Friday 19th of April 2024
Home / আঞ্চলিক কৃষি / কৃষকের ৫ লাখ টাকা ঋণের ফসল কেটে সাবাড়: দিশেহারা পরিবার

কৃষকের ৫ লাখ টাকা ঋণের ফসল কেটে সাবাড়: দিশেহারা পরিবার

Published at মার্চ ১৮, ২০২১

মাহফুজুর রহমান, চাঁদপুর প্রতিনিধি: লাভের আশায় কৃষি ব্যাংক থেকে লোন সহ ধার-দেনা করে নিজের ১ একর ৬০ শতাংশ জমিতে বাঙ্গি চাষ করেছিলেন কৃষক আনোয়ার হোসেন মাল। এবার বাঙ্গির বাম্পার ফলন হলেও আর মাত্র কিছুদিন পর বাঙ্গি ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখছিলেন তিনি। সে স্বপ্ন যেন অঙ্কুরেই বিনষ্ট করে দিলো দূর্বূত্তরা। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষি পরিবার সহ খেটে খাওয়া মানুষগুলো।

প্রতিবারের মতো আলু, পেঁয়াজ, রসুন সহ নানান ফসলের সাথে এবছরেও বাঙ্গি আবাদ করেছিলেন চাঁদপুরের সীমান্তবর্তী এলাকা লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চর-আবাবিল ইউনিয়নের কৃষক আনোয়ার হোসেন। ১নং ওয়ার্ডের মালেগো বাড়ির মৃত খোরশেদ আলমের ছেলে তিনি।  বাঙ্গি ফসল রাতের আঁধারে সাবাড় করে দেয় দূর্বূত্তরা। এসময় তার জমিতে থাকা পেঁয়াজ গুলো তুলে নিয়ে যান অজ্ঞাত ঐ চক্রটি। ওই বিলের অধিকাংশ কৃষকের জমিতে বাঙ্গি আবাদ করা হলেও আনোয়ার হোসেন ছাড়া অন্যকেউ ক্ষতিগ্রস্থ হননি। এতে প্রায় ৫ লাখ টাকা ক্ষতির সম্মুক্ষীণ হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

আনোয়ার হোসেন মাল চোখে পানি ছেড়ে কান্নাঝড়া কন্ঠে বলেন, ‘এ বছর আমার ৭/৮ লাখ টাকার বাঙ্গি পাইতাম। এহন আমি কি করমু? আমি লোন কেমনে পরিশোধ করমু? আমার পরিবার কি খাইবো? আমার সাথে কার এমন শত্রুতা? আমার স্বপ্ন নষ্ঠ করে করলো, আমি এর সৃষ্টু বিচার চাই।

এ ঘটনায় এদিন সকালে রায়পুর থানায় সুষ্ঠ বিচারের দাবীতে একটি মামলা দায়ের করেছেন কৃষক আনোয়ার। এদিকে খবরটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা ছুটে আসেন। এ সময় স্থানীয় কৃষকরা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে আইন-শৃঙ্খলা অপরাধীকে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে এসে শাস্তির জোর দাবী জানান। একইসাথে উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতা কামনা করেন তারা। বিষয়টিকে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন রায়পুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল জলিল।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, ‘কৃষি বাঁচলে,বাঁচবে দেশ। যদি কৃষকের না থাকে নিরাপত্তা তাহলে ভবিষ্যতে বড় ধরণের আবাদ বন্ধ করে দিবেন কৃষকরা। এমন ঘটনা ঘটলে নিরাপত্তাহীণতায় আর চাষাবাদ করতে সাহস করবে না। ধার-দেনা আর কৃষিঋণের বোঝা বইতে না পেরে কৃষকের আত্নহত্যার ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। তাই অপরাধীদের বের করে আইনের আওতায় আনা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা জরুরি। আর এই ভাবে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকলে রাষ্ট্রের অর্থনীতি চাকায় আঘাত পড়বে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

This post has already been read 2342 times!