Thursday 28th of March 2024
Home / পরিবেশ ও জলবায়ু / বেড়িবাঁধ ভাঙার আতঙ্কে ডুমুরিয়ার পাঁচ হাজার মানুষ

বেড়িবাঁধ ভাঙার আতঙ্কে ডুমুরিয়ার পাঁচ হাজার মানুষ

Published at মার্চ ৩১, ২০২১

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : বাঁধ ভাঙার আতঙ্কে দিন কাটছে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বাগআচঁড়া ও বাদুরগাছা গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের। সোমবার (২৯ মার্চ) তেলিগাতি নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের ফলে আশপাশের এলাকা প্লাবিত হওয়ায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাদের।

স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে জোয়ারের পানির উচ্চতা বেড়ে যায়। দুর্বল হয়ে যাওয়া গ্রামরক্ষা বাঁধের কোনো কোনো স্থান ভেঙে যায়। আবার কোথাও কোথাও বাঁধের ওপর দিয়ে জোয়ারের পানি গ্রামে প্রবেশ করে।

উপজেলার শোভনা ইউনিয়নের বাগআঁচড়া ও বাদুরগাছা গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের বসতি। এ গ্রামের দুটি বিলে প্রায় তিন হাজার বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। বিলে রয়েছে ছোটবড় কয়েকশ মৎস্য ঘের। উপজেলার খর্ণিয়া বাজার, ডুমুরিয়া বাজার, কদমতলা বাজার, শিবপুর গ্রামসহ বেশকিছু এলাকায় চলতি পূর্ণিমা গোনে অস্বাভাবিক ভাবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে।

বাগআঁচড়া গ্রামের বাসিন্দা সুকান্ত সরদার বলেন, ‘প্রতি বছর আমাদের গ্রাম রক্ষা বাঁধ একটু একটু করে ভাঙতে ভাঙতে এখন মাত্র এক থেকে দেড় ফুট টিকে আছে। কিন্তু তার ওপর দিয়েই জোয়ারের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বাঁধের অধিকাংশ জায়গা দিয়ে এমন কি তলদেশ ছিদ্র হয়ে পানি প্রবেশ করে তলিয়ে যাচ্ছে বসত বাড়ি। কিরণ সরদার, বিকাশ মণ্ডল, প্রদীপ সরদার ও গৃহবধূ কবিতা রাণী জানান, গত রোববার (২৮ মার্চ) রাত থেকে পূর্ণিমার গোন শুরু হলে বাঁধ ভাঙতে শুরু করে। এরপর থেকে জোয়ার শুরু হলে বাঁধের পাশে বসবাসকারীদের নির্ঘুম রাত কাঁটছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য দেবব্রত সরকার বলেন, ‘ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামতের কাজ করছে স্থানীয়রা। গত অর্থ বছরে প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ টাকা সরকারি বরাদ্দে বাঁধের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা সংস্কার করা গেলেও বাদুরগাছা এলাকায় সংস্কার সম্ভব হয়নি।

শোভনা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সরদার আব্দুল গণি বলেন, ‘প্রতি বছর ফাল্গুন-চৈত্র-বৈশাখ মাসের অমাবস্যা ও পূর্ণিমার গোনে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পায়। সোমবার ও মঙ্গলবার দুপুরে জোয়ারে বাগআঁচড়া বাদুরগাছা এলাকার তেলিগাতি নদীর পানির তোড়ে বাঁধ ভেঙে যায়। স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে আপদকালীন পানি আটকাতে পারলেও চরম আতঙ্কে রয়েছেন। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘চলতি পূর্ণিমার গোনে নদ-নদীর জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে দেড় থেকে দুই ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। যে কারণে কোনো কোনো স্থানে বাঁধের উপর দিয়ে জোয়ারের পানি উপচে পড়ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাঁধ মেরামত করে উচ্চতা বৃদ্ধি করা হবে।

This post has already been read 3341 times!