টাঙ্গাইল সংবাদদাতা : “গবাদিপশু ও মাছের খাদ্যে (ফিডে) ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিক মেশানো হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।” — এমন সতর্কবার্তা দিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, যারা জেনে-বুঝে অনিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করছে, তারা সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ভয়ংকর অপরাধ করছে। এ ধরনের খাবার গ্রহণের কারণে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে, এমনকি মৃত্যুঝুঁকিতেও পড়ছে।
তিনি আজ (২৮ জুন) বিকেলে টাঙ্গাইলে ব্যুরো বাংলাদেশের আঞ্চলিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত “নিরাপদ খাদ্য সম্মেলন-২০২৫” উপলক্ষে ‘নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিতকরণে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা আরও বলেন, বাজারে চাষের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ মাছ আসছে, কিন্তু এর সঙ্গে অনিরাপদ মাছও ঢুকে পড়ছে। অনেক ক্ষেত্রেই মাছ ও গবাদিপশুর খাদ্যে এমন সব উপাদান মেশানো হচ্ছে, যা মানুষের শরীরের জন্য বিষতুল্য। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কঠোর নজরদারি ও নিয়মিত অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন, বিশেষ করে যদি কোনো ফিডে ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, “অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনে আইনগত পদক্ষেপ নিতে হবে। মানুষের জীবনের সঙ্গে কোনো আপস করা যাবে না।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক। উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো: মিজানুর রহমান, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: শহিদুল আলম, উন্নয়ন বিকল্পের নীতিনির্ধারণী গবেষণা প্রতিষ্ঠান উবিনীগ-এর পরিচালক সীমা দাস সীমু, ব্যুরো বাংলাদেশের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক ইস্তাক আহাম্মেদ, আসপাডা পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক লায়ন এম এ রশীদ, সবুজ পৃথিবীর প্রতিনিধি ও নয়াকৃষি আন্দোলনের কৃষকরা।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সবুজ পৃথিবীর সাধারণ সম্পাদক সহিদ মাহমুদ এবং নয়াকৃষি আন্দোলনের টাঙ্গাইল সমন্বয়ক মো: রবিউল ইসলাম চুন্নু।
আলোচনায় ফরিদা আখতার বৃক্ষরোপণ ও খাদ্য নিরাপত্তার সম্পর্ক নিয়ে বলেন, “সব গাছ পরিবেশবান্ধব নয়। পরিকল্পনার সময় গাছ নির্বাচনে সচেতন হতে হবে।”
অনুষ্ঠান শেষে উপদেষ্টা টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে কয়েদিদের জন্য তাঁতশিল্প রক্ষায় এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে তাঁতযন্ত্র স্থাপন ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক শরীফা হক, পুলিশ সুপার মো: মিজানুর রহমান, জেল সুপার মো: শহীদুল ইসলাম এবং জেলার মোহাম্মদ হাবীবুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।