Friday 29th of March 2024
Home / আঞ্চলিক কৃষি / খুলনায় কেঁচো সারে কৃষি পণ্য উৎপাদনে  কৃষকের সাফল্য

খুলনায় কেঁচো সারে কৃষি পণ্য উৎপাদনে  কৃষকের সাফল্য

Published at ডিসেম্বর ২৮, ২০২০

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা): খুলনার ফুলতলা উপজেলার মশিয়ালী গ্রামের কৃষক এস এম কাউচ আলী (৫৬) গত ২০১৯ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত উৎপাদিত কৃষি পণ্য বিক্রি করে লক্ষাধিক টাকা আয় করেছেন। তার এ সাফল্যের পিছনে বড় কোন পুজি বা প্রযুক্তি নেই। সামান্য কেঁচোই তাকে সফল কৃষকে পরিণত করেছে।

কৃষক কাউচ আলী তার সাফল্য সম্পর্কে বলেন, গোবর মিশ্রিত মাটিতে কেঁচো চাষ করেন। কেঁচোর বংশ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গোবর থেকে তৈরি হয় ভার্মি কম্পোষ্ট বা কেঁচো কম্পোষ্ট সার। প্রথম বছরে তিনি ১০ হাজার কেজি ভার্মি কম্পোষ্ট উৎপাদন করেন। এর মধ্যে ৪ হাজার কেজি নিজ জমিতে প্রয়োগ ও বাকি ৬ হাজার কেজি পার্শ্ববর্তী কৃষকের নিকট বিক্রি করে বছরে ৬০ হাজার টাকা আয় করেন।

তিনি আরও বলেন, কেঁচো এভাবে ভাগ্য বদলে দিতে পারে তা আমার জানা ছিল না। চাষ করেই ঝুঝতে পেরেছি, কেঁচো বা কেঁচো থেকে পাওয়া জৈব সার বিক্রি করে লাখ টাকা আয় করা যায়। আবার কেঁচো সারে উৎপাদিত জৈব কৃষি পণ্যের দামও অনেক বেশি। ফুলতলা উপজেলায় আমার মত আরও অনেকে ভার্মি কম্পোষ্ট বা কেঁচো সার উৎপাদন করে সাফল্য অর্জন করেছে। কম খরচ এবং লাভ বেশি হওয়ায় এ পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে দিন দিন।

প্রতিটি কেঁচো ২ টাকা করে বিক্রি করা যায়। কেঁচো থেকে পাওয়া জৈব সার প্রতি কেজি বাজারে ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়। গোপালগঞ্জ, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের সহায়তায় ও জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার খামারবাড়ি খুলনার কাজী জাহাঙ্গীর হোসেনের পরামর্শে এবং উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দিক নির্দেশনায় কাউচ আলী কৃষিতে সাবলম্বী হয়েছে বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে ফুলতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, কেঁচো জিবরাইলিক অ্যাসিড নামে এক ধরনের পদার্থ নিঃসরণ করে। গোবর ও পচনশীল উপাদানের সঙ্গে ওই অ্যাসিড মিশে গেলে ইউরিয়া, পটাশসহ বিভিন্ন রাসায়নিক সারের সব গুণাগুণ এক সঙ্গে পাওয়া যায়। এ জন্য জৈব কেঁচো সার ব্যবহার করলে আর অন্য কোন সার ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না। তিনি ভার্মি কম্পোষ্ট এর বাণিজ্যিক সম্প্রসারণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং এলাকার কৃষকদের জমিতে অধিক পরিমাণে ভার্মি কম্পোষ্ট বা কেঁচো সার ব্যবহার করার আহবান জানান।

This post has already been read 2095 times!