Friday 19th of April 2024
Home / অন্যান্য / শেখ হাসিনা বিস্ময়কর রাষ্ট্রনায়ক হওয়ায় আমরা ভালো আছি -শ ম রেজাউল করিম

শেখ হাসিনা বিস্ময়কর রাষ্ট্রনায়ক হওয়ায় আমরা ভালো আছি -শ ম রেজাউল করিম

Published at মার্চ ১১, ২০২১

খুলনা: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, “শেখ হাসিনা বিস্ময়কর রাষ্ট্রনায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ায় আমরা ভালো অবস্থায় আছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিদিন জাতিকে  জাগ্রত করে রাখেন। বাংলাদেশের বৈপ্লবিক পরিবর্তন এখন বিশ্বের বিস্ময়। তলাবিহীন ঝুড়ির তকমা লাগা বাংলাদেশ, দুর্নীতিতে তিনবার ধারাবাহিক চ্যাম্পিয়ন হওয়া বাংলাদেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ নামে বহির্বিশ্বে পরিচিত বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল বিশ্বে পদার্পন করেছে।”

বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ)  খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ূন কবীর বালু মিলনায়তনে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

খুলনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাসান আহম্মেদ মোল্লার সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম জাহিদ হোসেন। এছাড়া খুলনা প্রেসক্লাবের বর্তমান ও প্রাক্তন নেতৃবৃন্দ সভায় বক্তব্য প্রদান করেন।

দেশের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে এসময় মন্ত্রী বলেন, “দেশে আজ অন্নের অভাবে লঙ্গরখানা খুলতে হয় না। কাউকে বস্ত্রের অভাবে থাকতে হয় না। সরকার নয় লক্ষ গৃহহীন কে বাসস্থান দেয়ার পরিকল্পনা করেছে যার মধ্যে ৭০ হাজারকে বাসস্থান দেয়া হয়েছে। পৃথিবীর আর কোন দেশ গৃহহীনদের জন্য সরকারিভাবে বিনা পয়সায় শতভাগ গৃহ দেয়ার পরিকল্পনা করতে পারেনি। সেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার করছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের বই প্রদানের পাশাপাশি উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। পৃথিবীর প্রায় ১৩০টি দেশে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন পৌঁছেনি। অথচ বাংলাদেশের গ্রামেও ভ্যাকসিন পৌঁছে গেছে। আমাদের মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যুর হার কমেছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে এবং গড় আয়ু বেড়েছে। এভাবে আমাদের দেশটা অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। সংবিধানে উল্লিখিত নাগরিকদের প্রতিটি মৌলিক অধিকার এখন নিশ্চিত হচ্ছে।”

বিচারহীনতার সংস্কৃতির প্রাসঙ্গিকতায় মন্ত্রী এ সময় বলেন, “১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর জেলখানার গেট খুলে দিয়ে প্রায় ৩৭ হাজার যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। এদের কারো জেল হয়েছিল, কারো বিচার চলছিল। পরবর্তীতে এদেশে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জিয়াউর রহমান সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির সুযোগ করে দিয়েছিলেন। আর এভাবেই সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী বাংলাদেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সকে আইনে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করা যাবে না এমন নিকৃষ্টতম আইন বাংলাদেশে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান করে গিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে দৃঢ়চেতা মানসিকতা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের, জেল হত্যার, যুদ্ধাপরাধীদের, নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের বিচারসহ বড় বড় হত্যাকাণ্ডের বিচার করেছেন। এমনকি ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের দুর্নীতির দায়ে কারাদণ্ড হয়েছে। শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন যিনি দুর্নীতি করবেন তার কোনো দলীয় পরিচয় নেই। দুর্নীতি করলে কেউ ছাড় পাবে না।”

দেশকে স্থিতিশীল রাখতে ও উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে সাংবাদিকদের ভূমিকা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “আপনারা উন্নয়নের কথা বলুন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলুন। স্বাধীনতাবিরোধীদের সম্পর্কে জাতিকে জাগ্রত করে তুলুন। আর যারা যেনোতেনো উপায়ে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র করে তাদের বিষয়ে মানুষকে সজাগ করে তুলুন। আমাদের মধ্যে কেউ দুর্নীতি করলেও সামনে নিয়ে আসুন।”

গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয় উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, “গণমাধ্যম এখন অনেক সজাগ ও সক্রিয়। যদিও গণমাধ্যমকর্মীদের অনেক ক্ষেত্রে জীবনের ঝুঁকি আছে। বিশেষ করে মফস্বল সাংবাদিকদের অনেক বেদনার অধ্যায় আছে। তারা সবসময় যেমন জীবনের নিরাপত্তা পান না তেমনি অনেক সময় আর্থিক সুবিধাও পান না। তবে অনেক ক্ষেত্রেই ভুঁইফোড় সাংবাদিকদের কারণে প্রকৃত সাংবাদিকদের বদনামের শিকার হন। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।”

এ সময় খুলনা প্রেসক্লাবের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন মন্ত্রী। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে খুলনায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে সাধ্যমত সকল ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসও দেন তিনি।

This post has already been read 2227 times!