Friday 19th of April 2024
Home / মৎস্য / পারিবারিক মাছ চাষ দূর করবে পুষ্টিহীনতা

পারিবারিক মাছ চাষ দূর করবে পুষ্টিহীনতা

Published at জুলাই ২০, ২০১৯

লেখক: বায়েজিদ বোস্তামি

বায়েজিদ বোস্তামি: প্রাণিজ আমিষের মধ্যে মাছ সবচেয়ে বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এবং সহজলভ্য। যা একটু সচেতন হলেই আমরা পেতে পারি পুষ্টিপূরণের সহজ সুযোগ। গ্রামীণ সমাজের দিকে লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাই প্রত্যেক বাড়ির সামনে ছোট করে হলেও একটা ডোবা অথবা ছোট পুকুর অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। আর এ পুকুটি ময়লা আর্বজনা আগাছা দিয়ে পূর্ণ। আমরা চাইলেই কিন্তু এ সুযোগটা মাছ চাষে কাজে লাগাতে পারি।

এতে করে আমাদের পারিবারিক মাছের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাড়তি আয়েরও একটা সুযোগ হবে।তাছাড়া বর্তমানে মাছের প্রচুর বাজার মূল্য রয়েছে। আমরা পারিবারিক ভাবে মাছ চাষ করে নিজেদের চাহিদা পূরণের পর অর্থ অর্জন করতে পারবো। প্রথমত আমাদের মাছ চাষের প্রবণতা তৈরি করতে হবে। দ্বিতীয়ত্ব বাড়ির সামনের পুকুরটি ভালো করে আগাছা মুক্ত করতে হবে। পুকুর প্রস্তুতির উপর অর্ধেক মাছ চাষে সফলতা নির্ভর করে। তাই ভালো করে পুকুর প্রস্তুত করে চুন প্রয়োগ করতে হবে। এ কাজ বর্ষাকালের পূর্বেই করতে হবে। তারপর পুকুর প্রস্তুত হলে পরিমাণ মতো ইউরিয়া টিসপি স্যার প্রয়োগ করতে হবে। যাতে করে প্রাকৃতিক ভাবে মাছের খাবার তৈরি হয়।

বর্ষাকালের শুরুতে পোনা মজুত করতে হবে। পরিমাণ মতো পুকুরের তিন স্তরে মাছ দিতে হবে। পুকুরের প্রথম স্তরের জন্য সরপুটি, সিলভার কার্প, গ্রাস কার্প ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে। কারণ এরা সাধারণ পুকুরের উপরের স্তরে থাকে। ফ্যাইটোপ্লাংকটন জাতীয় খাবার খায়। দ্বিতীয় স্তরের জন্য রুই, কাতলা, মৃগেল ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে। আর নিচের স্তরের জন্য কমন কার্প, মিনার কার্প রাখা যায়। তেলাপিয়া একটি সহজ লভ্য এবং দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এটা প্রায় পুকুরের সর স্তরে চলাফেরা করে খাবার খায়। চাষের জন্য মনোসেক্স তেলাপিয়া ভালো দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

তাছাড়া পরিবারের যে কেউ মাছের তদারকি করতে পারে। অনেক সময় চালের কুড়া সবজির উচ্ছিষ্ট ছোট করে কেটে মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে মাছ ভালো বৃদ্ধি পাবে। এভাবে যদি আমরা এগিয়ে আসি মাছ চাষে তাহলে অতি সহজেই আমাদের প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। মাছ চাষে বিপ্লব ঘটবে যা আমাদের দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আসুন ছোট পুকুর ডোবা ফেলে না রাখি। মাছ চাষ করে নিজের পরিবারের পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত করি।

লেখক: শিক্ষার্থী, মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদ,পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

This post has already been read 2842 times!