Tuesday 23rd of April 2024
Home / ফসল / আমের মুকুল দেরিতে আসলেও, ফলনে প্রভাব না পড়ার সম্ভাবনা

আমের মুকুল দেরিতে আসলেও, ফলনে প্রভাব না পড়ার সম্ভাবনা

Published at মার্চ ১২, ২০২০

মো. আমিনুল ইসলাম (রাজশাহী) : জলবায়ু পরিবর্তন জনিত প্রভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জে দেরীতে আসলেও বাগানগুলোতে প্রচুর মুকুল এসেছে। মৌসুমের শুরুতে শীতের প্রকোপ ও বৃষ্টি হওয়া এবং দেরীতে মুকুল ফোটায় ফলনে তেমন প্রভাব পড়বে না বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। তবে, বৃষ্টি হওয়াকে আশির্বাদ বলছে আম চাষি ও বাগান মালিকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে, এবারও ভালো ফলন হবে বলে আশা করছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় এ বছর জেলায় আমবাগানের পরিমান ৩৩ হাজার ৩৫ হেক্টর। গত বছর ছিল ৩১ হাজার ৮’শ ২০ হেক্টর এবং গাছের সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ ৩৯ হাজার ৬’শ ৩০।  চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭৫ ভাগ বাগানে মুকুল এসেছে। মার্চের মধ্যভাগ পর্যন্ত গাছগুলোতে মুকুল আসা অব্যাহত থাকবে।

মুকুল দেরীতে আসার কারণ হিসেবে কৃষিবিদরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণ। আবার কোন কোন গাছে দেখা গেছে, গাছের যে অংশে কিছুটা রোদ, আলো-বাতাস পড়েছে সে অংশে কিছু মুকুল এসেছে। বৃষ্টি হওয়ার পর রোদ ওঠায় মুকুলে তেমন প্রভাব পড়বে না। এটি ফলনের জন্য ভাল। মৌসুমের প্রথম দিকে চাষিরা শঙ্কায় থাকলেও, বর্তমানে সেদিক থেকে শঙ্কামুক্ত।

আমচাষি আনারুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি হওয়ার ফলে গাছের পাতাগুলো পরিস্কার হয়ে গেছে। এতে করে আপাততঃ বালাইনাশক ও ছত্রানাশক স্প্রে করা লাগছে না। মুকুলের ক্ষতিকর হপার পোকা ও মিজ পোকার আক্রমন দেখা গেলে বালাইনাশক স্প্রে করবেন তারা। কিছুদিন পরই এসব গাছে গাছে ঝুলতে দেখা যাবে নানা জাতের সুমিষ্ট আম। ভাল ফলন পেতে বাগান পরির্চর্যার কাজে পুরোদমে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। আর আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ভালো ফলনের আশা করছেন বাগানমালিক, আমচাষী ও ব্যবসায়ীরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুরুল হুদা জানান, দেরীতে হলেও এ পর্যন্ত ৭৫ ভাগ গাছে মুকুল এসেছে। জেলার প্রধান অর্থকরী ও লাভজনক ফসল হওয়ায় আমবাগানের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে এবার আমের ফলন ভাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, এবার একটু দেরীতে মুকুল আসলেও উৎপাদন ব্যাহত হবে না বলে আশাবাদী। এছাড়া, বৃষ্টি হওয়ার ফলে মুকুলের জন্য লাভজনক। এবারে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন।

মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. জমির উদ্দিন জানান, বরাবরই এ জেলায় আমের মুকুল আসতে কিছুটা দেরি হয় এবারো তার ব্যাতিক্রম ঘটেনি। যদিও এবছর প্রথম দিকে গাছে মুকুলের পরিমাণ কম ছিল এবং ধারণা করা হচ্ছিল শীতের কারণে মুকুল ফুটবে না। মুকুল ফোটার জন্য ১০ ডিগ্রী তাপমাত্রা লাগে, ফেব্রুয়ারীর মধ্যভাগে যখন কিছুটা গরম পড়ার পর যে তাপমাত্রার চাহিদা লাগে তা পূরণ হয়েছে। মাঝে এক পষলা বৃষ্টি হওয়ায় মুকুলের জন্য ভাল হয়েছে। এছাড়া মেঘলা না থাকায় রৌদ্রজ্জল দিন, যার ফলে রোগবালাই ও পোকার আক্রমণ দেখা দেয়নি। কৃষকরা যদি ঠিকমত পরিচর্যা করে, তাহলে আমের ফলন ভাল হবে।

This post has already been read 3443 times!