Monday , May 12 2025

কাপ্তাই লেক দেশের সম্পদ, এটাকে রক্ষা করতে হবে  -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

রাঙ্গামাটি সংবাদদাতা : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, কাপ্তাই লেক দেশের সম্পদ, এই লেককে রক্ষা করতে হবে। এ জন্য সরকার যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

উপদেষ্টা আজ (১২মে) সকালে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্রের আয়োজনে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) মৎস্য অবতরণ ঘাটে কাপ্তাই হ্রদে পোনা অবমুক্তকরণ ও মৎস্যজীবীদের মাঝে ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে চাল বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ  উপদেষ্টা বলেন, “মাছ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে কেউ যেন মাছ না ধরতে পারে, সে জন্য নজরদারি বাড়ানো হবে। কিছু অসাধু জেলে ও ব্যবসায়ীরা নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে, সেটি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া, বন্ধের সময় ভিজিএফের আওতায় চালের পরিমাণ ২০ কেজি থেকে বাড়িয়ে ৪০ কেজি করা হবে।”

মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, কাপ্তাই লেকে এক সময় ৮৬ প্রজাতির নানা রকমের মাছ থাকলেও বর্তমানে তা কমে ৬৬ প্রজাতির মধ্যে চলে এসেছে। তাই মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে মৎস্য ব্যবসায়ীসহ জেলেদের আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, কাপ্তাই হ্রদে যে সমস্ত পর্যটক ঘুরে বেড়ান তারা বিভিন্নভাবে হ্রদে দূষণ করেন। জেলা পরিষদ এবং জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে উদ্যোগ নিলে ট্যুরিস্টদের সচেতন করতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, কাপ্তাই লেকের মাধ্যমে হাজার হাজার জেলে পরিবার, সাধারণ ব্যবসায়ীসহ এর সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকে তাদের জীবনজীবিকা নির্বাহ করছে। কাপ্তাই লেকে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি লেককে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-জেলেসহ সকলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়।

তিনি আরো বলেন, কাপ্তাই হ্রদে উৎপাদিত মাছ দিয়ে ব্যবসা করলে হবে না; মাছের প্রজনন বৃদ্ধি কীভাবে বাড়ানো যায় সেটার জন্য কাজ করতে হবে। সেজন্য মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং মৎস্য অধিদপ্তর যৌথভাবে কাজ করে তাহলে মানুষের উন্নতি এবং গবেষণা কাজ করা সহজ হবে।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সুরাইয়া আখতার জাহানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো: তোফাজ্জেল হোসেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) অনুপ কুমার চাকমা, রাঙ্গামাটি রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হক, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন, মৎস্যজীবী ব্যবসায়ীদের পক্ষে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মৎস্য ব্যবসায়ী মাহফুজ উদ্দিন।

 সরকারি-বেসরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্হানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, মৎস্যজীবী জেলেরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য: প্রতিবছর কার্পজাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও বংশ বৃদ্ধির জন্য কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কাপ্তাই হ্রদ থেকে প্রায় ৯ হাজার মেট্রিক টন মাছ আহরণ করে প্রায় ১৮ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে।

পরে উপদেষ্টা বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের নদী উপকেন্দ্র রাঙ্গামাটি পরিদর্শন এবং মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ কররন।

এসময় তিনি বলেন, বিএফআরআই এর মূল কাজ হলো হারিয়ে যাওয়া মাছ পুনরুদ্ধারে কাজ করা; আর এক্ষেত্রে ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তাদের আরো আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্রের সভাপতিত্বে আরো উপস্হিত ছিলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো: তোফাজ্জেল হোসেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) অনুপ কুমার চাকমা, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সুরাইয়া আখতার জাহান, বিএফআরআই এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

This post has already been read 21 times!

Check Also

সিভাসু ফিশ ফেস্টিভাল ২০২৫: মৎস্য জগতে নতুন সম্ভাবনার উৎসব

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ২৯ ও ৩০ এপ্রিল চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) ফিশারিজ …