রঞ্জন কুমার সরকার (নওগাঁ): সুজলা-সুফলা, শস্য শ্যামলা প্রাকৃতিক বৈচিত্রের অবাধ লীলাভূমি আমাদের এই বাংলাদেশ। ষড় ঋতুর আবর্তে বাংলাদেশের প্রথম ঋতু হল গ্রীষ্মকাল । আবার বাংলা অভিধান অনুযায়ী চৈত্র মাসই মধু মাস হলেও সকলের কাছে জৈষ্ঠ্য মাস মধু মাস হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে। এ সময় চারিদিক বিভিন্ন রসালো ফলের ছড়াছড়ি। কিন্তু এই মধু মাসে মধুর ফলের স্বাদ যেমন আমাদের আকর্ষণ করে ঠিক তেমনি এই মাসের অসহ্য গরম আমাদের কষ্ট দেয়। প্রচণ্ড গরমে নিশ্বাস-প্রশ্বাস ত্যাগ ও গ্রহণ করতে কষ্ট হয়। ঘর থেকে বের হলেই ঘেমে শরীরে ক্লান্তি ভাব আনে। গরমের সময় অনেকেরই পেটের সমস্যাসহ বিভিন্ন ধরনের রোগ-জীবাণুর সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞগণের মতে, প্রচন্ড গরমে ঘামের সঙ্গে শরীর হতে সোডিয়াম, পটাশিয়াম বেরিয়ে যায়। সে কারণে পানি স্বল্পতা দেখা দেয় এবং দুর্বলতা বোধ হয়। নানা ধরনের রোগে ভোগে বাচ্চা, বৃদ্ধ সবাই। ডায়রিয়া, ডিহাইড্রেশন, জ্বর, ঠান্ডা, হিট স্ট্রোক এমন নানা রোগে কষ্ট পাই কম বেশি আমরা সকলেই। এখন রোগে ভুগে কষ্ট পাওয়ার দিন শেষ। বর্তমানে সবাই অনেক স্বাস্থ্য সচেতন। ভালো থাকতে হবে নিজেকে আর ভালো রাখতে হবে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের। তাই জানতে এবং মানতে হবে ছোট ছোট কিছু কৌশল। তাহলেই সুস্থ থাকা অনেক সহজ হয়ে যাবে। আসুন গ্রীষ্মের এ প্রচন্ড গরমে নিজেকে সুস্থ রাখার কিছু কৌশল জেনে নেই।
সুষম খাদ্যাভাস: আমাদের খাদ্য গ্রহনের মূল উদ্দেশ্য হল সুস্থ, সবল ও কার্যক্ষম হয়ে বেঁচে থাকা। যে কোন খাবার খেয়ে পেট ভরানো যায়, কিন্তু তাতে দেহের চাহিদা মিটিয়ে সুস্থ থাকা যায় না। কাজেই প্রকৃত খাদ্য ও পুষ্টি সম্বন্ধে আমাদের প্রত্যেকেরই ধারণা থাকা দরকার। মূলত: খাদ্যের ০৬টি উপাদান-শর্করা,আমিষ, স্নেহ, খনিজ লবণ, ভিটামিন ও পানি বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজ করে থাকে। এ উপাদানগুলোর ভূমিকা বিভিন্ন ধরণের , তবে একে অপরের পরিপূরক। আমরা খাবার বলতে ভাত বা মাছ-মাংস গ্রহণটাকেই সাধারণভাবে বুঝে থাকি। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে খাদ্যের ০৬টি উপাদান গ্রহণ করেই কেবলমাত্র নিরোগ থাকা সম্ভব। অর্থাৎ শুধু ভাত বা রুটি বা মাছ-মাংস নয় বরং দুধ, ডিম, শাকসবজি, ফলমূল প্রভৃতি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলে সুস্থ থাকা সম্ভব। খাদ্য বিজ্ঞানীদের মতে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য প্রতিদিন ৪০০গ্রাম ফল-সবজি খাওয়া প্রয়োজন। এর মধ্যে শাকপাতা ১১০ গ্রাম; ফুল, ফল, ডাটা সবজি ৮৫ গ্রাম; মূল জাতীয় ৮৫ গ্রাম; ১১০ গ্রাম ফল গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। তবে ফল বা সবজি রান্না বা প্রক্রিয়া করা ব্যতীত খেতে পারলে অধিক পুষ্টি পাওয়া সম্ভব।
খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনা: প্রাতঃরাশে দই, চিড়া, কলা, সিদ্ধ আটার রুটি, সিদ্ধ ডিম, পাউরুটি, জেলি, সাদা সবজি, নরম খিচুড়ি রাখা যেতে পারে। গরমের সময় অনেকেই পান্তাভাত খেতে পছন্দ করেন। এতে শরীর ঠাণ্ডা থাকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়। শরীরের পানির অভাব দূর করে। দুপুরের চেয়ে কম হওয়া উচিৎ রাতের খাবার। কারণ রাতের দিকে মানুষের শারীরিক পরিশ্রম যেমন কমে যায় তেমনই বিপাক ক্রিয়ার হারও কম থাকে। গরমের সময় প্রায় মানুষের ডায়রিয়া বা পেট খারাপ হয়ে যায়। এতে স্বাস্থ্য যেমন নষ্ট হয় তেমনই দেহের লাবণ্য নষ্ট হয়। পেটের গোলমাল থেকে মুক্ত থাকার বিষয়ে নিজেকে লক্ষ্য রাখতে হবে। গরমের সময়ে পৃথক কোনো খাবার নেই। তবে খাবার হবে সুষম ও সহজপাচ্য ও জলীয়। বাজার করার সময় ফল ও সবজি অবশ্যই কিনতে হবে। দেহ মন সুস্থ সতেজ রাখার জন্য এমন খাবারই গরমের সময় খেতে হবে। রাত ও দুপুরের খাবারের সঙ্গে ঠাণ্ডা সালাদ রাখলে শরীরের জন্য উপকার। গরমের সময় দুপুরে শাক-সবজি দিয়ে নিরামিষ খেলে ভালো হয়। ভাতের সঙ্গে আনারস, কামরাঙ্গা, আম, আমড়াসহ টক, ছোট মাছের ঝোল, সুসিদ্ধ ডাল খেলেও দেহে প্রশান্তি মিলবে।
সকাল হতে রাত্রী অবধি প্রচুর পানি পান করুন: মানুষের শরীরে ৬০-৭০ ভাগই পানি। তাই গরমে সুস্থ থাকতে হলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। পানির কোন বিকল্প নেই। প্রতিদিন ঘামের সাথে প্রচুর পানি ও লবণ আমাদের শরীর থেকে বের হয়ে যায়। আর তাই প্রতিদিন ৬-৮ লিটার পানি অবশ্যই পান করুন। তৃষ্ণা না পেলেও প্রচুর পানি পান করুন। পানি ছাড়াও ডাব, জুস, লাচ্ছি, লেবু পানি, দই প্রভৃতি খেতে পারেন। এতে শরীর আর্দ্র থাকবে।
বেশী বেশী রসালো ফল খাওয়ার অভ্যাস করা: ফল দেহে আনে বল, মনে আনে প্রশান্তি। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করুন প্রচুর রসালো ফল। রসালো ফল আপনার শরীরের পানির ঘাটতি পূরণে সাহায্য করার পাশাপাশি বিভিন্ন ভিটামিন, খনিজের অভাব দূর করবে এবং এই গরমে আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর করে কাজের শক্তি যোগান দেবে। প্রচন্ড গরমের সময় শরীর থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায় বলে খেতে হবে ডাব, শসা, আম, তরমুজ ইত্যাদি। ডাব, পাকা কলা শরীরের ইলেকট্রোলাইট (সোডিয়াম, পটাশিয়াম) এর ভারসাম্য বজায় রাখতে গূরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তরমুজ তৃষ্ণা মেটায়, এতে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, লাইকোপেন ও বিটা ক্যারোটিন। যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এ ছাড়া পানি জাতীয় সবজি যেমন-পটোল, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, লাউ, এসব খাবার হালকা তেলে রান্না করে খেতে হবে।
