Wednesday 24th of April 2024
Home / ফসল / মূলার পোকামাকড় ও রোগ দমন ব্যবস্থাপনা

মূলার পোকামাকড় ও রোগ দমন ব্যবস্থাপনা

Published at আগস্ট ২৯, ২০২০

মো: এমদাদুল হক : জমিতে আগাম মূলার চাষ করা যেতে পারে। আগাম সবজি হিসেবে মূলার যথেষ্ট বাজার রয়েছে। তাছাড়াও বাজারে পেঁয়াজ ও শসার দাম বেশি থাকালে এদের বিকল্প সবজি হিসেবে মূলার ব্যবহার বেড়ে যায়। খরিপ মৌসুম শেষে এবং রবি মৌসুমের শুরুতে বাজারে তেমন কোন সবজি পাওয়া যায় না। এই সময়ে আগাম জাতের সবজির মধ্যে মূলা উন্নতম। এখন আগাম মুলা চাষের মাধ্যমে আমরা আর্থিক লাভবান হতে পারি। এখানে মূলার পোকামাকড়, রোগ বালাই ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে করণীয় আলোচনা করা হলো-

ফ্লি বিটল পোকা: এ পোকা দমনে কারটাপ জাতীয় কীটনাশক (যেমন কেয়ার ৫০ এসপি অথবা সানটাপ ৫০এসপি অথবা ফরাটাপ ২০মিলিলিটার) প্রতি ১০লিটার পানিতে  মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০-১২ দিন পরপর ২/৩ বার।

জাব পোকা দমনে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার /২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার।

মূলার বিছা পোকা দমনে এমামেক্টীন বেনজোয়েট জাতীয় কীটনাশক (যেমন: প্রোক্লেইম ১০ গ্রাম) অথবা সাইপারেমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন-রিপকর্ড ১০ তরল অথবা  সিমবুশ ১০ তরল  ২০ মিলিলিটার / ৪ মুখ)  প্রতি ১০ লিটার পানিতে  মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২ বার স্প্রে করতে হবে।

মূলার পাতার দাগ রোগ: এ রোগ দমনে কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন- নোইন অথবা এইমকোজিম ২০গ্রাম) অথবা সালফার জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন- কুমুলাস ৪০গ্রাম অথবা গেইভেট ২০গ্রাম) প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে ১২-১৫দিন পরপর ২-৩বার ভালভাবে স্প্রে করতে হবে।

মুলার গ্রে মোল্ড রোগ: এ রোগ দমনের জন্য কপারঅক্সিক্লোরাইট জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন- ডিলাইট ৫০ ডব্লিউপি অথবা গোল্ডটন ৫০ ডব্লিউপি ২০ গ্রাম)  প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে  ১২-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার ভালভাবে স্প্রে করতে হবে।

মুলার মোজাইক রোগ: এরোগ দমনে জমিতে সাদা মাছি দেখা গেলে (বাহক পোকা) ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয়  কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ১০ মি.লি.) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে। সকাল বেলা গাছে ছাই ছিটিয়ে দিলে এই পোকা গাছ থেকে পড়ে যাই।

সতর্কতা: বালাইনাশক/ কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ে এবং নির্দেশাবলি মেনে চলতে হবে। ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করতে হবে। ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবেনা। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখতে হবে। বালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল  কমপক্ষে ৭ থেকে ১৫দিন পর বাজারজাত করেতে হবে এবং খেতে হবে।

ফসল সংগ্রহ : বীজ বুনার ১৫-২০ দিন পর থেকে শাক এবং এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে মূলা খাওয়ার উপযোগী হয়। তাসাকীসান মূলা জমিতে ২ মাসের  বেশি রেখে খাওয়া যায়।

লেখক: এআইসিও, কৃষি তথ্য সার্ভিস, রাজশাহী।

This post has already been read 6557 times!