Friday 29th of March 2024
Home / ফসল / অনা বৃষ্টিতে হতাশ মিষ্টি কুমড়া চাষীরা

অনা বৃষ্টিতে হতাশ মিষ্টি কুমড়া চাষীরা

Published at জানুয়ারি ৪, ২০১৯

মাহফুজুর রহমান (চাঁদপুর প্রতিনিধি): চলিত মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে কমেছে মিষ্টি কুমড়ার উৎপাদন। ফলে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার অলিপুর এলাকার শতাধিক কৃষকের মধ্যে মৌসুমী সবজি উৎপাদনে ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজার দখল করে নেওয়া উপজেলার অলিপুরের মিষ্টি কুমড়া উৎপাদন অনেক কম হয়েছে। পাইকারি বিক্রেতারা হতাশার কণ্ঠে বলছেন, বিগত বছরের তুলনায় চট্টগ্রামে এ বছর অনেক কম কুমড়া যাচ্ছে।

কুমড়া চাষিরা বলছেন, কৃষি অফিসের লোকজন মাঠ পর্যায়ের কৃষকদেরকে পরামর্শ আর প্রয়োজনীয় নির্দেশনা না দেওয়ায় কুমড়া উৎপাদন কমেছে। প্রায় ৪০ বছর ধরে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় কুমড়া চাষ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। একজন থেকে আরেকজন। এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ে মিষ্টি কুমড়া চাষ। বর্তমানে অলিপুর গ্রামের শতাধিক কৃষি পরিবার মৌসুমী সবজি চাষের ওপর নির্ভরশীল।

সরজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার উটতলি হতে শুরু করে অলিপুর বাজার, উত্তর অলিপুর, দক্ষিণ অলিপুর, কামরাঙ্গা, মনিহার, মহেশপুর, বাকিলা, সাতবাড়িয়া, বেতিয়াপাড়া, কৈয়ারপুল, শ্রীনারায়ণপুর, দক্ষিণ বলাখাল, উচ্চগাঁ এলাকায় কুমড়ার চাষ হয়েছে। এসব কুমড়ার গাছ শুকিয়ে গেছে। ফলে কুমড়া উৎপাদন অনেক কম হয়েছে।

এদিকে চাষিদের মধ্যে কুমড়া তোলায় ব্যস্ত দেখা গেছে। তারা কুমড়া তুলে সড়কের পাশে স্তূপ দেন। এরপর এসব কুমড়া ট্রাকে ভর্তি করে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হয়। পাইকারি বিক্রেতারা জানান, প্রায় ২৫ বছর ধরে হাজীগঞ্জ থেকে কুমড়া কিনে চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারে বিক্রি করেন তারা। কুমড়া চাষের জমি কিনে সেই কুমড়া বয়সে পূর্ণতা আসলে তা মাঠ থেকে সংগ্রহ করা হয়। পরে ট্রাকে করে চট্টগ্রামে পৌঁছে দেয়া হয়। কুমড়াগুলো আড়তে ৮ থেকে ৯ টাকা কেজি দরে বিক্রয় করা হয়। অন্য বছরগুলোতে ভালো লাভ পেলেও এবারে লাভের মুখ একেবারে কম। এবার উৎপাদন অনেক কম হয়েছে।

কুমড়া চাষি লিটন মুন্সী বলেন, ‘আমরা বেশ কয়েকটি গ্রামের কৃষকরা প্রায় অনেক বছর ধরে এই অঞ্চলে কুমড়া চাষ করে আসছি। এখানে একজন ব্লক সুপারভাইজার আছে জানি কিন্তু কখনো উনাকে আমরা দেখিনি। এ বছর তেমন একটা ভালো ফলন হয়নি। কৃষি কর্মকর্তা এখানে এসে আমাদেরকে কুমড়া চাষের বিষয়ে পরামর্শ দিলে ফলন আরও অনেক বেশি পেতাম।’

সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, বীজ তলায় কুমড়া চারা লাগানো থেকে শুরু করে জমি তৈরি করা, জমিতে গাছ লাগানো, গাছের পরিচর্চা করা, ফলন বাড়ানো এবং ফলনে পুষ্টতা আনাসহ কুমড়াচাষে স্থানীয় কৃষকদেরকে নিয়ে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা প্রয়োজন। কুমড়া চাষকে মসলা চাষের আওয়তায় এনে প্রণোদনা ভাতাসহ কৃষকদেরকে ভালো মানের বীজ দেয়া যেতে পারে। ইউনিয়ন ভিক্তিক ব্লক সুপারভাইজারের মাধ্যমে নিয়মিত তত্ত্বাবধান করলে এই অঞ্চলের কুমড়া চট্টগ্রামের বাজার ডিঙ্গিয়ে দেশব্যাপী সুনাম বৃদ্ধি পাবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন মনি সূত্রধর বলেন, ‘কৃষকদের অভিযোগ সত্য নয়। বিস্তীর্ণ এলাকায় কুমড়া চাষের কারণে সব কৃষকের খবর একত্রে দেয়া সম্ভব হয় না। কৃষি কর্মকর্তা যেদিন মাঠে যায়, সেদিন হয়তো অভিযোগকারীরা মাঠে থাকেন না।’

যথাযথ ফলন উৎপাদন না হওয়ার বিষয়ে তিনি আরো বলেন, ‘লাউ-কুমড়া চাষে পর্যাপ্ত পানির প্রয়োজন। এ বছর বৃষ্টি না হওয়ার কারণে লাউ-কুমড়া উৎপাদন কম হয়েছে।’

This post has already been read 1881 times!