Saturday 20th of April 2024
Home / খাদ্য-পুষ্টি-স্বাস্থ্য / অসৎ চাল মিলারদের প্রতি খাদ্যমন্ত্রীর আবারো হুশিয়ারি

অসৎ চাল মিলারদের প্রতি খাদ্যমন্ত্রীর আবারো হুশিয়ারি

Published at জুলাই ১, ২০২০

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, এবার বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে; এই ভরা মৌসুমে চালের বাজার অস্থিতিশীল হবার কোন কারণ নেই। যদি কেউ অপচেষ্টার মাধ্যমে চালের মূল্য বৃদ্ধি করার চেষ্টা করে তাহলে কঠোর অবস্থানে যাবে সরকার; প্রয়োজনে সরকারিভাবে চাল আমদানির হুশিয়ারি দেন খাদ্যমন্ত্রী।

আজ বুধবার (১ জুলাই) সকাল ১১ টায় ‘বাজারে চালের মূল্য স্থিতিশীল রাখার বিষয়ে আলোচনা’ শীর্ষক এক সভায় মন্ত্রীর মিন্টো রোডস্থ সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সমন্বয় ও সঞ্চালনা করেন খাদ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব ডক্টর মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন দেশের ৮টি বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারগণ, ৮ বিভাগের বিভাগীয় চালকল মালিক সমিতির দু’জন করে প্রতিনিধি, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকগণ, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদপ্তরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

সভায় উপস্থিত চালকল মালিকদের উদ্দেশ্যে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, চালের বাজার স্থিতিশীল রাখেন, সরকারের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করেন; যদি তা না করেন তবে সরকার চাল আমদানিতে যেতে বাধ্য হবে। কিন্তু সরকার আমদানিতে যেতে চায়না; গেলে মিলারদের লস হবে এবং যে সমস্ত কৃষক ধান ধরে রেখেছে তারাও লোকসান করবে। এই সময়ে যে সমস্ত মিল এগিয়ে আসবে তাদেরকে এ বি সি এভাবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে চিহ্নিত করার জন্য ইতিমধ্যেই খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেসব মিলকে পরবর্তীতে সেভাবে মূল্যায়ন করা হবে- জানান মন্ত্রী।

মিলাদের উদ্দেশ্যে সভায় মন্ত্রী আরো বলেন, এই করোনা কালীন সময়ে সবাই বিপদগ্রস্ত। এবার না হয় লাভ একটু কম করলেন। প্রত্যেক বার লাভ সমান হয় না। এবার মানুষকে সেবা করার সুযোগ রয়েছে। সেবার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসুন। ২০১৭ সালের কথা স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে মিল মালিকদের একটা আত্মার সম্পর্ক রয়েছে। ২০১৭ সালে হাওড়ে বন্যার সময় সরকারিভাবে চালের সংগ্রহ বাধাগ্রস্ত হলে সরকার চাল আমদানির উপর ট্যাক্স ফ্রি করে দিয়েছিল ফলে ৪০লক্ষ মেট্রিক টন চাল বিভিন্নভাবে আমদানি করা হয়। সে কারণে সেই বছর মিলমালিকরা এবং কৃষক উভয়েই চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তিনি বলেন, কৃষক বাঁচলে ধান উৎপাদিত হবে এবং আপনারা চালকল মালিকগণ বেঁচে থাকবেন। কৃষক যাতে বিপাকে না পড়ে; বিশেষ করে প্রান্তিক কৃষক যেন ধানের ন্যায্য মূল্য পায় সেজন্য এবার ৮লক্ষ মেট্রিক টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ইতোমধ্যেই কৃষক তার ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে।

মন্ত্রী মিলগেট থেকে কোন ধান কত দামে বিক্রি হচ্ছে তা যাচাই করা এবং মনিটরিং করার জন্য উপস্থিত বিভাগীয় কমিশনারদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।

সঠিক সময়ে চাল দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আপনারা সাপ্তাহিক, পাক্ষিক একটা সিলিং করে নেন; কখন, কি পরিমাণ চাল সরকারি খাদ্য গুদামে সরবরাহ করবেন। সরকার সকল ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দিচ্ছে; অতএব সেই প্রণোদনার অংশীদারিত্বের সুযোগ আপনারাও নিতে পারবেন বলে উপস্থিত মিল মালিকদের অবহিত করেন খাদ্যমন্ত্রী। সরকারিভাবে চালের মূল্য বৃদ্ধি করা কোনোভাবেই হবে না জানান তিনি।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, যেহেতু খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে আপনাদের ব্যবসা সবসময় করতে হবে; অতএব লাভ বেশি হলে চাল সরবরাহ করবেন; লাভ কম হলে চাল সরবরাহ করবেন না; এটা হতে পারেনা।

সভায় উপস্থিত বরিশাল বিভাগ চালকল মালিক সমিতির সভাপতি বলেন, গত বোরো মৌসুমের শেষদিকে কৃষক ধান বিক্রি করে মণপ্রতি ভালো লাভ করেছিল; এবারও বেশিরভাগ কৃষক যে যতটুকু পারে সেই পরিমাণ ধান নিজেদের কাছে ধরে রেখেছে। তাদের আশা এবারও শেষ দিকে বেশি দামে ধান বিক্রি করতে পারবে।

খাদ্য বিভাগের সকল কর্মকর্তা- কর্মচারীবৃন্দ অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন – এ জন্য মন্ত্রী তাদেরকে ধন্যবাদ জানান।  তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ধান চাল সংগ্রহের সময় কোন কৃষক বা মিলারের সঙ্গে অসদাচারণ করবেন না; দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হবেন না।

This post has already been read 2332 times!