Thursday 28th of March 2024
Home / ফসল / খুবির গবেষণায় সাফল্য: দেশী পেঁয়াজের উৎপাদন দ্বিগুণ করা সম্ভব

খুবির গবেষণায় সাফল্য: দেশী পেঁয়াজের উৎপাদন দ্বিগুণ করা সম্ভব

Published at এপ্রিল ১২, ২০২১

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : দেশে যে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় তার আকার ও ওজন কম। সাধারণভাবে গড় ওজন ২০-৫০ গ্রাম। ফলে সামগ্রিক উৎপাদন কম হয়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সয়েল, ওয়াটার এন্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিনের গবেষকরা মাটি, জৈব সার ও সেচ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফরিদপুরী দেশী জাতের পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধি নিয়ে একটি গবেষণা পরিচালনা করেন। সম্প্রতি এই গবেষণার কাজ শেষ হয়েছে। গত ৫ এপ্রিল গবেষণা মাঠের পেঁয়াজ উত্তোলন করে দেখা যায় আশানুরূপ ফলন হয়েছে। এই গবেষণা প্লটের গড় পেয়াজের আকার বড় এবং ওজন ৬০-১০০ গ্রাম পর্যন্ত। এই ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করে কৃষকরা পেঁয়াজ চাষ করলে বর্তমান পেঁয়াজের ফলন শতকরা ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি সম্ভব। এর ফলে দেশ পেঁয়াজ উৎপাদনে সয়ম্ভর, এমনকি উদ্বৃত্ত হতে পারে।

পেঁয়াজ চাষের গবেষক ছিলেন ঐ ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নিশান। এ ব্যাপারে গবেষণা প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক সয়েল, ওয়াটার এন্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিনের প্রফেসর মোঃ সানাউল ইসলাম জানান, আমাদের দেশে পেঁয়াজের চাহিদা বাৎসরিক ২৪ লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয় প্রায় ২৩ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন। পচনসহ ঘাটতি ধরা হয় সাড়ে ৭ লাখ মেট্রিক টন। মাটি, জৈব সার ও সেচ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দেশে উৎপাদন ১০ লাখ টন পর্যন্ত বৃদ্ধি সম্ভব।

এছাড়া একই জমিতে আগামী ও নাবি দু’জাতের পেঁয়াজ চাষ করলে ৪-৫ লাখ টন পেঁয়াজ অতিরিক্ত উৎপাদন সম্ভব। কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং চাষ পদ্ধতির উন্নতি করতে পারলে দেশ অচিরেই চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত পেঁয়াজ উৎপাদনে সক্ষম হতে পারে। তিনি আগামী বছর এই মৌসুমে উপকূলীয় লবণাক্ত বটিয়াঘাটা-দাকোপ এলাকাতে গবেষণা চালাবেন। তিনি আরও জানান, গবেষণা প্লটের মধ্যে মাটি, সার ও সেচ ব্যবস্থাপনা নেওয়ায় উৎপাদন হয়েছে হেক্টর প্রতি ১৫ টন। উৎপাদিত ৪০-৫০ শতাংশ পেঁয়াজের প্রতিটির গড় ওজন ছিলো ৭০-৯০ গ্রাম। তিনি জানান, ২৮ দিন বয়সের চারা ফরিদপুর থেকে এনে ১০ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা মাঠে লাগানো হয়। শুষ্ক মৌসুমে (এপ্রিল-মে) গবেষণা প্লটের লবণাক্ততার মাত্রা ছিলো ৪ ডেসিসিমেন্স/মিটার। প্লটের পেঁয়াজ উত্তোলন করা হয় গত ৫ এপ্রিল। ১৮টি পর্যবেক্ষণ প্লটে এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়। সঠিক চারা ও সারি ঘনত্ব, যথযাথ মাটি, সার ও সেচ ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করে আশাতীত ফলন পাওয়া সম্ভব হয়েছে।

This post has already been read 2641 times!