Thursday 25th of April 2024
Home / ফসল / আম ও কাঁঠাল গাছে মুকুল ঝরা রোধে করণীয়

আম ও কাঁঠাল গাছে মুকুল ঝরা রোধে করণীয়

Published at মার্চ ২, ২০২০

এগ্রিনিউজ২৪.কম ডেস্ক: শীতকাল শেষ, বসন্ত এসেছে।  আম ও কাঁঠাল গাছে মুকুল এসেছে। ভালো ফলন পেতে এই দুটি গাছে এখন পরিচর্যা জরুরি। এমনটাই জানাচ্ছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।উৎকৃষ্ট ফলন পেতে এই সময়ে আম ও কাঁঠাল গাছে পরিচর্যা দরকার।

অনেক চাষির প্রশ্ন থাকে, কাঁঠাল গাছের ফল কালো হয়ে ঝরে পড়ছে। এর সমাধান কি? তাঁদের জন্য এটাই বলার যে, কাঁঠাল গাছে দু’ধরনের ফুল হয়। একটি পুরুষ ফুল ও একটি স্ত্রী ফুল। সাধারণতঃ কাঁঠাল গাছের গোড়া থেকে যে ফুল হয়, সেগুলি স্ত্রী ফুল। এবং গাছের সরু ডালে অর্থাৎ গাছের গোড়া থেকে দূরে উপরের দিকে যে ফুল ফোটে, সেগুলি পুরুষ ফুল।

মৌমাছি, বোলতা ও বাতাসের মাধ্যমে পরাগ মিলন হয়। ঠিকঠাক যদি পরাগমিলন হয়, তা হলেই কাঁঠাল ভালো হবে। ফল পুষ্ট হবে। কিন্তু দেখা যায়, অনেক সময় ছত্রাকঘটিত কারণে স্ত্রী ফুল কালো হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। এই সমস্যা থেকে সুরাহা পাওয়ার জন্য কপার অক্সিক্লোরাইড প্রতি লিটার পানিতে চার গ্রাম মাত্রায় মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। এর কিছুদিন পর কুড়ি শতাংশ বোরন প্রতি লিটার পানিতে দুই গ্রাম মাত্রায় মিশিয়ে স্প্রে করলে কাঁঠালের ভালো ফলন পাওয়া যাবে।

কুয়াশায় আম গাছের মুকুল ঝরে পড়ে কিংবা চুপসে যায়। এর ফলে ফলন অনেক কমে। এর হাত থেকে রক্ষা পেতে সালফেক্স ৩ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে গুলে সঙ্গে ২ গ্রাম বোরন মিশিয়ে গাছে স্প্রে করতে হবে। এতে কুয়াশা হোক বা না হোক, গাছে মুকুল টিকে থাকবে। ফলের বৃন্ত শক্ত হবে। আম ফেটে যাবে না।

যদি গরম পড়ে যায়, তাতে শোষক পোকার আক্রমণ দেখা দিতে পারে। এর জন্য অন্তর্বাহী কীটনাশক হিসেবে ইমিডাক্লোরোপিড ১ মিলি প্রতি তিন লিটার পানিতে মিশিয়ে অথবা থায়ামেথক্সাম ১ গ্রাম প্রতি তিন লিটার পানিতে মিশিয়ে তা স্প্রে করতে হবে।

আমগাছের পরিচর্যায় মাটির উর্বরাশক্তি বাড়াতে হবে। সেজন্য প্রয়োজনীয় জৈবসার দিতে হবে। গাছের ফলন বৃদ্ধির জন্য ট্রায়াকোপ্টানল জাতীয় হরমোন প্রয়োগ করা দরকার। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হলে কিংবা শুকনো আবহাওয়া থাকলে গাছে সাদা পানি ছিটাতে হবে বিকেলের দিকে। বাড়ির কিংবা বাগানের পুরনো আমগাছের বেশি করে যত্ন নিতে হবে।

পুরনো গাছে যন্ত্রচালিত করাত দিয়ে ডালপালা ছেঁটে দিতে হবে। সেইসঙ্গে পরগাছা পরিস্কার করতে হবে। কারণ, পরগাছা আমগাছের ডাল থেকে রস শুষে নেয়। এবং মুকুলের ব্যাঘাত ঘটায়।

প্রসঙ্গত, এবারের খামখেয়ালি আবহাওয়ায় চিন্তায় ফেলেছে চাষিদের। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত গাছে এক বছর অন্তর বেশি মুকুল আসে। কেউ যদি ভাবেন ওষুধ প্রয়োগ করলেই গাছে প্রতি বছর খুব ভালো ফল ধরবে, এই ধারণা ভুল। তবে মুকুল ধরার সঙ্গে সঙ্গে পরিচর্যা জরুরি।

সূত্র: দৈনিক বর্তমান (আংশিক পরিমার্জিত)

This post has already been read 5748 times!