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় প্রচুর শাক-সবজি রাখা: শাকসবজিতে মানব দেহের জন্য অতি প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেলস্ ও এন্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান। বাংলাদেশে উৎপাদিত শাকসবজি বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে থাকে। এ সকল শাক সবজি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা ছাড়াও খাদ্য হজম, পরিপাক ও বিপাকে সহায়তা; শর্করা,আমিষ ও তেলকে ক্যালরি(শক্তি) তে পরিণত করতে, খাবারে রুচি বৃদ্ধি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে সবজি রাখুন এবং তরকারিতে ঝোল রাখুন। এসময় যতটা সম্ভব কষা রান্না পরিহার করুন। গরমে শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয় বলে ঝোল জাতীয় খাবার থাকা খুবই দরকার।
অত্যাধিক চর্বিযুক্ত খাবার/মাংস কম পরিমানে খাওয়া: অতিরিক্ত মাংস খাওয়া শরীরের জন্য এমনিতেই ক্ষতিকর। মাংসে জলীয় অংশের পরিমাণ তুলনামূলক কম থাকে। ফলে প্রতিদিন মাংস গ্রহণ শরীরে জন্ম দেয় নানা রোগের। আমাদের শরীরের বেশিরভাগ রোগের অন্যতম কারণ প্রতিদিন মাংস খাওয়া। তাই প্রচন্ড গরমে সুস্থতা বজায় রাখতে নিজের এবং পরিবারের মাংস খাওয়া যথাসম্ভব কমিয়ে আনা প্রয়োজন। এছাড়াও অতিরিক্ত ঝাল-মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে যেতে পারলে সুস্থ থাকা আরও সহজ হবে।
কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার কম গ্রহণ: কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার আমাদের শরীরকে স্থুলকায় করে তোলে। জানলে অবাক হবেন ডায়াবেটিস-এর মতো ভয়াবহ রোগের অন্যতম কারণ এই অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার গ্রহণ। তাই কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারকে না বলুন। তবে না, একেবারে নয় কিন্তু! পরিমাণ মতো খাবেন এবং শরীরে জমতে দিবেন না এভাবে সুস্থ থাকুন অনেকদিন।
চা, কফি গ্রহণ কমিয়ে দেয়া: চা, কফিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফেইন। যা শরীরকে করে তোলে শুষ্ক। যেহেতু গ্রীষ্মকালে আমরা প্রচুর ঘামি, সেহেতু শরীর থেকে বেরিয়ে যায় প্রচুর পানি। তাই চা, কফি পান যথা সম্ভব কমিয়ে দিন। আর সম্ভব হলে গরমের সময় চা, কফি পান করা থেকে বিরত থাকুন। বরং বেশি বেশি সাধারণ বিশুদ্ধ পানি পান করুন।
লেবু, বেলের শরবত ও ডাবের পানি করুন: গরমে নিয়মিত পান করুন লেবুর শরবত কিংবা বেলের শরবত। সম্ভব হলে ডাবের পানি পান করুন। লেবুতে আছে ভিটামিন-সি। বেলে আছে ভিটামিন, মিনারেল, শর্করা। ডাবের পানিতে আছে আয়োডিন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রণ ইত্যাদি। এ জাতীয় পানীয় শরীরকে করবে সতেজ ও ঠান্ডা এবং শরীরে ভিটামিন, আয়োডিন-এর অভাব দূর করে শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
