Wednesday , June 18 2025

দ্রুত সহায়তা না দিলে হারিয়ে যাবে পোলট্রি সেক্টর

মো. সোহেল রানা : সময় এখন আমাদের পোল্ট্রি সেক্টরে সঠিক সহায়তা দরকার সরকার হতে, প্রান্তিক খামারিরা  এবং হ্যাচারি মালিকগন যেন তাদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারে।

গত ৪-৫ মাসে প্রান্তিক পর্যায়ে খামারিরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে, বিশেষ করে লেয়ার মুরগির খামারিরা বেশি হুমকির মুখে পড়েছেন। গত ২ মাস যাবৎ শুরু হয়েছে করোনার গুজব যা পোল্ট্রি ব্যবসায় আঘাত করেছে। যার ফলে সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে প্রান্তিক খামারিদের।

সরেজমিনে গিয়ে এমন খামার পাওয়া গেছে যে, নীরব ঘাতক ভাইরাসের প্রভাবে এক একটা খামারে ১০০% মৃত্যুহার হয়েছে। এর ফলে একদিকে তার ইনকাম বন্ধ হয়েছে অন্যদিকে ঋনের চাপে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ রকম সকল জেলায় কম বেশি রয়েছে। অন্যদিকে ডিমের দামও পড়তির দিকে।

প্রতিটি ডিম উৎপাদন খরচ প্রায় ৫ – ৫.৫০ টাকা। কিন্তু বর্তমান ডিমের মূল্য গড়ে ৪ টাকা। এভাবে চলতে থাকলে প্রান্তিক খামারিরা অচিরেই ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে যাবে। লেয়ার খামারিরা ইতিমধ্যে অসংখ্য খামার বন্ধ করে দিয়েছেন, যার প্রভাব পড়েছে হ্যাচারি ব্যবসায়।

প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির মাংসের উৎপাদন খরচ প্রায় ৯০-৯৫ টাকা, অথচ বর্তমানে ৬০-৭০ টাকা মূল্যে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি। অথচ আমাদের দেশে মাথাপিছু মোট মাংসের ৬০% আসে ব্রয়লার মুরগি থেকে। আমরা যারা এখন ব্রয়লার মুরগি খাচ্ছি না কিন্তু করোনার প্রভাব কেটে গেলে সেটিই হয়তো পাবোনা। যেভাবে চলছে তাতে করে চাহিদার সময় মাংসের ঘাটতি মেটানো কস্টকর হবে। কারণ, ৫০-৬০% প্রান্তিক খামার ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে এবং খামারিরা ১ দিনের বাচ্চা ক্রয় করছেন না।

যার ফলে দেশের পোলট্রি শিল্প কয়েকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। উৎপাদন হারাচ্ছি, পোল্ট্রি ব্যবসায়িরা পুঁজি হারাচ্ছে, চাহিদার তুলনায় যোগান কম হবে যার ফলে অচিরেই দাম বৃদ্ধি পাবে।

১ দিনের একটি ব্রয়লার বাচ্চার উৎপাদন খরচ প্রায় ২৫ টাকা, সেখানে বিক্রি হচ্ছে ১-২ টাকায় প্রতিটি বাচ্চা, তাও আাবার ৩০-৪০% বাচ্চা বিক্রয় হচ্ছে বাকিতে। অবিক্রিত বাচ্চা মাটিতে পুঁতে মেরে ফেলতে হচ্ছে।

অপরদিকে ১ দিনের একটি লেয়ার বাচ্চার উৎপাদন খরচ ২৭-৩০ টাকা, বিক্রি হচ্ছে ৮-১০ টাকায়, ৫০% বাচ্চা বিক্রয় হয় এবং বাকি বাচ্চা বাধ্য হয়ে বিনষ্ট করা হচ্ছে।

গড়ে প্রতি সপ্তাহে ১ কোটি উপরে ব্রয়লার বাচ্চা এবং ২০-২৫ লক্ষ লেয়ার বাচ্চা উৎপাদন হচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে কোটি কোটি টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে হ্যাচারি মালিকগন।

এই মূহুর্তে পোলট্রি সেক্টরে সঠিক ও দ্রুত সহায়তা প্রদান না করা হলে অচিরেই ধ্বংস হয়ে যাবে লাখ বেকার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী কৃষির অন্যতম বৃহৎ এ উপখাতটি।

লেখক: ব্যবস্থাপক, ডায়মন্ড চিকস্ লি.।

This post has already been read 9727 times!

Check Also

পোলট্রি শ্রমিকদের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মজুরি নির্ধারণ!

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের অন্যতম বড় কৃষিভিত্তিক খাত পোলট্রি শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের জন্য সরকার প্রথমবারের …