নিজস্ব প্রতিবেদক: দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা এবং উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে দেশের উপকূলীয় ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে কয়েক দিন ধরে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর ফলে ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতায় মাঠের ফসল ডুবে গিয়ে চাষাবাদে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যানুযায়ী, চলমান বৃষ্টিপাত ও জলাবদ্ধতায় ২১টি জেলার প্রায় ৭২ হাজার হেক্টর জমির বিভিন্ন ধরনের ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আউশ ধান, যার পরিমাণ ৪৪ হাজার ৬০০ হেক্টরের বেশি। আমন ধানের বীজতলাও ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হয়েছে—তলিয়ে গেছে প্রায় ১৪ হাজার ৪০০ হেক্টর জমি। এছাড়া শাকসবজি, পাট, কলা, পেঁপে, পান, মরিচ ও গ্রীষ্মকালীন তরমুজসহ অন্যান্য ফসলও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিভিন্ন জেলার মধ্যে কুমিল্লার ক্ষতির মাত্রা সবচেয়ে বেশি। সেখানে প্রায় ১১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। নোয়াখালীতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭ হাজার ৮০০ হেক্টর জমি এবং ফেনীতে ১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমির ফসল বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে।
তবে আশার কথা, সাম্প্রতিক সময়ে বৃষ্টিপাতের মাত্রা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে জলাবদ্ধতাও ধীরে ধীরে কমে আসছে। এতে করে নিমজ্জিত ফসলগুলোর মধ্যে কিছু অংশ হয়তো পুনরুদ্ধার সম্ভব হতে পারে।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং মাঠপর্যায়ে কৃষকদের সহায়তায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই সময়ে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা, বীজ সহায়তা ও পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু না হলে কৃষি খাতে বড় ধরনের ক্ষতি অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে।