মো. গোলাম আরিফ (পাবনা) : ঈশ্বরদীর পদ্মা নদী তীরবর্তী শেখের চকে সফলভাবে চাষ করা হয়েছে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্পমেয়াদী বাদামের জাত বিনাচিনাবাদাম-৮। পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা এ জাতটির ফলন প্রত্যাশার চেয়ে বেশি, যা স্থানীয় কৃষকদের মাঝে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।
গত ২৮ মে ঈশ্বরদী উপজেলার শেখের চক এলাকায় বিনাচিনাবাদাম-৮ সম্পর্কে অবহিত করতে মাঠ দিবস আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিনা উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্পমেয়াদী বিনাচিনাবাদামের জাত বিনাচিনাবাদাম-৪, বিনাচিনাবাদাম-৪ এবং বিনাচিনাবাদাম-৮ এর সাথে বারি চিনাবাদাম-৮ জাতের প্রায়োগিক পরীক্ষণ মূল্যায়ন ও চাষাবাদ সম্প্রসারণ বিষয়ে আলোচনা হয়।
আলোচনায় বক্তারা জানান, এ বছর ঈশ্বরদী ও লালপুর পদ্মার চরে ২৫ একর জমিতে আবাদ হয়েছে। বিনাচিনাবাদাম-৪, ৬ ও ৮ জাতসমূহের সাথে বারি চিনাবাদাম-৮ এর প্রায়োগিক পরীক্ষণ করা হয়। স্বল্প সময়ে এবং স্বল্প খরচে এসব জাত থেকে ভালো ফলন পাওয়া যায়, যা কৃষকের আয় বাড়াতে সহায়ক হবে।
পরীক্ষণ প্লটে দেখা গেছে, বারি চিনাবাদাম-৮ এর তুলনায় বিনার জাতগুলোতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও ফলন উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। কৃষকদের উৎসাহিত করতে প্রদর্শনী প্লটে চাষ করা বিনাচিনাবাদামের ফলন, গাছের উচ্চতা ও পডের গুণমান সরেজমিনে দেখানো হয়। অংশগ্রহণকারী কৃষকেরা এই জাতের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং আগামী মৌসুমে বড় পরিসরে চাষাবাদে আগ্রহী হন।
এ সময় বাদাম চাষি আসাদুল ইসলাম ও হাবিবুর রহমান বলেন, এবার বিনাচিনাবাদাম ৪, ৬ ও ৮ এর পাশাপাশি বারি চিনাবাদাম-৮ চাষ করেছি বিনাচিনাবাদাম-৮ এর ফলন সবচেয়ে বেশী হবে। বিঘাপ্রতি ১২-১৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ফলন ৮/১০ মন হবে বলে আশা করছেন, এতে দ্বিগুন লাভ হবে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় অনেক কম খরচ হয়, কিন্তু ফলন অনেক ভালো। আগামী বছর আরও বেশি জমিতে এ বাদামের চাষ করার পরিকল্পনা করছি।
ঈশ্বরদী বিনা উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস ইকবাল এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালী যুক্ত ছিলেন বিনার মহাপরিচালক ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিনার গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মাহবুবুল আলম তরফদার, উপ-প্রকল্প পরিচালক ড. মোঃ আশিকুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা ধীমান তানভীর স্বাক্ষর। এছাড়াও অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তা, সাংবাদিক, প্রদর্শনীভূক্ত কৃষক-কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন।