Saturday , June 21 2025

দেশীয় মাছ বাঁচাতে গবেষণার উপর জোর দিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

ময়মনসিংহ সংবাদদাতা:  দেশীয় ছোট মাছ রক্ষা এবং নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে গবেষণা ও প্রযুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, মাছ শুধু আমিষের উৎস নয়, এটি বাঙালির সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ সম্পদ রক্ষায় বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা ও মাঠপর্যায়ে প্রযুক্তির বাস্তব প্রয়োগ সময়ের দাবি।

আজ শনিবার (২১ জুন) বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) ময়মনসিংহে আয়োজিত “বার্ষিক গবেষণা অগ্রগতি (২০২৪-২৫) পর্যালোচনা ও গবেষণা পরিকল্পনা (২০২৫-২৬) প্রণয়ন” শীর্ষক আঞ্চলিক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, “বিশেষ করে ছোট মাছের বিলুপ্তি ঠেকাতে বিএফআরআইকে আরও সক্রিয় হতে হবে। মৎস্য অধিদপ্তর, বিএফআরআই ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় গড়ে তুলতে পারলে মৎস্যসম্পদের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হবে।”

তিনি বলেন, বিজ্ঞানীরা জাতির অমূল্য সম্পদ। তাদের গবেষণালব্ধ প্রযুক্তি সাধারণ মানুষের জন্য সহজবোধ্য এবং বাস্তবসম্মত হতে হবে, যাতে তা মাঠপর্যায়ে কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হয়।

নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “হাওরাঞ্চলে কৃষিকাজে ব্যবহৃত কীটনাশক জলজ প্রাণীর জন্য বড় হুমকি। এ সমস্যা নিরসনে জাতীয় পর্যায় থেকে উপজেলা পর্যন্ত কীটনাশক নিয়ন্ত্রণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, এসব কমিটির কার্যকর পদক্ষেপ হাওরের মাছ ও জলজ প্রাণী সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

তিনি আরও বলেন, আইইউসিএনের শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী বিপন্ন ও হুমকির মুখে থাকা মাছ সংরক্ষণে বিএফআরআই ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে কার্যকর উদ্যোগ নিতে পারে। গবেষণালব্ধ ফলাফল যদি সঠিকভাবে কাজে লাগানো যায়, তবে এটি দেশের মৎস্যসম্পদ রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার বলেন, গবেষণার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বিএফআরআই ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমন্বয় আরও দৃঢ় করতে হবে।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিএফআরআই-এর মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র। উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ বিভাগের মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, বিএফআরআই-এর বিজ্ঞানী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন পর্যায়ের মৎস্য খামারিরা।

গবেষণা পরিকল্পনার খসড়া উপস্থাপন করেন স্বাদুপানি কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হারুন উর রশিদ।

কর্মশালার আগে উপদেষ্টা বিএফআরআই-এর গবেষণা খামার ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত পদ্ধতিসমূহ ঘুরে দেখেন। তিনি টেংরা, গুলশা, ভাগনা, পাবদা, মহাশোল, দেশি স্বঁরপুটি, বাটা, বিএফআরআই তেলাপিয়া, কুচিয়া, রেণু হ্যাচারি, বটমক্লিন সিস্টেম, মুক্তা ল্যাবসহ বেশ কয়েকটি উদ্ভাবনী গবেষণা ইউনিট পরিদর্শন করেন এবং সন্তোষ প্রকাশ করেন।

This post has already been read 33 times!

Check Also

কাপ্তাই লেক দেশের সম্পদ, এটাকে রক্ষা করতে হবে  -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

রাঙ্গামাটি সংবাদদাতা : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, কাপ্তাই লেক দেশের সম্পদ, এই …