Saturday 20th of April 2024
Home / চাকুরি/ ক্যারিয়ার / “ফোয়াব সম্মাননা ২০২২” পেলেন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান

“ফোয়াব সম্মাননা ২০২২” পেলেন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান

Published at জানুয়ারি ২২, ২০২২

গ্রীনলাইফ বায়ো সাইন্স -এর প্রধান নির্বাহী ও বাপকা সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান এর হাতে ‘ফোয়াব সম্মাননা ২০২২’ তুলে দিচ্ছেন প্রধান অতিথি এসিআই এগ্রিবিজনেস ডিভিশন -এর প্রেসিডেন্ট ড. এফএইচ আনসারী।

নিজস্ব প্রতিবেদক: বটম ক্লিন রেসওয়ে পদ্ধতিতে মাছ চাষ উদ্ভাবন এবং দেশের মৎস্য চাষে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ‘ফোয়াব সম্মাননা ২০২২’ প্রাপ্ত হয়েছেন গ্রীনলাইফ বায়ো সাইন্স -এর প্রধান নির্বাহী ও বাপকা (BAPCA) সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান।

শনিবার (২২ জানুয়ারি) রাজধানীর বিএমএ মিলনায়তনে “জাতীয় মৎস্য কংগ্রেস ও FOAB সম্মাননা ২০২২” শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এসিআই এগ্রিবিজনেস ডিভিশন -এর প্রেসিডেন্ট ড. এফএইচ আনসারী তাঁর হাতে উক্ত পুরস্কার তুলে দেন। ফিসফার্ম ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (FOAB) উক্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মৎস্য চাষ ও উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখার জন্য  মৎস্য সম্প্রসারণ ও গবেষণায় ৩ জন, মৎস্য সাংবাদিকতায় ২ জন ও  সফল মৎস্য উদ্যোক্তায় ৪ জনকে FOAB সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানের কারিগরি সহযোগি হিসেবে ছিল মৎস্য অধিদপ্তর ও ফিসারিজ প্রোডাক্ট বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (এফপিবিপিসি), বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বিশিষ্ট মৎস্যবিদ, সীফুড হ্যাচাপ ও গ্যাপ বিশেষজ্ঞ, ডিপ সী ফিসার্স লিমিটেড (র‌্যাংগস গ্রুপ) -এর পরিচালক সৈয়দ ইশতিয়াক -এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মৎস্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক এবং সিনিয়র মেরিন এডভাইজর (ডব্লিউসিএস) ড. সৈয়দ আরিফ আজাদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা খন্দকার হাবিবুর রহমান।  আলোচক হিসেবে ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের সাবেক কাঁকড়া ও কুচিয়া প্রকল্প পরিচালক ড. বিনয় কুমার চক্রবর্তী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মৎস্য উন্নয়ন ও সমবায় ব্যাক্তিত্ব, ফোয়াব প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোল্লা শামসুর রহমান শাহীন।

বটম ক্লিন রেসওয়ে পদ্ধতিতে সম্পর্কে এগ্রিনিউজ২৪.কম কে মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন,  কর্মজীবনে সবসময় পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে উৎপাদনের প্রতি আমি অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি, তার সাথে সাথে আধুনিক বিশ্বের পরিবেশবান্ধব নতুন নতুন প্রযুক্তিগুলোর দিকেও আমার নিয়মিত অনুসন্ধান অব্যাহত ছিলো এবং আছে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে থাইল্যান্ডে অ্যাকোয়া বায়েমিমিক্রি অর্থাৎ অর্গানিক ফিস ফার্মিং একটি ট্রেনিং প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করি আর সেখান থেকেই বটম ক্লিন রেসওয়ে পদ্ধতিতে মাছ চাষের উপর একটি ধারণা আসে।