কৃত্রিম ফলের রঙ/ গন্ধ দেয়া পানীয় এর গুণাগুণ জেনে গ্রহণ করা: বিভিন্ন ফলের রঙ বা গন্ধ দ্বারা প্রস্তুতকৃত পাউডার বা এ জাতীয় কোমল পানীয় স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। বিক্রি বৃদ্ধির জন্য বিজ্ঞাপনে নানা ধরণের পুষ্টি উপাদান দেখালেও, আসলে বেশীর ভাগ পণ্যেই এসব পুষ্টি উপাদান উপস্থিত থাকে না। যে সকল উপাদান দিয়ে এ সকল পণ্য উৎপাদন করা হয় তার সবই মানুষের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। কারণ এগুলোর বেশিরভাগই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর রঙ ও ফ্লেভার দ্বারা প্রস্তুতকৃত।
বিনা প্রয়োজনে ঘর হতে বের না হওয়া: প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে না বের হওয়া ভালো। ঘরের ভেতরে বা ছায়াযুক্ত স্থানে থাকতে চেষ্টা করুন। কারণ প্রচন্ড রোদ গরমে গেলে শরীর ঘামবে, শরীর হতে লবণ পানি বের হয়ে আপনাকে দুর্বল করে ফেলবে।
ছাতা ব্যবহার করুন: বাহিরে বেড়োবার সময় অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করুন। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি আমাদের ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকর। স্কিন ক্যান্সার-এর অন্যতম কারণ এই অতি বেগুনি রশ্মি। এছাড়াও অতিরিক্ত তাপমাত্রার জন্য অজ্ঞান হয়ে যাওয়া এমনকি হিট স্ট্রোকও হয়ে থাকে। তাই ব্যবহার করুন ছাতা। প্রচন্ড রোদ বা সূর্যের তাপকে এরিয়ে চলুন।
সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন: প্রতিদিন ও নিয়মিত ব্যবহার করুন সানস্ক্রিন এবং অবশ্যই তা হতে হবে ভালো কোন ব্যান্ড-এর। কমদামি বা সস্তা যেন তেন মানের মাখলে লাভের বদলে মারাত্মক ক্ষতি করবে আপনার ত্বকের। যে ক্ষতি অনেক সময় পূরণ করা প্রায় অসম্ভব। বরং বার বার পরিস্কার পানি দিয়ে মুখমন্ডল/হাত/পা ধোয়ার অভ্যাস করুন।
হালকা ব্যায়াম করুন: প্রতিদিন সকালে হালকা ব্যায়াম করুন। ব্যায়াম দেহ ও মনের উৎকর্ষতা সাধন করে। দেহ ও মনকে সতেজ রাখে, কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে, হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ব্যাগে রাখুন পানির বোতল: বাহিরে যাবার সময় অবশ্যই ব্যাগে রাখুন পানির বোতল। অনেক সময় অনেক জায়গায় বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দেয়। তাই সব সময় নিজের সাথে রাখুন নিরাপদ পানি।
সানগ্লাস / রোদ চশমা ব্যবহার করুন: ধূলাবালি ও রোদ থেকে বাঁচতে বাইরে যাওয়ার সময় ব্যবহার করুন রোদ চশমা বা সানগ্লাস। এতে করে সূর্যের রষ্মি চোখে সরাসরি পড়বে না বা ধুলাবালি চোখে আসবে না। এভাবে নিজেকে অনেকটা নিরাপদ/ সুস্থ রাখা সম্ভব।
