Thursday 25th of April 2024
Home / আঞ্চলিক কৃষি / নালিম চাষে লাভের মুখ দেখছেন দক্ষিণের কৃষকেরা

নালিম চাষে লাভের মুখ দেখছেন দক্ষিণের কৃষকেরা

Published at ডিসেম্বর ১৩, ২০২০

ফকির শহীদুল ইসলাম (খুলনা) : খুলনাঞ্চলে বাঙ্গি জাতীয় ফল নালিম চাষাবাদে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে অধিক মুনাফা পাওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরা এখন নালিম চাষের দিকে ঝুঁকছেন। কৃষি অফিস বলছে, বাণিজ্যিক মুনাফার কারণে কৃষকদের কাছে অন্যতম অর্থকরী ফসল হিসেবে গুরুত্ব পাচ্ছে নালিম ফল চাষাবাদ। মাত্র ৩০ দিনে প্রতিটি গাছ থেকে হাজার টাকা আয় হচ্ছে কৃষকদের।

ডুমুরিয়া উপজেলার শরাফপুর এলাকার মো. সারোয়ার হোসেন সরদার। গত বছর বেড়াতে গিয়ে সেখানে দেখেন এই নালিম। দেখে পছন্দ হলে, মাত্র ৪টি নালিম বীজ নিয়ে আসেন। বাড়িতে ফিরে সেই ৪টি বীজ বপন করেন তিনি। সেই গাছের ফল সংগ্রহ করে বীজ তৈরি করেন। চলতি ভাদ্র মাসে সেই বীজ মাদা করে রোপণ করেন। রোপণের মাত্র ২৮/৩০ দিনের মাথায় ফল বিক্রি শুরু করেন তিনি।

নালিম লাউ, কুমড়ার মতো লতা জাতীয় গাছ। গাছ মাচায় অথবা মাটিতে বিছিয়ে থাকে। নালিমের রঙ বাঙ্গির মতো। কাঁচা অবস্থায় এটি সবুজ কিন্তু পাকলে গাঢ় হলুদ ও ব্যাপক সুগন্ধি হয়। এছাড়া ফলটি চিনিমুক্ত স্বাদ বাঙ্গির মতই। নালিম ফলের আকারটা একটু ছোট ও গোলাকার। প্রতিটি ফল ৩ থেকে সাড়ে ৪ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রায় ৩ মাসের জীবনকাল থাকায় খুব অল্প সময়ে কৃষকরা এটি বিক্রির মাধ্যমে নগদ অর্থ ঘরে তুলতে পারে। আবাদ পদ্ধতি বাঙ্গির মতোই।

শরাফপুর এলাকার কৃষক মো. সারোয়ার হোসেন সরদার জানান, এ বছর ঘেরের আইলে এবং বসতবাড়ির আঙিনায় প্রায় ৫০টি বীজ বুনি। কিন্তু গোড়ায় পানি জমে যাওয়ায় কিছু গাছ মরে যায়। এরই মধ্যে ৫০টির বেশি ফল বিক্রি করেছি। প্রতিটি নালিম বিক্রি করেছি ৩০ থেকে ৫০ টাকায়। নালিম চাষাবাদে পরিচর্যা তেমন লাগে না। লবণাক্ত জমিতেও এর চাষাবাদ করা যায়। আমি নালিমের মাদায় জৈব সার ব্যবহার করেছি।

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোসাদ্দেক হোসেন জানান, নালিম একটি উচ্চমূল্যের ফসল। ডুমুরিয়ার আবহাওয়া নালিম চাষের জন্য অনুকুল। ডুমুরিয়ার ঘেরের আইলে সবজির পাশাপাশি এটা চাষ করলে কৃষক অত্যন্ত লাভবান হবেন। এটি সম্প্রসারণে আমরা কাজ করবো এবং আগামীতে এর আবাদ এলাকা আরও বৃদ্ধি পাবে।

খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পঙ্কজ কান্তি মজুমদার জানান, নালিম বাঙ্গির অনুরূপ একটি ফল। এটির বাণিজ্যিক গুরুত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভবিষ্যতে এটির চাষ আরও বাড়বে। আমরা সে লক্ষ্যে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। বাঙ্গির বিকল্প ফল হিসেবে নালিম মানুষের কাছে জনপ্রিয়। নালিম খেলে শরীর ঠান্ডা ও সতেজ হয়। বাণিজ্যিক মুনাফার কারণে জেলার কৃষকদের কাছে অন্যতম অর্থকরী ফসল হিসেবে গুরুত্ব পেতে শুরু করেছে নালিম চাষাবাদ।

This post has already been read 2714 times!