তিনি বলেন, মাছ চাষে প্রথম এবং প্রধান সমস্যা হচ্ছে একটি পুকুরে মাছের বিষ্টা, পুকুরের অতিরিক্ত খাদ্য, ডেট প্লাংটন, অর্থাৎ পুকুরের তলদেশে যে সমস্ত জৈব বর্জ্য জমে সেগুলি পচে বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়, তাই পুকুরের তলদেশ থেকে এইগুলি তাৎক্ষণিকভাবে অপসারণ করতে পারলেই পুকুরের পানি মাটির পরিবেশ ভালো থাকে, তাই পুকুরের তলদেশে একটি সেন্ট্রাল পিট বা টয়লেট তৈরি করে এবং পুকুরের পানি ঘূর্ণন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তলদেশে সমস্ত ময়লা কেন্দ্রী করণের মাধ্যমে সেন্ট্রাল পিটৈ জমিয়ে মাঠ পাম্প এর মাধ্যমে সেটিকে বের করে দেয়া হয় এবং সারা পুকুরে ন্যানো বাবেল এয়ারেটর দিয়ে DO লেভেল বৃদ্ধি করিয়ে অধিক ঘনত্বে মাছ চাষ করা যায়।

তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে ২০১৯ সালে প্রথম আমার বন্ধু গোয়ালন্দ ফিশারিজের স্বত্বাধিকারী শেখ নিজাম এর সঙ্গে আলোচনা করি এবং সেই প্রথম বিনিয়োগ করার উদ্যোগ নেয়, এই পদ্ধতিতে একটি পুকুর তৈরি করতে স্থায়ী খরচ অনেক বেশি ও টেকসই এবং প্রথম বছরেই তার একটি পুকুর থেকে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা মুনাফা আসে, উল্লেখ্য যে বটম ক্লিন রেসওয়ে পদ্ধতিতে সাধারণ চাষ থেকে প্রায় ১০গুণ বেশি ঘনত্বের চাষ করা যায়, বর্তমানে বাংলাদেশে বাটন ক্লিন রেসওয়ে পদ্ধতিতে আমার প্রতিষ্ঠান গ্রীনলাইফ বায়ো সাইন্স এর তত্ত্বাবধায়নে পাঁচটি প্রকল্প চলমান।

উল্লেখ্য যে এই পদ্ধতিতে চাষের মাছ অধিক গুণগত মান সম্মত ও স্বাস্থ্যসম্মত হয়ে থাকে তাছাড়াও এই পদ্ধতিতে চাষকৃত মাসে কোনো দুর্গন্ধ থাকে না এবং খেতে প্রাকৃতিক নদীর মাছের মতো স্বাদ পাওয়া যায়,এই পদ্ধতিটি গুড একুয়াকালচার প্রাকটিস ( জিপিএ) প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যসম্মত প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত হয়, এখানে কোনো নিষিদ্ধ পণ্য ব্যবহার হয় না, শুধু প্রবায়টিকস ব্যবহার করা হয়, তাই এটি এক্সপোর্ট কোয়ালিটির মাছ” যোগ করেন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান।

উল্লেখ্য, মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান ১৯৯৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এমএসসি ফিশারিজ সম্পন্ন করেন। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে প্রয়াত শিক্ষক  ড. মিয়া মোহাম্মদ আব্দুল কুদ্দুস এর তত্বাবধায়নে এমফিল সম্পূর্ণ করেন এবং এ তাঁর পরামর্শে কক্সবাজার এডিবি হ্যাচারি ক্যাম্পাসে মৎস্য অধিদপ্তর এর তত্ত্বাবধানে বাগদা চিংড়ির পোনা উৎপাদনের উপর তিন মাসের ট্রেনিং কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। কক্সবাজারে বিভিন্ন হ্যাচারিতে প্রায় পাঁচ বছর চিংড়ির পোনা উৎপাদন ও সংশ্লিষ্ট গবেষণার উপর কাজ করার পর দুই বছর গলদা চিংড়ি হ্যাচারি তে চিংড়ি পোনা উৎপাদনের উপর কাজ করেন।

তিনি ২০০৭ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের মৎস্য ও চিংড়ি সেক্টরের উৎপাদনের সাথে সরাসরি থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে (কনসালটেন্সি)কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করে আসছেন।

This post has already been read 3862 times!