Thursday 25th of April 2024
Home / অর্থ-শিল্প-বাণিজ্য / চাল রপ্তানিতে ২০ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হবে – কৃষি মন্ত্রী

চাল রপ্তানিতে ২০ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হবে – কৃষি মন্ত্রী

Published at জুলাই ৩০, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতিযোগিতামুলক বিশ্ববাজারের টিকে থাকার মতো মানসম্মত চাল আমাদের দেশে উৎপন্ন হয়। চাল রপ্তানি করে বিশ্ব বাজারে অবস্থান তৈরি করতে হবে। এই মুহুর্তে বিশ্ববাজারে চালের মুল্য কম তারপরও আমাদের রপ্তানিতে যেতে হবে। চাল রপ্তানির ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হবে। প্রয়োজনে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি কিনে কম মুল্যে দরিদ্র মানুষদের দেয় হবে। কিভাবে কৃষকদের কাছ হতে ধান সংগ্রহ করা যায় এব্যাপারে সবার পরামর্শ চান কৃষি মন্ত্রী।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) কৃষি মন্ত্রী ড. মো, আব্দুর রাজ্জাক এম.পি এর সভাপতিত্বে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) এর সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত কৃষক পর্যায়ে ধান-চালের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করণের নিমিত্তে সরকার গৃহীত পদক্ষেপের অংশ হিসেবে কৃষকদের নিকট হতে সরাসরি ধান সংগ্রহ/প্রক্রিয়াকরণ,মিলারদের মাধ্যমে ক্রাশিং ও সংরক্ষণ এবং চাল রপ্তানি বিষয়ক আন্ত:মন্ত্রণালয় সভায় এসব কথা বলেন।

ড. রাজ্জাক বলেন, এখনও বাংলাদেশের কৃষি মুল অর্থনীতিতে ভালো অবদান রাখছে। আগামী মৌসুমে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান সংগ্রহ করবে সরকার। কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হলে টাকা সরাসরি কৃষকের হাতে যাবে। কৃষকরা রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে ফসল ফলাবে, তারা ন্যায্য মুল্য পাবে না এটা হতে পাড়ে না। কৃষকদের লাভবান করতে প্রয়োজনে সারের দাম আরো কমানো হবে, কৃষি যন্ত্রে প্রণোদনা বৃদ্ধি করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, আগামী মৌসুমে যাতে করে ধানের মুল্যের ক্ষেত্রে বিরূপ ঘটনার উদ্ভব না হয় সে ব্যাপারে সরকার প্রস্তুত রয়েছে। কৃষিকে লাভজনক করতে হলে এর উৎপাদন খরচ কমাতে হবে। উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য শুধু ধান কাটার যন্ত্রই নয়, ধান বপন করা এবং মারাই করা যন্ত্রও কৃষদের দেয়া হবে। ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রে তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা হবে প্রান্তিক চাষি,মাঝারি চাষি ও বড় চাষি। এছাড়া প্রত্যেক উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তার কাছে আর্দ্রতা মাপার যন্ত্র থাকবে, সে কৃষকদের বাড়িতে গিয়ে ধানের আর্দ্রতা পরিমাপ করবে।

সরকার ধান সংগ্রহ করে মিল মালিকদের মাধ্যমে ক্রাশ করে চাল করবে। মিল মালিকদের সরকার লাভও দিবে এ প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে মিলাররা জানান যে তারা সমস্ত দায়িত্ব নিতে চান। এছাড়া তারা কিছু প্রস্তাবনা দেন যেমন রপ্তানি বাজার উন্মুক্ত করা এবং চাল রপ্তানির ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া। কৃষকদের বিনা সুদে বা স্বল্প সুদে ঋণ দেয়া হলে এনজিওর ঋণ পরিশোধের জন্য তারাহুরা করে ধান বিক্রি করতে হবে না। ধান সংগ্রহ বৃদ্ধি করে ২০ লাখ মে:টন করা। তারা আরো জানান বিশ^ বাজারে মোটা চালের চাহিদা রয়েছে। সভায় জানানো হয়, বিগত ১০বছরে ফসলের উৎপাদন বছরে ৬ লাখ মে. টন করে বেড়েছে।

খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ২০১৭ সালে হাওরাঞ্চলের অতি বৃর্ষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ফসলের যে ক্ষতি হয় সে সময় ৪০ লাখ মে. টন চাল আমদানি করা হয়, সে চাল এখনো রয়ে গেছে যার প্রভাব পরেছে এবারের বোরো মৌসুমে। এছাড়াও তিনি আউশ আবাদে প্রণোদনা বাদ দেয়ার কথা বলেন। কৃষকদের বাচাঁতে স্থায়ী সমাধানের পথে যাচ্ছেন। সারা দেশে ১৬২টি খাদ্য গুদাম তৈরি করা হবে, যার মোট ধারন ক্ষমতা ৭-৮ লাখ মে. টন। তিনি আরো বলেন, জমিতে সেচের জন্য বিদ্যুতে সরকার যে প্রণোদনা দেন কৃষকরা তা পায় না। কৃষিতে লাখসই প্রযুক্তি নিতে হবে জানান খাদ্য মন্ত্রী।উল্লেখ্য,

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ৪১ হাজার মে. টন চাল রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে। গত মৌসুমে আমাদের খাদ্য শস্য উৎপন্ন হয়েছিল ৪ কোটি ১৩ লাখ মে: টন, এর মধ্যে শুধু ধান উৎপন্ন হয়েছিল ৩ কোটি ৭৮ লাখ মে:টন।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মফিজুল ইসলাম, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিবসহ,খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষি,খাদ্য,বাণিজ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়েল কর্মকর্তাবৃন্দ এবং চাল কল মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ ব্যবসায়ীসহ এফবিসিসিআই এর প্রতিনিধি।

This post has already been read 2963 times!