Friday 29th of March 2024
Home / মৎস্য / বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে ট্যাংক/ পুকুর নির্মাণ কৌশল

বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে ট্যাংক/ পুকুর নির্মাণ কৌশল

Published at মার্চ ১, ২০২০

সালাহ উদ্দিন সরকার তপন: সাধারণত বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ বলতে আমরা বুঝি ট্যাংকিতে প্রোবায়োটিক দিয়ে মাছ চাষ। কিন্তু পুকুর খনন করে সেখানেও করা যায়। ট্যাংকও আবার দুইভাবে তৈরি করা যায়:

১. লোহার রড বা শক্ত তার জালি (৬মিমি) দিয়ে ঘেরাও দিয়ে তাঁর মধ্যে তারপুলিন দিয়ে ট্যাংক তৈরি করা যায়, যাকে বলা হয় তারপুলিনের ট্যাংকি। আবার,

২. ইট, সিমেন্ট, বালি, রড দিয়েও ট্যাংকি তৈরি করা যায়, যাকে সিমেন্টের ট্যাংক বলা হয়।

বায়োফ্লকের ট্যাংক গোলাকৃতও হতে পারে, আবার বর্গাকৃতি বা আয়তাকৃতও হতে পারে। তবে গোলাকৃত ট্যাংক টেকসই ও অধিক কার্যকরী বলে অধিকাংশ চাষি দাবী করেছেন। তাছাড়া গোলাকৃতি ট্যাংকে মাছের মুভমেন্ট ভালো থাকে। লোহার জালি দিয়ে বানালে চতুর্দিক পুরো এরিয়া রাবার কার্পেট বা ফ্লোর ম্যাট দিয়ে ঘেরাও করে দিতে হয়, এরপর তারপলিন দিয়ে ঘেরাও করে দিতে হবে যাতে পানি লিক না করে।

ইট, সিমেন্ট, বালি, রড দিয়ে বানালে তারপলিনের প্রয়োজন পড়ে না। অনেকে দাবী করেছেন তারপলিন দিয়ে করাটা তুলনামূলক ভালো। কারণ, ইট ও সিমেন্ট-এ এক ধরণের কেমিক্যাল থাকে, যা মাছ ও ফ্লকের জন্য ক্ষতিকর । তাই ইট সিমেন্টের ট্যাংকি তৈরির পর মাস দেড় মাস পানি- গোবর এর সংমিশ্রনে পেস্ট মেখে তারপর পানি ভর্তি করে রেখে দেয়, এটাকে চাষিরা সিমেন্টের কেমিক্যাল -এর এ্যাকশন দূর করার জন্য এক ধরণের ট্রিট্ম্যান্ট বলে দাবী করেছেন। ট্যাংকের মাঝখান বরাবর পানি একটি নিষ্কাশন পাইপ বসাতে হবে, যাতে করে সময় সময় পানি বাইরে বের করে দেয়া যায়। ট্যাংকের পরিধি থেকে সেন্টারের দিকে একটু ঢালু রাখতে হবে। আর পুকুরে পরিপূর্ণ বায়োফ্লক করতে হলে সম্পূর্ণ পুকুরটির তলা তারপুলিন বা উন্নত কোয়ালিটির পলি দিয়ে মুড়ে (ঢেকে) ফেলতে হবে। আর যদি তলা পরিপূর্ণ তলা ঢাকতে না পারেন তাহলে সেমি বায়োফ্লক পদ্ধতিতেও চাষ করা যায়, তবে উভয় পদ্ধতিতেই ভালো এয়ারেশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে,

ট্যাংকের পানির হিসেব/আয়তন নির্ণয়

বায়োফ্লকের জন্য সাধারণত দুই প্রকারের ট্যাংক নির্মাণ করা হয়, যেমন-

ক. গোলাকার ট্যাংক (Circular Tank),

খ. আয়তাকার ট্যাংক (Rectangular Tank).

গোলাকার ট্যাংক (Circular Tank) হলে যেভাবে ট্যাংকের পরিমাপ বের করবেন:

সূত্র: V=

এখানে V = Volume (পরিমাপ),

r = Radius (ব্যাসার্ধ)

h = Height (ট্যাংকের উচ্চতা)

1 cft ( ১ ঘন ফুট) = ২৮.৩২ লিটার

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়-

r বা Radius (ব্যাসার্ধ) যদি হয় ৫.৭৫ ফুট

h = Height (ট্যাংকের উচ্চতা) যদি হয় ৩.৫ ফুট

তাহলে (Volume) পানির আয়তন দাঁড়ায় = ৩.১৪ x ৫.৭৫ x ৫.৭৫ x ৩.৫ x ২৮.৩২ লিটার = ১০২৯০ লিটার।

আয়তাকার ট্যাংক (Rectangular Tank)হলে ট্যাংকের পরিমাপ যেভাবে বের করবেন :

Volume = Length (দৈর্ঘ্য)x Width (প্রস্থ) x Height (উচ্চতা) x 28.32 Litre ( ১ ঘন ফুটে পানি থাকে ২৮.৩২ লিটার)

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়-

Length (দৈর্ঘ্য) যদি হয় ১২ ফুট

Width (প্রস্থ) যদি হয় ৮.৫ ফুট

Height (উচ্চতা) যদি হয় ৩.৫ ফুট

তাহলে, (Volume) পানির আয়তন দাঁড়ায়= ১২ x ৮.৫ x ৩.৫ x ২৮.৩২ লিটার = ১০১১০ লিটার।

লেখক: ম্যানেজিং পার্টনার, সরকার এগ্রো ফিসারিজ ও বারানি বায়োটেক ফিস কালচার।

This post has already been read 7677 times!