সিলেট সংবাদদাতা : বাংলাদেশে অধিক বিপদজনক বালাইনাশকের ব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব এবং সেসবের কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব বিকল্প ব্যবহারের ওপর সিলেট অঞ্চলে এক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘পেস্টিসাইড রিস্ক রিডাকশন ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায়, গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফেসিলিটির (GEF) অর্থায়নে, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (FAO) কারিগরি সহায়তায় এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ-এর কীটতত্ত্ব বিভাগের উদ্যোগে আজ (১ জুন) এই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
সিলেট অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে আয়োজিত এই কর্মশালায় মোট ১০০ জন উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।
প্রশিক্ষণে আলোচনা করা হয়—বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যবহৃত বালাইনাশকের অবস্থা, বিভিন্ন পোকামাকড় বা বালাই দমনে বালাইনাশক নির্বাচনের মৌলিক নীতিমালা, দেশে ব্যবহৃত অধিক বিপদজনক বালাইনাশকের সংখ্যা, এসব রাসায়নিকের কারণে মানুষের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব, এই বিপদজনক বালাইনাশকের পরিবেশবান্ধব বিকল্পসমূহ এবং মাঠ পর্যায়ে সেগুলোর ব্যবস্থাপনায় কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির পন্থা।
প্রশিক্ষণ চলাকালে অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তারা তাদের মাঠ পর্যায়ের বাস্তব অভিজ্ঞতা ও চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন। তারা জানান, এতদিন পর্যন্ত দেশে ব্যবহৃত কতগুলি অধিক বিপদজনক বালাইনাশক রয়েছে এবং কী কী বিকল্প রয়েছে—তা সম্পর্কে তাদের পরিষ্কার ধারণা ছিল না। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা এসব বিষয়ে বিস্তারিত ও কার্যকর জ্ঞান লাভ করেছেন।
বিশেষ করে তারা অধিক বিপদজনক বালাইনাশকের সুনির্দিষ্ট সংখ্যা, মাঠে ব্যবহারের প্রকৃতি, স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর সরাসরি প্রভাব, একাধিক বালাইনাশকের মিশ্রণ বা ককটেল ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক, কার্যকর বালাই দমনে স্প্রে ড্রপলেটের গুরুত্ব এবং উত্তম কৃষি পরিচর্যার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করেন।
তারা বলেন, এ ধরনের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ তারা এর আগে কখনো পাননি এবং এক দিনের পরিবর্তে দীর্ঘ সময়ের প্রশিক্ষণের দাবি জানান যেন আরও বিস্তারিতভাবে জ্ঞান অর্জন করা যায়।
প্রশিক্ষণের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সিলেট অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো: মোশাররফ হোসেন। প্রশিক্ষণ প্রদান করেন প্রকল্পের টিম লিডার এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. গোপাল দাস।
এছাড়াও প্রশিক্ষণ প্রদান করেন অধ্যাপক ড. মো: রমিজউদ্দিন, প্রফেসর ড. মো. মাহবুবুর রহমান এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সিলেট অঞ্চলের অন্যান্য অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা।
প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল বিতরণ করা হয়।