Thursday 28th of March 2024
Home / আঞ্চলিক কৃষি / খুলনার হাট-বাজারে অস্বাভাবিক হারে কমেছে শীতকালীন সবজির দাম

খুলনার হাট-বাজারে অস্বাভাবিক হারে কমেছে শীতকালীন সবজির দাম

Published at ডিসেম্বর ২১, ২০২০

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : খুলনার চলতি মৌসুমে কৃষিবিভাগের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বিভিন্ন উপজেলায় ব্যাপক উৎপাদন হয়েছে শীতকালীন সবজির। প্রথম দিকে চাষিরা কিছুটা ন্যায্যমূল্য পেলেও বর্তমানে পানির দরে বিক্রি করতে হচ্ছে সবজি।  পাইকারী বাজারে অস্বাভাবিক হারে কমেছে সবরকম সবজির দাম। এতে করে লোকসানে হতাশ হয়ে পড়ছেন জেলার প্রান্তিক সবজি চাষিরা। এদিকে, দর কমার কারণে উৎপাদন খরচ মিলছে না বলে অভিযোগ কৃষকদের। প্রতিদিন ভোরের আলো বাড়ার সাথে ক্রেতা বিক্রেতার হাঁকডাকে সবজির পাইকারি বেচাকেনা জমে উঠে  ডুমুরিয়াসহ বিভিন্ন উপজেলার কাঁচা তরিতরকারী হাটে। সরবরাহ বাড়ায় সব ধরনের শীতের সবজির দর কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত মে কিনছেন বেপারীরা। তবে বাজারে শীতকালীন শাক-সবজির দাম কমলেও হঠাৎ করে বেড়ে গেছে কাঁচা মরিচের দাম। সবজির সরবরাহ এত বেশি যে এক মাস আগের এক কেজি ফুলকপির দামে এখন কয়েক কেজি তরকারি কিনতে পারছেন ক্রেতারা। এদিকে দেশি নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসায় পেঁয়াজের দাম ক্রেতা সাধারণের অনেকটা নাগালে চলে এসেছে। নতুন আলুর দাম রয়েছে স্থীতিশীল। তবে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারে ক্রেতা সংকট রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা গেছে, বাজারে এখন ফুল কপি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়। শীতকালের এই সবজিটি শুরুতে সবার আগ্রহের কেন্দ্রে অবস্থান করলেও এখন তা আগ্রহ হারিয়েছে। শুরুতে এর দাম ছিল ১২০ টাকা কেজি। এখন ১৫ টাকাতেও কেউ কিনতে চাচ্ছেন না। এছাড়া বিটকপি বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা থেকে ১৩টাকায়, শিম ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ১৫-২০ টাকা, লাউ পিস হিসেবে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, মূলা ১৫ টাকা, কুশি ৩০ টাকা, ঝিঙে ৩০ টাকা, বেগুন ২০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা ও কচুর মুখি ৪০ টাকা।

নগরীর নিরালা এলাকার খুচরা কাঁচামাল বিক্রেতা সাইদ খোকন জানান, এক সপ্তাহ আগেও এসব নিত্যপণ্যের দাম ছিল বর্তমানের দ্বিগুণেরও বেশি। সেসময় শীতকালীন সবজির সরবরাহ চাহিদার তুলনায় কম থাকায় দাম এত বেশি ছিল। কিন্তু এখন চাহিদা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সবজির দাম এখন পানির দামের চেয়েও কমে গেছে। একই বাজারের বিক্রেতা জামিল হায়দার জানান, গত ২/৩ দিন ধরে শীতের প্রকোপ বেড়েছে। ফলে ক্রেতার সংখ্যা কমে গেছে বাজারে। তাই সবজির সরবরাহ বাড়লেও ক্রেতার অভাব দেখা দিয়েছে।

নগরীর ইকবাল নগর এলাকায় ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করেন আসলাম শেখ। তিনি বলেন, এখন সবজির প্রতি ক্রেতার যেন কোনো চাহিদা নেই। আগে সন্ধ্যায় ভ্যান ভরে তরকারি নিয়ে নামলে রাত ১০টার মধ্যে প্রায় সবই বিক্রি হয়ে যেত। কিন্তু এখন রাত ১০টায় আর রাস্তায় লোক খুঁজে পাওয়া যায় না। তরকারি অর্ধেক থেকে যায়। পিটিআই মোড়ে ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করেন গোলাম আলী। তিনি জানান, আগে যিনি ২-৩ কেজি সবজি নিতেন এখন তিনি নিচ্ছেন ১ থেকে দেড় কেজি। ফলে সবজির সরবরাহ বেশি থাকলেও বিক্রির পরিমাণ অর্ধেকে নেমে এসেছে।

নগরীর খালিশপুর চিত্রালী বাজারের সবজি বিক্রেতা দুলাল  জানান, বাজারে হঠাৎ কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। ৮০ টাকা কেজির মরিচ এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। কিন্তু তিনি দাম বৃদ্ধির সঠিক কোনো কারণ জানাতে পারেননি। এই বাজারে নিয়মিত নিত্যপণ্য কিনতে আসেন সাফায়াত হোসেন। তিনি জানান, সবজির দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকলেও হঠাৎ করে মরিচের দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে একেক সময় একেক পণ্যের দাম বাড়িয়ে সাধারণ ক্রেতাদেরকে বিপাকে ফেলছে।

This post has already been read 2435 times!