Thursday 25th of April 2024
Home / অন্যান্য / হল কৃষির উদ্যোক্তা পবিপ্রবি’র সোহানের গল্প

হল কৃষির উদ্যোক্তা পবিপ্রবি’র সোহানের গল্প

Published at মে ১৭, ২০১৮

ইফরান আল রাফি (পবিপ্রবি): পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. কেরামত আলী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. সোহানুর রহমান সোহান হল কৃষি’র যাএা শুরু করেছেন। দেশের প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবাসিক হলগুলোতে শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে টপে সৌন্দর্য বর্ধনশীল গাছ রোপন করলে যেমন হলগুলোর পরিবেশ সুন্দর হয় তেমনিভাবে শিক্ষার্থীরা পায় নান্দনিক তুষ্টি। বর্তমানে বহুতল হলগুলোতে আধুনিক সকল সুবিধা থাকলেও সৌন্দর্য বর্ধনশীল বৃক্ষরাজি তেমন একটা নজরে পড়েনা।

বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলায় জন্ম সোহানের ছোটবেলা থেকেই বৃক্ষরাজির প্রতি গভীর ভালোবাসা। একাডেমিক পড়াশুনার পাশাপাশি অবসর সময়ে গাছগুলোর যত্ন করেন তিনি। ছোট, মাঝারি ও বড়সহ রয়েছে মোট ১১৫ টি টপ। এখানে রয়েছে ক্যাকটাস, ড্রাগন, লালসালু, টাইমফুল, গোলাপ, পাম, লেমন ঘাস, হাসনাহেনা, রিওডিসকোলার, জবা, তুলসিসহ বিভিন্ন সৌন্দর্য বর্ধনশীল উদ্ভিদ যার মধ্যে রয়েছে ক্যাকটাসের ৮ টি প্রজাতি। উল্লেখ্য এ হল কৃষি’তে রয়েছে ৬ টি বটের বিভিন্ন সাইজের বনসাই এবং কিছু তুলসির বনসাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কিছুদিন পর থেকেই মূলত এ কাজ শুরু করেন বলে এগ্রিনিউজ২৪.কম কে জানান সোহান। সোহান জানান, আমাকে মাষ্টার্সের এক ভাই (নিয়াত মোর্শেদ), উনি প্রথমে একটা ক্যাকটাসের চারা দিয়েছিল এরপর থেকেই আমি নিজস্ব উদ্যেগে এটাকে সম্প্রসারণ করতে থাকি।

মূলত অপরিত্যক্ত কৌটা বা বোতল দিয়েই টপ তৈরি করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্ম বা ফিল্ড থেকে মাটি সংগ্রহ করি এবং মাটির সাথে মূলত জৈব সার মেশানো হয়। কোন রাসায়নিক সার ব্যবহার করিনা এবং তেমন কোন বালাইনাশকেরও প্রয়োজন হয়না। গাছগুলো প্রথম দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টার ও স্থানীয় হর্টিকালচার সেন্টার থেকে সংগ্রহ করেছি। এখন আমি কার্টিং এর মাধ্যমেই বংশ বৃদ্ধি করাই-বলছিলেন সোহান।

খরচ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তেমন বেশী খরচ হয়না যেহেতু অপরিত্যক্ত জিনিস থেকেই টপ তৈরী করা হয়। রাসায়নিক সারের ব্যবহার নেই বলে খরচও কম হয়। হল কৃষি নিয়ে কাজ করতে চাইলে প্রথমত আগ্রহ থাকতে হবে, হল কৃষি’র ফলে ব্যক্তি যেমন উপকৃত হবে তেমনি পুরো হলের সবাই উপকৃত হবে।

এ সম্পর্কে অত্র হলের প্রভোস্ট ও কৃষিতও্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. গোপাল সাহা বলেন, আমার হলের ছাত্রের এই উদ্যোগে আমি খুবই আনন্দিত এবং এর ফলে হল যেমন পরিচ্ছন্ন থাকে তেমনিভাবে শিক্ষার্থীরা মনোতুষ্টি পায়। শুভ কামনা রইল যাতে এই উদ্যোগ  আরও বৃদ্ধি পায়।

সোহানের এই কাজে সাহায্য সহযোগীতা করেন তারই বন্ধু কৃষি অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জুগল, ইমরান, রেজা সহ আরও অনেকে। ইতোমধ্যে অত্র হলের অনেকেই তার থেকে অনুপ্রাণীত হয়ে হল কৃষি শুরু করেছেন বিশেষ করে আল-আমিন, বায়জিদ, মোমিনুল, বিবেক, মিনহাজ, হুমায়ুন কবির, নাজমুল, ইমরান সহ অনেকেই।

This post has already been read 4679 times!