Friday 19th of April 2024
Home / অন্যান্য / স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে রুখে দাঁড়াতে হবে

স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে রুখে দাঁড়াতে হবে

Published at এপ্রিল ৬, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি।

গতকাল সোমবার (০৫ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর বেইলী রোডের সরকারি বাসভবন থেকে জার্মান আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘ইসলামে উগ্রবাদের স্থান নেই, ধর্ম ব্যবসায়ীদের প্রতিহত করুন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

এ সময় তিনি বলেন, ‘১৯৪৭ সালে দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভুলভাবে সৃষ্ট রাষ্ট্রের মৃত্যুবীজ অঙ্কুরেই বপন হয়েছিল। ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে কোন রাষ্ট্রব্যবস্থা যে স্থায়ী হতে পারে না, তা সেসময় দ্রুত প্রমাণ হতে শুরু হয়েছিল। সে কারনে ভাষার ভিত্তিতে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের সকল মানুষের জন্য একক পরিচয় ‘বাঙালি’-তে রূপান্তর করেছিলেন। ধর্মভিত্তিক পরিচিতি সকল ধর্মাবলম্বীদের জন্য ঐক্যের পথে বড় বাধা বিবেচনা করে তিনি ‘আওয়ামী মুসলীম লীগ’ এর পরিবর্তে সকলের জন্য ‘আওয়ামী লীগ’ এর দ্বার উন্মুক্ত করে দেন। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে এক কাতারে নিয়ে এসে অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে প্রতিষ্ঠা করেন। পাকিস্তানিরা ধর্ম ব্যবহার করে অধার্মিক ও শোষণের কাজ করে আসছিল, তা বাঙালিদের বোঝাতে সক্ষম হন বঙ্গবন্ধু। গোটা জাতিকে তিনি বাঙালি জাতীতাবাদের পরিচয়ে ঐক্যবদ্ধ করে পাকিস্তানিদের অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার করে তোলেন। এভাবে স্বাধীকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের মিছিলে সকলকে নিয়ে আসতে সক্ষম হন বঙ্গবন্ধু।”

শ ম রেজাউল করিম এ সময় আরো বলেন, “ ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে দীর্ঘ ধারাবাহিকতায় ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০ এর নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় এবং ’৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়েই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের উদ্ভব হয়। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আবার স্বনামে-বেনামে স্বাধীনতাবিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল চক্র প্রায় ২৫ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় নিয়ে যায়। পরে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ২১ বছর রাজপথে থাকা আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্র পরিচালনায় ফিরিয়ে এনে নতুন করে দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা করা শুরু করেন। তখনই আবার সক্রিয় হয়ে উঠে স্বাধীনতাবিরোধীরা। অন্তত ১৯ বার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা চালায় তারা। সর্বশেষ ২০০৪ সালে পাকিস্তানি এজেন্ট জঙ্গি জিন্দাল, হরকাতুল জিহাদ নেতা মাওলানা তাজউদদ্দিন ও তৎকালীন খালেদা জিয়া সরকার সরাসরি অংশগ্রহণ করে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করে।”

তিনি এসময় আরো যোগ করেন, “সাম্প্রদায়িক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হলেও দীর্ঘ ২৫ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা স্বাধীনতাবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তি যেভাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, সে জঞ্জাল সমূলে বিনাশ করা আজও সম্ভব হয় নি। সে কারণে কখনো হেফাজত, কখনো জামায়াত, কখনো ২০ দলীয় জোট-নানা নামে দেশে স্বাধীনতাবিরোধীদের কার্যক্রম দেখা যায়। তবে সরকার কঠিনভাবে তাদের মোকাবিলা করছে। সম্প্রীতির বাংলাদেশে কোনভাবেই স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান ঘটতে দেওয়া হবে না।”

এ সময় দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা সকল বাঙালিকে আরো তৎপরতার সাথে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির নিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

জার্মান আওয়ামী লীগের সভাপতি বসিরুল আলম সাবুর সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় সর্ব ইউরোপীয়ান আওয়ামী লীগ ও জার্মান আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা অনিল দাশ গুপ্ত, সর্ব ইউরোপীয়ান আওয়ামী লীগের সভাপতি এম. নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও বিশ্বের ৫০টির অধিক দেশের আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এ ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন।

This post has already been read 2357 times!