সমীরণ বিশ্বাস : সারা বিশ্বের মধ্যে প্রথম জিংক ধান আবিষ্কার করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, সহায়তা করেছেন হারভেস্টপ্লাস। আর এ আবিষ্কৃত জিংক সমৃদ্ধ জাত ইতি মধ্যে মাঠে চাষ করে সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশের কৃষকগণ। জিংক সমৃদ্ধ উচ্চ-ফলনশীল ধানের জাতগুলি ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত লাভজনক, উচ্চ জিংক পুষ্টিসমৃদ্ধ হওয়ায় এটি বেশ সমাদৃত হয়ে উঠেছে কৃষক এবং ভোক্তা পর্যায়ে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ৮টি জিংক-সমৃদ্ধ জাত আবিষ্কৃত হয়ে মাঠে চাষ এবং উৎপাদনরত আছে। একজন মানুষ যদি দৈনিক তিন বেলা জিংক চাউলের ভাত খায়, তবে তার শরীরে আর জিংকের অভাব থাকে না। ফলে বিভিন্ন ভাইরাস প্রতিরোধক অ্যান্টিবডি তৈরিতে সহায়কের ভূমিকা পালন করবে মানবদেহে। আমাদের দেশে মায়েরা ৫৭%, স্কুলগামী ছেলে-মেয়েরা ৪৪% এবং ৫ বছরের নিচের শিশুরা ৩৬% জিংকের অভাবে রয়েছে।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য এখন ভাতের মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় জিংক। মানব দেহে জিংকের প্রয়োজনিয়তা : ১. জিংকসমৃদ্ধ খাবার খেলে ছেলে-মেয়ে খাটো হয় না। ২. শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ও মেধার বিকাশ হয়, ক্ষুধামন্দা দূর করে। ৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
দৈনিক শিশুদের ৩-৫মিলিগ্রাম ও মহিলাদেরে ৮-৯ মিলিগ্রাম জিংকের প্রয়োজন হয়। কিশোরী মেয়ে ও গভবতী মায়েদের জিংকের অভার হলে শারীরিক দূবলতা দেখা দেয় এবং গভের্ র বাচ্চার স্নায়ুতন্ত্র ক্ষাতিগ্রস্ত হয় ।
বাংলাদেশের মানুষের প্রধান খাদ্য ভাত, প্রয়োজনীয় শক্তির ৮৪% ভাত থেকে আসে এবং মোট জমির ৭০% জমিতে ধান চাষ করা হয় । জিংক ধান অন্যান্য ধানের মতই । পাথর্ ক্য হচ্ছে, এই ধানে জিংকের পরিমান বেশী থাকে।
ইতোমধ্যে আমরা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। এবারের পালা বাংলাদেশকে খাদ্য ও পুষ্টিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের মর্যাদা সমুন্নত রাখা। তাই এখনই সময় পুষ্টি নিরাপত্তা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি কল্পে একটি সমৃদ্ধ জাতি ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গঠন করতে হলে জিংকসমৃদ্ধ ধানের আবাদ সরকারী এবং বেসরকারী উদ্যোগ আরো বেগবান করা আব্যশক। আসুন আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে জাতি গঠনে এগিয়ে যাই।
লেখক: কো-অর্ডিনেটর, অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড সীড প্রোগ্রাম, সিসিডিবি।