Friday 29th of March 2024
Home / পরিবেশ ও জলবায়ু / উপকূলীয় অঞ্চলে টেকসই বেড়িবাঁধ ও সুপেয় পানির দাবিতে নৌবন্ধন

উপকূলীয় অঞ্চলে টেকসই বেড়িবাঁধ ও সুপেয় পানির দাবিতে নৌবন্ধন

Published at জুন ৮, ২০২০

ফকির শহিদুল ইসলাম(খুলনা) : উপকূলীয় এলাকায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সুপেয় খাবার পানির নিশ্চয়তার দাবিতে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে পানিতে ভেসে নৌবন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মানুষ। রোববার শ্যামনগর উপজেলার আম্পান উপদ্রুত বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের পূর্ব দুর্গাবাটি গ্রামের খোলপেটুয়া নদীতে এই নৌবন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। শ্যামনগর উপজেলা যুবফোরাম, গাবুরা ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ফোরাম, জলবায়ু পরিষদ, সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটি ও নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ সম্মিলিতভাবে এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

এসময় ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত এলাকার শত শত মানুষ নৌকায় ভেসে উপকূলীয় এলাকার জানমালের নিরাপত্তা ও আর্থ সামজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ এবং সুপেয় খাবার পানির সংকট দূরীকরণের দাবি জানান। পরে একই দাবি তুলে ধরে নৌকায় ভেসে সংবাদ সম্মেলন করে আয়োজকরা। এসময় ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত এলাকার শত শত মানুষ নৌকায় ভেসে উপকূলীয় এলাকার জানমালের নিরাপত্তা ও আর্থ সামজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ এবং সুপেয় খাবার পানির সংকট দূরীকরণের দাবি জানান। পরে একই দাবি তুলে ধরে নৌকায় ভেসে সংবাদ সম্মেলন করে আয়োজকরা।

উপকূলীয় এলাকার মানুষের দুর্দশা লাঘবের লক্ষ্যে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আতাউল হক দোলন, সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, নাগরিক আন্দোলন মঞ্চের সভাপতি ফাহিমুল হক কিসলু, জলবায়ু পরিষদের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, বুড়িগোয়ালিনী ইউপি চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল, শ্যামনগর উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক এসএম কামরুজ্জামান, নাগরিক কমিটির নেতা আলী নুর খান বাবুল প্রমুখ।

নৌ-বন্ধন চলাকালে নৌকায় বক্তব্য দেন বেসরকারী সংস্থা লির্ডাসের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মন্ডল ৩টি প্রধান দাবী উত্থাপন করেন। তাদের দাবীগুলো -জলবায়ু পরিবর্তন ও দূর্যোগকে মাথায় রেখে স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ পুন:নির্মাণ করা, যার নিচে ১০০ ফুট, উপরে ৩০ ফুট এবং যার উচ্চতা হবে ৩০ ফুট। বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জরুরী তহবিল গঠন করা ও বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকার মানুষের খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধানের দাবি জানানো হয়।

লিখিত বক্তব্যে মোহন কুমার মন্ডল বলেন, সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলায় ৫৫৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ২৭ কিলোমিটার অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর শ্যামনগরে ৫, ১৪ ও ১৫ নং পোল্ডারে ১৯২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের ১৩ কিলোমিটারে ২৫টি স্থানে ভেঙে গিয়ে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ঘর-বাড়ি, গবাদিপশু, মাছ, গাছ পালা, কৃষি ফসল, চিংড়ী ফসলসহ অন্যান্য মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২,৬৫২,৬৮১,৮০০ টাকার সমমূল্যের।

উল্লেখ, গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে উপকূলীয় নদ-নদীর অন্তত ২০টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়ে ৫০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে বিধ্বস্থ হয় হাজার হাজার ঘর-বাড়ি, ভেসে যায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ। বিনষ্ট হয় উপকূলের মানুষের খাওয়ার পানির আধার। ঘূর্ণিঝড় উপদ্রুত এলাকায় চরম খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। ছড়িয়ে পড়েছে পানিবাহিত রোগ। ভেসে গেছে ল্যাট্রিন। কোথাও কোথাও রিং বাঁধ দিয়ে পানি আটকানো সম্ভব হলেও এখনো অনেক জায়গায় প্রতিদিন দু’বার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। এতে উপকূলের মানুষের দুর্দশা চরম আকার ধারণ করেছে। ইতিমধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে উপকূলীয় শ্যামনগরের ক্ষয়ক্ষতি সরেজমিনে প্রথমে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব এবং পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন ।

This post has already been read 2450 times!