Thursday 28th of March 2024
Home / অন্যান্য / স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বরাবর ক্যাব’র স্মারকলিপি প্রদান

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বরাবর ক্যাব’র স্মারকলিপি প্রদান

Published at এপ্রিল ২৯, ২০১৯

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা: চট্টগ্রাম ওয়াসা চট্টগ্রাম অঞ্চলে রাষ্ট্রীয় খাতের সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হলেও পরিচালনা পর্ষদে সিংহ ভাগই দেশের শীর্ষস্থানীয় পেশাজীবী প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি এবং উর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা। ভোক্তাদের নামে একজন প্রতিনিধি থাকলেও তার মনোনয়ন নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ড গঠনের পর থেকে এক ব্যক্তি পরিচালনা পর্ষদে ভোক্তাদের নামে প্রতিনিধিত্ব করছেন। যিনি পর পর দুবার প্রতিনিধিত্ব করে অনেক আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ। নির্দিষ্ট মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার পরও তিনি কিভাবে ওয়াসা বোর্ডে বহাল আছেন তাও বড় প্রশ্ন? ভোক্তা প্রতিনিধি হিসেবে যিনি চট্টগ্রাম ওয়াসার বোর্ডে প্রতিনিধিত্ব করছেন তাঁর সাথে চট্টগ্রামের ভোক্তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি একটি রাজনৈতিক দলের নেতা ও ব্যবসায়ী। তাঁর বিগত দিনের কর্মকান্ড পর্যালোচনায় দেখা যায় তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালকের প্রতিনিধি হিসাবে তাঁর স্বার্থরক্ষায় সচেষ্ট ছিলেন।

সরকার ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ প্রণয়ন করেছেন। যেখানে ধারা নং ৫ এর ১৬ উপ-ধারায় বলা আছে, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) দেশের সর্বত্র ভোক্তাদের প্রতিনিধিত্ব করবেন। আর তারই ধারাহিকতায় ক্যাব সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ভোক্তা র্স্বাথ সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারণী ও কমিটিগুলিতে প্রতিনিধিত্ব করে আসলেও চট্টগ্রাম ওয়াসায় তা মানা হয়নি। তাই চট্টগ্রাম ওয়াসায় ভোক্তাদের সত্যিকারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণকারী জাতীয় প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) নেতৃবৃন্দ।

২৯ এপ্রিল ২০১৯ইং চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে দাখিলকৃত স্মারকলিপিতে উপরোক্ত দাবি জানানো হয়। স্মারকলিপিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের প্রতি সবসময় সদয়। তিনি চট্টগ্রাম ওয়াসার জন্য ইতিমধ্যেই বিপুল বরাদ্ধ দিয়েছেন। এই বরাদ্ধ নগরবাসীর জন্য আশীর্বাদ হওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও অদক্ষতায় জনভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে স্থানীয়-জাতীয় পত্র পত্রিকা ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রতিনিদিনই সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে। ভোক্তাদের সমস্যা ও ভোগান্তি তুলে ধরার জন্য সরকার ওয়াসা পরিচালনা পর্ষদে ভোক্তা প্রতিনিধি রাখার বিধান রাখলেও ওয়াসা বোর্ড গঠনে ভোক্তা সংরক্ষণ আইন ২০০৯ অনুসরণ করা হয়নি। কারণ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে দেশের ভোক্তা প্রতিনিধি কারা হবেন তা পরিস্কার ভাবে উল্লেখ আছে। যার কারণে ভুক্তভোগীদের সমস্যা নীতি নির্ধাারনী মহলে জানানোর কোনো সুযোগ সেখানেই নেই। অধিকন্তু রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এ সমস্ত সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের ভোক্তা সদস্য/সদস্যা নিয়োগে নানা অনিয়ম পত্র পত্রিকায় বছর জুড়ে মূল শিরোনাম হলেও এ বিষয়ে তেমন প্রতিকার না হওয়ায় অবস্থার তেমন পরিবর্তন হয়েছে বলে প্রতিয়মান নয়। নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটি মহল পূনরায় ব্যক্তি বিশেষের পছন্দে ভুমিদস্যু ও কতিপয় কর্তার লেজুড় ঠিকাদারকে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য নিয়োগের জন্য একটি মহল তৎপর রয়েছে। যা উদ্বেগজনক ও অনাকাঙ্খিত। সত্যিকার অর্থে রাষ্ট্রীয় সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে ভোক্তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত না হওয়ায় যারাই পরিচালনা পর্ষদে নিয়োগ পান তারাই লুটপাটের হাতিয়ার হিসাবে এটাকে ব্যবহার করে থাকেন এবং বিভিন্ন স্বার্থন্বেষী মহলের স্বার্থ হাসিলে ব্যস্ত থাকেন।

অন্যদিকে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে ভোক্তাদের সত্যিকারের প্রতিনিধিত্ব না থাকায় ভোক্তাদের ভোগান্তি, হয়রানি, সেবা পাবার প্রতিবন্ধকতা দুরীভূত করা, প্রতিকার পাবার সুযোগ ও ভোক্তা অধিকার হরণের বিষয়ে কার্যকরী কোনো উদ্যোগ গ্রহণে প্রতিষ্ঠানগুলো পুরোপুরি ব্যর্থতায় পর্যবশিত হয়। ফলে সরকারের অনেক যুগান্তকারী উদ্যোগ ও বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা হলেও সফলতার মুখ দেখে না। তাই রাষ্ট্রায়তত্ত্ব সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে ভোক্তাদের অধিকার, প্রতিনিধিত্ব ও সেবা নিশ্চিত করতে এবং ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ আইন ২০০৯ অনুযায়ী কনজুম্যারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) মনোনীত প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশনা প্রদানের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর সহায়তা কামনা করা হয়। চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসেন এর হাতে স্মারকলিপি হস্তান্তর কালে উপস্থিত ছিলেন, ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসসিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু সহ আরো অনেকে।

This post has already been read 1547 times!