Tuesday 23rd of April 2024
Home / অর্থ-শিল্প-বাণিজ্য / নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে ব্যবসায়ীদের লোভ সংবরণ করতে হবে -খাদ্যমন্ত্রী

নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে ব্যবসায়ীদের লোভ সংবরণ করতে হবে -খাদ্যমন্ত্রী

Published at ডিসেম্বর ২২, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক: খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, অতি লোভ সংবরণ করে যদি আমরা আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারি তাহলে আমরা আমাদের উদ্দেশ্য অর্জন করতে সক্ষম হবো এবং জনগণের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। পাহাড়া দিয়ে কাউকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়না, যদি তার বিবেক, মন তাকে পাহাড়া না দেয়। রবিবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ঢাকার বিজয়নগরের হোটেল-৭১ এ ‘হোটেল-রেস্তোরা, বেকারী ও মিষ্টির কারখানার গ্রেডিং” প্রদান অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, আপনাদের যারা ‘এ’ গ্রেড পেলেন আমরা আশা করি সরকারের দেয়া এই স্বীকৃতিটুকু ধরে রাখবেন এবং সামনের বছর ‘এ+’ গ্রেড পাবেন। রেস্তোরার ভালো মান বজায় রাখতে হবে। এখন যদি ব্যবসায়িক অতি লোভ ত্যাগ না করতে পারি তাহলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা অনেকটাই কঠিন হবে।

খাদ্যমন্ত্রী আরো বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হলে শুধু খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একার পক্ষে তা সম্ভব নয়। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, যারা ব্যাবসা করেন তারা নিজেদের মানসিক তৃপ্তির জন্য হলেও ভোক্তার হাতে নিরাপদ খাদ্য তুলে দিবেন।

খাদ্য সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, এটি একটি আন্তর্জাতিক মানসম্মত গ্রেডিং পদ্ধতি। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। আমরাও সেভাবেই এই হোটেল গ্রেডিং করছি। ভবিষ্যতেও দেশব্যাপী রেস্তোরাঁগুলোকে এই গ্রেডিংয়ের আওতায় আনা হবে।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দা সারওয়ার জাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাবৃন্দ, বাংলাদেশ রেস্তোরা মালিক সমিতির নের্তৃবৃন্দ, বেকারী ও মিষ্টির দোকানের মালিকগণ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গ্রেডিং সিস্টেমের আওতায় খাবারের মান, বিশুদ্ধতা, পরিবেশ, ডেকোরেশন, মনিটরে রান্নাঘরের পরিবেশ দেখা যাওয়ার ব্যবস্থা ও ওয়েটারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ভিত্তিতে রেস্তোরাগুলোতে চার ক্যাটাগরিতে চিহ্নিত করা হবে। রেস্তোরায় সবুজ স্টিকার দেখলে বুঝতে হবে এখানকার মান এ+ (এ প্লাস) অর্থাৎ উত্তম। কমলা রংয়ের স্টিকার দেখলে বুঝতে হবে এটি অনিরাপদ। কমলা স্টিকারযুক্ত রেস্তোরাগুলো এক মাসের মধ্যে রেস্তোরার মান ভালো না করলে বাতিল হবে তাদের লাইসেন্স। ভোক্তা ও ভোজনরসিকদের স্বার্থে ‘এ+’, ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ এই চার ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে ঢাকা মহানগরীর হোটেল ও রেস্তোরাকে। এসব বিচারে ৯০ নম্বরের বেশি স্কোর হলে সবুজ বণের্র স্টিকার ‘এ+’, স্কোর ৮০ এর ঊর্ধ্বে হলে নীল বণের্র স্টিকার বা ‘এ’; ৫৫ থেকে ৭৯ পর্যন্ত স্কোর হলে হলুদ বণের্র ‘বি’ এবং ৪৫ থেকে ৫৫ স্কোর হলে কমলা বণের্র ‘সি’ ক্যাটাগরি পাবে। ‘এ+’ এর মানে হচ্ছে রেস্তোরাঁটি উত্তম, এ মানে ভালো, ‘বি’ মানে গড়পড়তা ভালো এবং ‘সি’ মানে গ্রেড পেন্ডিং।

যারা খাবার খেতে যাবেন- তারা রেস্তোরাঁয় প্রবেশের সময় স্টিকার দেখেই জেনে নিতে পারবেন, এখানকার ভেতরের পরিবেশ পরিস্থিতি কেমন, কিচেনের অভ্যন্তরের কী ধরনের দূষণ বা কতটা স্বাস্থ্যসম্মত খাবার রয়েছে।

সবুজ রং আর নীল স্টিকারযুক্ত রেস্তোরার মান নিয়ে ক্রেতাদের কোনো প্রশ্ন থাকতে পারে না। কিন্তু হলুদ স্টিকারধারী রেস্তোরাঁকে তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হবে তাদের মান ও গ্রেড উন্নতির জন্য। একইভাবে কমলা বণের্র রেস্তোরাকে গ্রেডিং বাড়ানোর জন্য এক মাস সময় দেয়া হবে। এ সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করা না হলে, হোটেল-রেস্তোরাঁর লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

২০১৮ সালের এপ্রিলের ২ তারিখে কস্তুরী হোটেলে স্টিকার লাগিয়ে এই কার্যক্রমের পরীক্ষার উদ্বোধন করে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিকভাবে রাজধানীর মতিঝিল, দিলকুশা, পল্টন ও সচিবালয় এলাকায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে এই উদ্যোগ চালু করা হয়েছিল। আজকের অনুষ্ঠানে মোট ১৩টি ‘এ’, ৯টি ‘বি’ এবং ৭টি সি গ্রেডের স্টিকার দেয়া হয়।

This post has already been read 1938 times!