Thursday 28th of March 2024
Home / অর্থ-শিল্প-বাণিজ্য / আদর্শ প্রাণিসেবা, ফিনিক্স ইনসিওরেন্স ও ব্র্যাক ব্যাংকের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর

আদর্শ প্রাণিসেবা, ফিনিক্স ইনসিওরেন্স ও ব্র্যাক ব্যাংকের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর

Published at ডিসেম্বর ৩০, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক: গবাদিপ্রাণি খামারিদের জন্য প্রযুক্তি নির্ভর আর্থিক সহযোগিতার প্ল্যাটফর্ম  ‘খামারি’-র শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) আদর্শ প্রাণিসেবা লিমিটেড, ফিনিক্স ইনসিওরেন্স লিমিটেড ও ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী, ব্র্যাক ব্যাংক বাণিজ্যিক ও ব্যক্তিগতভাবে গবাদিপ্রাণি পালনের  উদ্দেশ্যে খামারিদের জন্য সহজ ও ঝামেলামুক্ত ঋণ সহায়তা প্রদান করবে । ফিনিক্স ইনসিওরেন্স গবাদিপ্রাণীর বীমা সেবা প্রদান করবে এবং অন্যদিকে আদর্শ প্রাণিসেবা প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এম.এ.মান্নান এমপি। তিনি  উপস্থিত সকলের প্রতি শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে মত প্রকাশ করেন যে, সরকারের পক্ষ থেকে এই ধরনের উদ্যোগে পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। সেই সাথে প্ল্যাটফর্মটির প্রয়োজনীয়তা আছে বলে তিনি মনে করেন এবং সাংবিধানিক রেগুলেটর হিসাবে পাশে থাকবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কৃষি বাঙ্গালীর এক অনন্য ঐতিহ্যের নাম। আর তাই কৃষি তথা প্রাণিসম্পদ খাতের উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে আদর্শ প্রাণিসেবা লিমিটেড, ফিনিক্স ইনসিওরেন্স লিমিটেড ও ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের সম্মিলিত প্রচেষ্টা “খামারি”-র সাফল্য ও মঙ্গল কামনা করে আরো সামনে এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানান।

তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশের প্রতিটি প্রত্যন্ত অঞ্চলকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্তর্গত করা আমাদের  প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস “খামারি” সেই স্বপ্নকে অনেকাংশেই বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবে।”

আদর্শ প্রাণিসেবা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফিদা হক বলেন, “প্রাণিসেবার উদ্দেশ্য দেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে মোবাইল প্ল্যাটফর্মে প্রযুক্তি ব্যবহার করে গবাদিপ্রাণি বীমা সেবা প্রদান করে সামগ্রিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা। সর্বোপরি, প্রাণিসেবা প্ল্যাটফর্মটি প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ মূলক কার্যক্রমে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রামীণ আর্থসামাজিক উন্নয়নে সরকারের মিশন ও ভিশন বাস্তবায়নের জন্য সচেষ্ট।

তিনি আরো বলেন, “অতীতে গবাদি প্রাণীর যথাযথভাবে চিহ্নিত করার ব্যবস্থা না থাকায় গবাদিপ্রাণির বীমা সফলভাবে কার্যকর করা যায়নি। যেহেতু প্রাণিসেবা মুখ স্বীকৃতির মাধ্যমে গবাদি প্রাণী সনাক্তকরণে সক্ষম, তাই বাংলাদেশে গবাদিপ্রাণির বীমার মাধ্যমে এ শিল্পের একটি নতুন যুগের সূচনা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী  সেলিম আর এফ  হোসেন তার বক্তব্যে বলেন যে, ব্র্যাক ব্যাংক শুরু থেকেই ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ব্যাংকিং কার্যক্রমে সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের কৃষিখাতের উন্নয়নে অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করে আসছে। আমি আশা করি প্রাণিসেবা লিমিটেড ও ফিনিক্স  ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগের এই প্ল্যাটফর্মটি এক সময় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে।

ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জামিরুল ইসলাম বলেন, “গরু একটি কৃষকের জন্য মূল্যবান  সম্পদ। এই মূল্যবান্ সম্পদ-গবাদিপ্রাণির সাথে যুক্ত আর্থিক ঝুঁকি হ্রাস করাই  আমাদের  লক্ষ্য। গবাদিপ্রাণি  বীমা আর্থিক ঝুঁকি হ্রাস করার ফলে একদিকে যেমন  নতুন খামারি তৈরিতে উৎসাহ প্রদান  করবে অন্যদিকে এ খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়ে বিশাল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে যা অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

তিনি আরো বলেন, “আজকাল সবকিছুই প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল এবং প্রাণিসম্পদ খাতও এর ব্যতিক্রম নয় এবং আমরা এই সেক্টরেও প্রযুক্তির উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ব্যবহার লক্ষ্য করছি।” প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২.৪-২.৮ কোটি প্রাণিসম্পদকে বীমা সুবিধার আওতায় আনা জরুরি।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, প্রাণিসম্পদ গবেষক ও কলামিস্ট ড.আওলাদ হোসেন, ডাঃ এস.এম নজরুল ইসলাম, প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশন এবং সৈয়দ আব্দুল মোমেন, হেড অব এসএমই, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড।

অনুষ্ঠানটির সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের হেড অফ এমপ্লয়ী ব্যাংকিং খন্দকার এমদাদুল হক।

উল্লেখ্য, আদর্শ প্রাণিসেবা, প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নের জন্য টেকসই সমাধান ও বিকাশের লক্ষ্যে সবযন্ত্রে ইন্টারনেট (ইন্টারনেট অফ থিংস), কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং যান্ত্রিক স্বশিক্ষার (মেশিন লার্নিং) প্রযুক্তি ব্যবহার করে গবাদি প্রাণীর প্রজাতি নির্ধারণ এবং রেকর্ড সংরক্ষণ, জিনগত বিকাশ, তথ্য সংরক্ষণ, প্রজনন, দুগ্ধ ব্যবস্থাপনা এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা সহ প্রাণিবীমা নিয়ে কাজ করছে।

This post has already been read 2680 times!