শরীর পরিষ্কার রাখতে একাধিকবার গোসল করা: সুযোগ থাকলে একাধিকবার গোসল করতে পারেন। বিশেষ করে, ঘুমানোর আগে গোসল করে নিলে শরীরের তাপমাত্রা কম থাকবে। গ্রীষ্মের অতিরিক্ত গরমে ঘামাচির সমস্যা বাড়ে। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অতিরিক্ত গরমে প্রচুর পানি পান করা উচিত এবং প্রতিদিন কমপক্ষে দুবার গোসল করা প্রয়োজন। প্রতিদিন অন্তত গোসলের সময় একবার সাবান/শ্যাম্পু মাখতে হবে। এছাড়া প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
বাইরের খাবার গ্রহণ পরিহার করা: গরম আর ক্লান্তিতে বাইরের খোলা খাবার ও পানীয় গ্রহণের হার বেড়ে যায়। তার ওপর গরমে সহজেই খাদ্যদ্রব্য দূষিত হয়। বাড়ে মাছি ও পোকামাকড়ের বিস্তার, যা রোগবালাই ছড়াতে সাহায্য করে। এসবের ফলে বাড়ে পানি ও খাবার বাহিত রোগের প্রকোপ। এর মধ্যে একটি বড় সমস্যা হলো জন্ডিস। জন্ডিস থেকে বাঁচতে, বিশেষ করে রাস্তার খোলা খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকা একান্ত প্রয়োজন। বাইরের খোলা বাজারের শরবত, বিভিন্ন ফলের রস এগুলো খেয়ে অনেকেই ডায়রিয়া বা জন্ডিসে আক্রান্ত হন।
বাইরে থেকে আসার পর বা প্রচন্ড গরমে ফ্রিজের পানি গ্রহণ পরিহার করা: প্রচন্ড রোদে গরমে ঘুরে আসার পর ফ্রিজের অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি অথবা ঠান্ডা খাবার খাওয়া উচিত নয়। এতে খাওয়ার সময় আরাম হলেও শরীরের তাপমাত্রা তারতম্যের জন্য ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে। এতে করে শরীরে দীর্ঘমেয়াদে বড় ধরণের অসুখ হতে পারে।
হালকা রঙের সুতি ও ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করুন: নিজেকে সুস্থ রাখতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল আরামদায়ক পোশাক পরিধান করা। এই গরমে পরিধান করুন সুতি জাতীয় কাপড়ের পোশাক এবং পোশাকটি ঢিলেঢালা পরিধান করার চেষ্টা করুন, কেননা আঁটসাঁট বা গাঁয়ের সাথে লেগে থাকা পোশাকে গরম বেশি অনুভূত হয়। গাঢ় রঙ সূর্যের তাপ বেশি শোষণ করে বিধায় গাঢ় রঙের পোশাকে গরম বেশি লাগে এবং বেশি ঘাম হয়। ফলে শরীর থেকে বেশি পানি বের হয়ে যায়। তাই এই প্রচন্ড গরমে সুস্থতা বজায় রাখতে ব্যবহার করুন হালকা রঙের পোশাক।
সুস্থ দেহ সুস্থ মন- মেধাবী জাতি বির্নিমান: সামান্য কিছু নিয়ম মেনে চললে নিজে যেমন সুস্থ থাকা যায় ঠিক তেমনি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও সুস্থ রাখা সম্ভব। অসুস্থ হলে যেমন নিজে কষ্ট ভোগ করে থাকেন অপরদিকে পরিবার পরিজনগণও কষ্টে থাকেন,এছাড়াও সুস্থ হয়ে উঠতে অনেক অর্থের প্রয়োজন হয়। আবার সামান্য অসুস্থতায় অনেকে মৃত্যুবরণ করে থাকেন। সব মিলে অসুস্থতা মানেই নিজের ক্ষতি, পরিবারের ক্ষতি, দেশের ক্ষতি। তাই এই প্রচন্ড গরমে সুস্থতা বজায় রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলুন। স্বাস্থ্যসম্মত, সুস্থ, সুন্দর ও সুখী জীবন আমাদের সকলের একান্ত কাম্য। নিজে ভালো থাকুন এবং নিজের পরিবারকে ভালো রাখুন। সুস্থ দেহ, সুস্থ মন- থাকুক সর্বক্ষণ।