Friday 19th of April 2024
Home / ফসল / ধানের ঝুঁকি কমাতে হাওরে আগাম জাতে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে -কৃষিমন্ত্রী

ধানের ঝুঁকি কমাতে হাওরে আগাম জাতে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে -কৃষিমন্ত্রী

Published at এপ্রিল ২৫, ২০২১

মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ) : কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, হাওরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ধান হয়, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এ ধান খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, কোন কোন বছর আগাম বন্যার কারণে নষ্ট হয়ে যায়। এ ঝুঁকি কমাতে আমরা কাজ করছি। ১৫- ২০ দিন আগে পাকে এমন জাতের ধান চাষে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, শ্রমিক সংকটের কথা চিন্তা করে, দ্রুততার সাথে   ধান কাটার জন্য হাওরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার দেয়া হচ্ছে।

কৃষিমন্ত্রী রবিবার (২৫ এপ্রিল) কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার সাদরের হাওরে ‘বোরো ধান কর্তন উৎসব’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। মিঠামইন উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। পরে কৃষিমন্ত্রী ধান কাটার উদ্বোধন করেন ও ধান কাটার যন্ত্র ‘কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও রিপার’ কৃষকের মাঝে বিতরণ করেন।

কৃষকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন,  হাওরের বিস্তীর্ণ জমিতে বছরে মাত্র একটি ফসল বোরো ধান হয়। এ ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমাদের বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে উচ্চফলনশীল জাতের ধান যেমন ব্রিধান ৮৯, ৯২ উদ্ভাবন করেছে। আমরা আপনাদেরকে এসব উন্নত জাতের হাইব্রিড ধানের বীজ দিব। আপনার এগুলো চাষে এগিয়ে আসবেন।

তিনি আরও বলেন, হাওরে চাষযোগ্য জাতের ধানের জাত উদ্ভাবনের জন্য হাওরে ‘ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের’ আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলমান আছে।

কৃষিমন্ত্রী ড. রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কৃষি ও কৃষকবান্ধব। আজকে দিগন্তবিস্তৃত হাওরে সোনার ধানের যে অপরূপ হাসি দেখা যাচ্ছে, দেশের কৃষকের মুখেও সে রকম অমলিন হাসি ধরে রাখতে চায় সরকার। সেজন্য, সরকার কৃষিকে লাভবান ও কৃষকের জীবনমান উন্নত করতে অত্যন্ত উদারভাবে কৃষকদেরকে সার,বীজ,সেচসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে। উৎপাদন খরচ কমানো ও কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ত্বরান্বিত করতে ৭০% ভর্তুকিতে কম্বাইন হারভেস্টার, রিপারসহ বিভিন্ন যন্ত্র কৃষকদেরকে দিচ্ছে।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও রাষ্ট্রপতিপুত্র রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম, বিএডিসির চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আসাদুল্লাহ, ব্রির মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবীর, বারির মহাপরিচালক ড. নাজিরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কিশোরগঞ্জের উপপরিচালক  মো: ছাইফুল আলম, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহসভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সুইট প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

উল্লেখ্য, এ বছর কিশোরগঞ্জ জেলায় বোরো আবাদ হয়েছে এক লাখ ৬৬ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাওরে এক লাখ দুই হাজার ৫০০ হেক্টর ও নন- হাওরে ৬৪ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। এখন পর্যন্ত (২৪ এপ্রিল) হাওরের ৫৩% ও নন-হাওরের ৩৯% জমির ধান কর্তন হয়েছে। এবছর জেলায় সাত লাখ ১১ হাজার ৫৮০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

This post has already been read 3217 times!