Friday 19th of April 2024
Home / পোলট্রি / ওষুধের কার্যকারিতা কমে যাওয়া পোল্ট্রি শিল্পের বড় চ্যালেঞ্জ

ওষুধের কার্যকারিতা কমে যাওয়া পোল্ট্রি শিল্পের বড় চ্যালেঞ্জ

Published at মার্চ ৯, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক: পোল্ট্রি খাদ্য উপকরনের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি, নতুন নতুন রোগ-বালাইয়ের প্রাদুর্ভাব, ওষুধের কার্যকারিতা কমে যাওয়া পোল্ট্রি শিল্পের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। শনিবার (৯ মার্চ) তিনদিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি-শো-২০১৯ এর সমাপনী দিনে  অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু এম.পি এ মন্তব্য করেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার কৃষি ও পোল্ট্রি বান্ধব। এখাতের উন্নয়নে জাতীয় প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন নীতিমালা ও পোল্ট্রি উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। নিরাপদ খাদ্যের উৎপাদন নিশ্চিত করতে মৎস্য ও পশুখাদ্য আইন-২০১০ ও নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ প্রণয়ন করেছে।

রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় এ সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। তিন দিনের এই শো’তে ২২টি দেশসহ দেশী-বিদেশী প্রায় এক লাখ দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে। সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, পোল্ট্রির মাংস ও ডিম রপ্তানির জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে এখন বিদেশে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পোল্ট্রি পণ্য রপ্তানী সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে। এই সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ইতোমধ্যেই বেশ কিছু ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী ২০২৪ সাল নাগাদ পোল্ট্রি পণ্য রপ্তানি শুরু হবে।

বিশেষ অতিথি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রইছউল আলম মন্ডল বলেন, ওষুধের কার্যকারিতা কমে যাওয়ার প্রেক্ষিতে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার যেনো বেড়ে না যায় সেজন্য এখনই কার্যকর কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, পোল্ট্রি পণ্য রপ্তানী বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ডিম ও মাংস রপ্তানীর জন্য সরকার ইতোমধ্যেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সে লক্ষ্যে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এস.ও.পি) ও গাইডলাইন অচিরেই তৈরি করা হবে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য প্রফেসর ড. মো. আলী আকবর বলেন, পোল্ট্রি শিল্পের বিকাশ সুস্থ্য জাতি গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য, মেধাবি জাতি ও নিউট্রিশন সেনসিটিভ ইকোনমিক গ্রোথ আগামী বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক বলেন, নিরাপদ খাদ্যের কোনো বিকল্প নাই। যেকোনো মূল্যে খাদ্য নিরাপদ রাখতে হবে। আধুনিক জবাইখানা নির্মাণ এবং খোলা বাজারে ক্রমান্বয়ে জীবন্ত মুরগি বন্ধের সুপারিশ করেন তিনি। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক বলেন, দেশে বর্তমানে বাণিজ্যিক পোল্ট্রি খামারের সংখ্যা প্রায় ৮৮ হাজার।

বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) সভাপতি মসিউর রহমান  বলেন, পোল্ট্রি শো’র প্রভাবে আগামী ২ বছরে বিনিয়োগ বাড়বে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। তিনি আরো বলেন, H9N2 ভাইরাসের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন আমদানির অনুমতি দেয়া হবে, একথা বারবার বলা হলেও আজও অনুমতি মেলেনি। কাঁচামালের ওপর শুল্ক ও কর কমানো, এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে শূণ্য করা দরকার। এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে প্রোবায়োটিক ও প্রিবায়োটিকের ওপর আগামী ৫ বছরের জন্য ভর্তুকী দেয়ার দাবি জানান বিপিআইসিসি’র সভাপতি। ট্যানারির বর্জ্যের বিরুদ্ধে পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন ও মিডিয়াকে যুক্ত করার, অবৈধ ফিড মিল উচ্ছেদে তিন মাসের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম, সারাদেশে পোল্ট্রি খামার জরিপ শুরু করা, অবিলম্বে পোল্ট্রি উন্নয়ন বোর্ড গঠন এবং সারা বছর জুড়ে ডিম ও মাংসের নায্য মূল্য পাওয়ার নিশ্চয়তা চান মসিউর রহমান।

ওয়াপসা-বিবি’র সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, আগামী ২০২৪ সাল নাগাদ পোল্ট্রি পণ্য রপ্তানি শুরু হবে। বিভিন্ন দেশের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা এবং বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোর হালাল মার্কেটে প্রবেশের সুযোগ আছে। এজন্য সরকার আন্তরিক, চেষ্টা করছে পোল্ট্রি শিল্প।

ওয়াপসা বাংলাদেশ শাখার সাধারনণ সম্পাদক মো. মাহাবুব হাসান বলেন, প্রায় ১ লাখ দর্শনার্থী এবারের মেলা পরিদর্শন করেছেন। অপুষ্টির হার কমাতে ডিমকে কাজে লাগানোর তাগিদ দেন তিনি।

তিন দিনব্যাপী মেলায় বেস্ট স্টল হিসেবে প্রথম পুরস্কার পায় এসিআই লিমিটেড, দ্বিতীয় নাহার এগ্রো কমপ্লেক্স এবং তৃতীয় রেনাটা লি.।

This post has already been read 3311 times!