তানভীর আহমেদ তরফদার নিরাপদ বাণিজ্যের জন্য অভিন্ন উদ্ভিদ কোয়ারেন্টাইন মানদণ্ডের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
ভারতের আইসিএআর-এনবিপিজিআরের উদ্ভিদ কোয়ারেন্টাইন বিভাগের প্রধান বিজ্ঞানী ড. ভি. সেলিয়া চাল্লাম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন ও উন্মুক্ত সীমান্তের কারণে গমের ব্লাস্ট, ফল আর্মিওয়ার্ম ও পঙ্গপালসহ নতুন নতুন রোগ-বালাইয়ের ঝুঁকি বাড়ছে বলে উল্লেখ করেন।
কর্মশালার উদ্দেশ্য ও কর্মসূচি তুলে ধরেন সার্ক কৃষি কেন্দ্রের সিনিয়র প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট (ফসল) ড. সিকান্দার খান তানভীর। তিনি জানান, এ কর্মশালা সার্কভুক্ত দেশগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও সম্মিলিত উদ্যোগ নির্ধারণে পরামর্শক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।
আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা আঞ্চলিক নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করা, প্রারম্ভিক সতর্কতা ও নজরদারি ব্যবস্থা গড়ে তোলা, কৃষকদের মধ্যে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা (আইপিএম) বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিন দিনব্যাপী এ কর্মশালায় সার্ক উদ্ভিদ স্বাস্থ্য বায়োসিকিউরিটি নেটওয়ার্ক গঠন, তথ্য বিনিময়ের রিয়েল-টাইম ব্যবস্থা এবং গবেষণা ও উন্নয়ন সহযোগিতা বাড়াতে করণীয় বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়ন করা হবে।